ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

কচ্ছপরা খুবই বিপদে

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৪৪, ২৩ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
কচ্ছপরা খুবই বিপদে

শাহজালাল (র.) বিমানবন্দরে উদ্ধার করা চিত্রা কচ্ছপ

শাহ মতিন টিপু : খরগোশ আর কচ্ছপ একদিন দৌড় প্রতিযোগিতায় নামল। কচ্ছপের ধীরগতির ‘সুনাম’ থাকায় খরগোশ পথে খানিকটা জিরিয়ে নিল। একসময় ঘুমিয়েও পড়ল। আর সেই সুযোগে ‘স্লো অ্যান্ড স্টেডি’কচ্ছপই ছুঁয়ে ফেল টাচ লাইন। খরগোশের যখন ঘুম ভাঙল, ততক্ষণে  দেরি হয়ে গেছে অনেক। ঈশপের গল্পটার জন্য শৈশবে এই প্রাণিটি সম্পর্কে অনেকেই জ্ঞাত। কচ্ছপের সাথে আমাদের পরিচয় অনেকদিনের। এদেশে কচ্ছপ একসময়ে হেলাফেলারই ছিল, এখন তা নয়।

বিশ্ব কচ্ছপ দিবস আজ। আমেরিকান টার্টোজ রেসকিউ নামে একটি সংগঠন কর্তৃক ২০০০ সালে প্রতিষ্ঠিত বিশ্ব কচ্ছপ দিবসের উদ্দেশ্য কচ্ছপের প্রতি সচেতনতা ও শ্রদ্ধা বৃদ্ধি এবং তাদের জীবিত থাকার জন্য মানবিক পদক্ষেপকে উৎসাহিত করা। সে থেকেই আনুষ্ঠানিকভাবে দিনটি উদযাপন করা হচ্ছে।

পানি এবং ডাঙা দুই জায়গাতেই কচ্ছপের বসবাস। কচ্ছপ সাধারণত ঠান্ডা-রক্তের প্রাণি। শরীরের উপরিভাগ শক্ত খোলসে আবৃত। বর্তমানে পৃথিবীতে কচ্ছপের প্রায় ৩০০ প্রজাতি রয়েছে, এদের মধ্যে কিছু প্রজাতি মারাত্মক ভাবে বিলুপ্তির পথে রয়েছে। কচ্ছপ বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার নিজের শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা পরিবর্তন করতে পারে।

কচ্ছপকে বলা হয় দীর্ঘজীবী প্রাণী। দুনিয়ার দীর্ঘজীবী প্রাণীদের তালিকায় এই কচ্ছপ আছে সেরা পাঁচের মধ্যে। গ্যালাপাগোস জায়ান্ট টরটয়েজ প্রজাতির কচ্ছপ বাঁচে গড়ে ১৯০ বছর! বেঁচে আছে এমন দীর্ঘজীবী কচ্ছপের মধ্যে সবচেয়ে বুড়োটির নাম জনাথন। দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সেন্ট হেলেনা দ্বীপের এই কচ্ছপের বয়স ১৮৫ বছর! আর বেসরকারি হিসাবে সবচেয়ে বেশি বয়সী কচ্ছপটির বয়স ছিল ২৫৬! ২০০৬ সালে সেটি জীবনের ম্যারাথনে ইস্তফা দিয়ে বিদায় নেয় পৃথিবী থেকে।

গবেষকেরা দেখেছেন, দৈত্যাকার কচ্ছপের (জায়ান্ট টরটয়েজ) বিপাক প্রক্রিয়া খুব ধীরগতির। তার মানে এদের শক্তিও ক্ষয় হয় অতি ধীরে। সেই ১৯০৮ সালে জার্মান শারীরবৃত্তবিদ ম্যাক্স রাবনার প্রাণীর আয়ু নিয়ে একটা সূত্র উপস্থাপন করেছিলেন। যেখানে বলা হয়েছিল, প্রাণীর বিপাক প্রক্রিয়া যত দ্রুত, তার আয়ু তত কম। গত শতাব্দীতে এটা নিয়ে অনেক বিজ্ঞানীই মাথা ঘামিয়েছেন। অনেকেরই দাবি, এই সূত্র বা যুক্তি আমলে নেওয়ার মতো নয়।

