ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

বিমানে যাত্রীর মৃত্যু হলে কী ঘটে?

ইয়ামিন আরচুভ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০৮, ২৪ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিমানে যাত্রীর মৃত্যু হলে কী ঘটে?

প্রতীকী ছবি

ইয়ামিন (আরচুভ) : মৃত্যুর নির্দিষ্ট সময় ও স্থান নেই। যেকোনো সময় যেকোনো স্থানে মৃত্যু হতে পারে।

প্রতিবছর প্রায় ৩৬০ কোটি যাত্রী আকাশ পথে ভ্রমণ করেন। এ সময় কোনো যাত্রী আকাশপথেও মৃত্যুবরণ করতে পারেন- এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু যখন আকাশপথে কেউ মারা যান তখন আসলে কী ঘটে? বিমান যখন ত্রিশ হাজার ফুট ওপরে থাকে, তখন কেবিন ক্রুসহ অন্যরা কীভাবে এই সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হন এবং সমাধান করেন?

কিছু বিমানে মৃতদেহের জন্য আলাদা জায়গা বরাদ্দ থাকে এবং অবতরণের আগ পর্যন্ত মৃতদেহ সেখানেই রাখা হয়। সিঙ্গাপুর এয়ারলাইন্সে মৃতদেহের জন্য আলাদা জায়গা রয়েছে। অর্থাৎ মৃতদেহ অন্য যাত্রীদের থেকে আড়ালে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো, বিমানের কর্মীদের এভাবেই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যেন তারা এই ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা সূক্ষ্ম কৌশলের সঙ্গে মোকাবেলা করেন।

আইরিশ এয়ারলাইন্স ‘রায়ান এয়ার’ এর একজন মুখপাত্র সান অনলাইনকে বলেন, ‘ইউরোপীয় ইউনিয়নের এভিয়েশন সেফটি রুলস অনুযায়ী সকল রায়ান এয়ার বিমানগুলোতে ডেফিব্রিলেটরসসহ (হৃদযন্ত্রের গোলযোগ শণাক্তকারী)  প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জামাদি থাকে এবং সকল ক্রু প্রাথমিক চিকিৎসাসহ এই ব্যাপারগুলোতে প্রশিক্ষিত। কিছু গুরুতর সমস্যার ক্ষেত্রে সরাসরি মেডিকেলের সহায়তা প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রে আমাদের ক্রুরা সবচেয়ে নিকটবর্তী বিমানবন্দরকে মেডিকেল সহায়তার জন্য অনুরোধ করে।’


প্রায়ই মৃতদেহ খালি সিটগুলোতে অথবা দরজার আড়ালে রাখার ব্যবস্থা করা হয়। বেশির ভাগ সময়ই কোনো না কোনো কিছু দিয়ে ঢেকে রাখার ব্যবস্থা করা হয়, তবে বিমান ভেদে ভিন্ন ভিন্ন ব্যবস্থা থাকে।

আসল ব্যাপার হলো, মৃতদেহ যাত্রীদের থেকে যত আড়ালে রাখা সম্ভব ততই ভালো। বিজনেস ক্লাসের বেশির ভাগ আসন খালি থাকে, মৃতদেহ সেখানেও রাখা যেতে পারে। এনিটি লং নামের একজন কেবিন ক্রু বিজনেস ইনসাইডারকে বলেন, ‘লোকচক্ষুর আড়াল করার জন্য আমি হয়তো মৃতদেহ একটা কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখব। যে মারা গিয়েছে তার প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করাটা জরুরি। মৃত ব্যক্তির দিকে বারবার তাকানোর ফলে যাত্রীদের দুঃখবোধ যেন না বাড়ে সেজন্যেই এই আড়াল করে রাখার ব্যবস্থা তৈরি করা হয়।’

সুই জ্যাকমান নামের একজন নিয়মিত বিমান যাত্রী বলেন, ‘এয়ার নিউজিল্যান্ডের একটা বিমানে করে লস অ্যাঞ্জেলেস থেকে অকল্যান্ড যাওয়ার পথে তার স্বামী মারা গিয়েছিল। আমরা তখন বিজনেস ক্লাসে যাত্রা করছিলাম এবং সে ঘুমের মধ্যেই মারা গিয়েছিল, আর জেগে ওঠেনি। যখন বুঝলাম, সে আর জেগে উঠবে না তখন আমি একজন ক্রুকে ডেকেছিলাম। সে যাত্রীদের মধ্য থেকে একজন ডাক্তারকে ডেকে এনেছিল। তিনি কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করলেন এবং বিমান অবতরণের প্রায় চার ঘণ্টা পূর্বে তাকে মৃত ঘোষণা করলেন। আমার মৃত স্বামীকে তার আসনেই একটি কম্বল দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছিল এবং পুরো সময়টা তাকে জড়িয়ে রেখেছিলাম। কিছুটা আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, তার মৃত্যু সনদপত্রে মৃত্যু স্থান হিসেবে লেখা হয়েছিল যে, ফ্লাইট এনজেড-