ম্যাক্স রাবনারের সূত্র অনেকে না মানলেও কিছু বিজ্ঞানী অবশ্য রাবনারের পক্ষেই রায় দিয়েছেন। তাদের বিশ্বাস, প্রাণিদেহের মৌলিক কিছু উপাদান (যেগুলো কোষের মৃত্যুর জন্য দায়ী) ও স্থিতিহীন অণুর (যেগুলো শরীরে শক্তি জোগায়) সঙ্গে বিপাক প্রক্রিয়ার সম্পর্ক আছে। এই সূত্র ধরে এগোলে কচ্ছপের দীর্ঘায়ুর একটা সমাধান অবশ্য মেলে। ধীর বিপাক প্রক্রিয়ার কারণে কচ্ছপের শক্তি খরচ হয় কম। আর এ কারণে কোষের মৃত্যুর হারও যায় কমে।

এর বাইরে আরও যুক্তি আছে। কচ্ছপের সুরক্ষা ব্যবস্থা অত্যন্ত শক্তিশালী। এর খোলসের দিকে তাকালেই তা পরিষ্কার হয়ে যায়। দৈত্যাকার কচ্ছপগুলোর আবাস এমন সব জায়গায়, যেখানে সাধারণত মানুষের আনাগোনা খুব কম। ফলে এদের জীবনের ঝুঁকিও নেই বললেই চলে। কেবল মানুষই নয়, অন্য কোনো প্রাণীর শিকারের তালিকায় কচ্ছপ নেই বললেই চলে! একে তো আকারে কিম্ভূতকিমাকার, তার ওপর পিঠের ওপর ওই বর্ম।

এদিকে প্রজননের ব্যাপারে তরুণ কচ্ছপেরাই মূল ভূমিকা রাখে। একটু বয়স হলেই প্রজনন-সংশ্লিষ্ট কোনো কিছুর সাতে-পাঁচে থাকে না বুড়োরা! মোটামুটি এই হলো কচ্ছপের দীর্ঘায়ু হওয়ার রহস্য।  বিজ্ঞানীদের বিশ্বাস, জীববিজ্ঞান ও বিবর্তনের কিছু একটা মারপ্যাঁচ আছে, যা দৈত্যাকার কচ্ছপের দীর্ঘায়ুর পেছনে ভূমিকা রাখছে। তবে রহস্য যা-ই থাক, কচ্ছপ এগিয়ে যাচ্ছে ‘কচ্ছপগতিতেই’!    (সূত্র: লাইভসায়েন্স ও মেন্টালফ্লস)

আরেকটি তথ্যে দেখা যায়, ব্রিটিশ রয়েল ফ্যামিলিকে বৃটিশ পরিব্রাজক ক্যাপ্টেন কুকের উপহার দেওয়া কচ্ছপটি ১৮৮ বছর বেঁচেছিল। ভারতের আলীপুর চিড়িয়াখানার ‘আদৃতা’ নামের একটি কচ্ছপ বেঁচেছিল ২৫০বছর। কিন্তু দীর্ঘজীবী এই প্রাণীটিও এখন মারা পড়ছে অবাধে। এক ধরনের শিকারী ও পাচারকারীদের টার্গেটে পড়ে প্রাণীটি বিলুপ্ত হতে চলেছে।

কচ্ছপের জন্য দুঃসংবাদ যে, কচ্ছপ পাচার এখন অনেক ভয়াবহ।যার ধাক্কা এখন বাংলাদেশেই লেগেছে।চোরাচালানে নতুন মাত্রা যোগ করেছে বিরল প্রজাতির কচ্ছপ। বিলুপ্ত প্রায় এ কচ্ছপ নিয়ে দেখা দিয়েছে নানা কৌতূহল। কচ্ছপ কেন চোরাচালানের অন্যতম আকর্ষণীয় বস্তুতে পরিণত-সেটাই নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে শাহজালাল বিমানবন্দরে ধরা পড়ে ৩০টি কচ্ছপের একটি চালান। এ ঘটনায় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের একজন কর্মকর্তাসহ তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়।

অবশ্য এর বছর তিনেক আগেও শাহজালালে ধরা পড়েছিল কচ্ছপ চালান। প্রথম প্রথম সে নিয়ে তেমন হৈচৈ না হলেও এই চালানে একজন এয়ারলাইন্স কর্মকর্তা জড়িত হওয়ায় সবাই নড়েচড়ে বসে । শাহজালাল বিমানবন্দরের এই কর্মকর্তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করার পর তাৎক্ষণিক খবর দেয়া হয় মালয়েশিয়ান এয়ারলাইন্সের সদর দফতরে। এ নিয়ে ওই এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষও অবাক। কচ্ছপ প্রাণির প্রতি কেন আগ্রহ ও উদ্দীপনা সেটা এয়ারলাইন্স কর্তৃপক্ষেরও কৌতূহলী জিজ্ঞাসা।

এ সম্পর্কে  অনুসন্ধানে দেখা যায়, এখানকার বিমানবন্দর দিয়ে এগুলো বিদেশ পাচার করাটা যত সহজ, প্রতিবেশী ভারত তো নয়ই, এমনকি পাকিস্তান ও বার্মা থেকেও ততটা সহজ নয়।

বিমানবন্দর দিয়ে কেন কচ্ছপ পাচার? এপিবিএন এএসপি আলমগীর হোসাইন শিমুল জানান, সোনা পাচারের চেয়েও লাভ বেশি কচ্ছপ পাচারে। এক কেজি সোনা চোরাচালান করলে বড়জোড় ৫ থেকে ৭ লাখ টাকা লাভ হতে পারে। কিন্তু তাতে বিনিয়োগ করতে হয় ৪০ লাখের টাকারও বেশি। কিন্তু এক কেজি ওজনের একটি কচ্ছপ মাত্র এক হাজার টাকায় কিনে তা থাইল্যান্ডের মার্কেটে অনায়াসে পনেরো থেকে বিশ হাজার টাকা বিক্রি হয়। এ হারে সোনার চেয়ে কচ্ছপে লাভের পরিমাণ কয়েকগুণ বেশি। এটাই সবচেয়ে বড় কারণ। দ্বিতীয় কারণ হচ্ছে কচ্ছপ লাগেজে ভরে যতটা সহজে বাইরে পাচার করা যায়, সে তুলনায় সোনার চালান আনা ততটাই কঠিন। বিমানবন্দরের সব গোয়েন্দাদের মূল টার্গেট থাকে সোনার চালানের প্রতি। এ ফাঁকে কচ্ছপের চালান চলে যায় অনায়াসে।

এ সম্পর্কে বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক অসীম মল্লিক জানান, এক সময় এগুলো সাতক্ষীরা যশোর খুলনা এলাকার জলাশয় নদ নদী ও পুকুরে বিপুল সমাহার ছিল। এখন সে পরিমাণ নেই। এ জাতীয় কচ্ছপ সিঙ্গাপুর, চীন, থাইল্যান্ড কোরিয়া ও জাপানে ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। এ সব প্রাণি ভোজনীয় ও ব্যবহারিক চাহিদা রয়েছে। এ কচ্ছপ দিয়ে চীনে এক ধরনের স্যুপ তৈরি করা হয় যা খুবই মূল্যবান। এর মাংস দিয়ে চীনাদের কাছে মজাদার খাবার তৈরি করা হয়। মূল্যবান ওষুধ তৈরিতেও ব্যবহার করা হয় এ প্রাণি। কচ্ছপের খোলস দিয়ে তৈরি করা অর্নামেন্ট বক্স তৈরি করা হয় যার একেকটির দাম এক হাজার ডলার। এছাড়া দুনিয়াব্যাপী একুরিয়ামেও এ জাতীয় কচ্ছপ রাখা হয় সৌন্দর্য ছড়াতে। রাখা হয় প্রাণি জাদুঘরেও। কচ্ছপ এতসব গুণের অধিকারী বলেই বিশ্ববাজারে তার চাহিদা আকর্ষণীয়।

১৫ ডিসেম্বর, ২০১৪ শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে অবৈধভাবে পাচারকালে বিরল প্রজাতির বিপুলসংখ্যক কচ্ছপ উদ্ধার করে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। বিমানবন্দরের বহির্গমন বিভাগের হেভি লাগেজ গেট থেকে দু’টি পরিত্যক্ত ব্যাগে এসব কচ্ছপ পাওয়া যায়। উদ্ধার হওয়া কচ্ছপের সংখ্যা ছিল ৫১০টি। ২৩ মার্চ ২০১৫ মালয়শিয়ায় পাচারকালে ঢাকার হজরত শাহজালাল (র.) আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে ১১৩টি বিরল প্রজাতির চিত্রা কচ্ছপ উদ্ধার করে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। ওইদিন রাতে বিমানবন্দরের বহির্গমনের ৬ নম্বর গেট থেকে কচ্ছপগুলো উদ্ধার করা হয়। কচ্ছপগুলো লাগেজে ভরে মালিন্দ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে মালয়েশিয়া নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। আবার ৫ মে ২০১৫ ভারত থেকে পাচার হয়ে আসা বিরল প্রজাতির ৩৬১টি কচ্ছপ উদ্ধার করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ। বেনাপোলের পুটখালী সীমান্তের বারপোতা গ্রামের একটি মাঠ থেকে এই কচ্ছপগুলো উদ্ধার করা হয়।

এ খবরটি এ বছরের জানুয়ারির। ভারতের উত্তরপ্রদেশে এক অভিযানের পর জানা গেছে, বিরল প্রজাতির এক ধরনের কচ্ছপ পাচারের জন্যও দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশকে ট্রানজিট রুট হিসেবে ব্যবহার করে আসছে ভারতীয় দুর্বৃত্তরা। উত্তরপ্রদেশের আমেথি জেলায় রাজবাহাদুর সিং নামে এক চোরাকারবারির গোপন আস্তানা থেকে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার ইন্ডিয়ান ফ্ল্যাপশেল টার্টল উদ্ধার করেছে ওই রাজ্যের পুলিশ। এই কচ্ছপগুলোকে বস্তায় ভরে গৌরীগঞ্জ এলাকার একটি গুদামে লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর আটক রাজবাহাদুর স্বীকার করেছেন, কচ্ছপগুলোকে প্রথমে কলকাতায়, এবং সেখান থেকে বাংলাদেশে পাচার করার জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছিল।

ভারতে বিপন্ন বন্য প্রাণী উদ্ধারের ইতিহাসে এত বড় মাপের কোনও চালান আগে ধরা পড়ার কোনও নজির নেই। ওই বস্তাগুলোর ভেতর মোট ৬ হাজার ৪৩০টি কচ্ছপ ছিল– যার মোট ওজন প্রায় সাড়ে চার টন।

একদিকে পাচার, অন্যদিকে আরেকটি উদ্বেগজনক তথ্য হচ্ছে, প্লাস্টিক ব্যাগের কারণে প্রতিবছর প্রায় এক লাখ সামুদ্রিক প্রাণি মারা যায়। আর এই সামুদ্রিক প্রাণির মধ্যে রয়েছে কচ্ছপও। এইসব প্রাণির বেশিরভাগই খাবার হিসেবে প্লাস্টিক ভক্ষণ করে, যা পরবর্তীতে তাদের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যায়। মানুষ অজ্ঞানতার কারণে প্লাস্টিককে সাগরে নিক্ষেপ করে। কিন্তু তারা হয়তো জানেও না যে তাদের নিক্ষেপিত প্লাস্টিকের কারণে প্রতিবছর এক লাখেরও বেশি কচ্ছপ মারা যায়। প্রতিবছর শুধু প্রশান্ত মহাসাগরেই ১৪ বিলিয়ন পাউন্ড প্লাস্টিক নিক্ষেপ করা হয়। প্রসঙ্গত, সাগরের প্রাণিকূলের ভারসাম্য এবং বাস্তুসংস্থান রক্ষায় কচ্ছপ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে সাগরের বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীদের মধ্যে কচ্ছপ অন্যতম।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব আমাদের দেশে লেগেছে অনেক আগ থেকেই। আমাদের দেশে এক সময়ের কাঠুয়া কাছিম এখন আর অহরহ চোখে পড়ে না। বাংলাদেশের স্বাদু জলের শক্ত আবরণযুক্ত কচ্ছপ জাতীয় প্রাণীকে কাঠুয়া এবং নরম আবরণযুক্ত প্রাণীকে কাছিম বা কচ্ছপ বলা হয়।

বাড়ীর আঙ্গিনা থেকে শুরু করে সাগর সংযুক্ত স্বাদু জলের স্পর্শ পর্যন্ত এদের বিচরণ ভূমি ছিল। কাঠুয়া কাছিম এ সময়ের প্রজন্মের অনেকের কাছেই অদেখা প্রাণী। কাঠুয়া কাছিম খাদ্য হিসেবে যতটুকু না পছন্দের তার চেয়ে অধিক পছন্দ বাণিজ্যিক কারণে এবং তা বহু আগ থেকে। বিদেশের বাজারে কাছিমের ব্যাপক চাহিদা থাকার কারণে আমাদের দেশ থেকে অবাধে পাচার হয়ে যাচ্ছে এসব কাঠুয়া কাছিম।

কাছিম ইতিপূর্বে দেশের অভ্যন্তরীন জলাশয়সহ বিস্তৃীর্ণ উপকূলীয় অঞ্চলে বিচরণ করত এবং তাদের উৎপাদন অঞ্চলও ছিল এখানে। বিশেষ করে বঙ্গোপসাগর, নদীর মোহনা, বিল-বাওড়, নদী, পুকুরসহ বাড়ীর আঙ্গিনাতে কাঠুয়া কাছিম পাওয়া যেত। কাঠুয়া কাছিম দেশের চেয়ে বিদেশ যেমন হংকং, মালয়েশিয়া, তাইওয়ান, সিঙ্গাপুর এবং ইউরোপিয় ইউনিয়নভূক্ত দেশগুলোতে খাদ্য হিসেবে ব্যাপক সমাদৃত।

পুকুর বা জলাশয়গুলোতে বিষ ও কীটনাশকের ব্যবহার, উৎপাদন বা সংরক্ষণে অনাগ্রহ বা উদ্যোগের অভাব, জলাশয়গুলোতে সহনশীল পরিবেশের অভাব, প্রয়োজনীয়তার বিষয় জানার অভাব, বাণিজ্যিকভিত্তিতে চিন্তা না করা, সঠিক বাজার অনুসন্ধান না করা, প্রাণীটি দেখামাত্র মেরে ফেলার প্রবণতা, সর্বোপরি জলবায়ু বা পরিবর্তিত পরিবেশগত পরিবর্তনের কারণে কাছিম আজ বিলুপ্তির পথে। সব মিলিয়ে এটাই বলা যায় যে, খুবই বিপদে আছে কচ্ছপরা।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ মে ২০১৭/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়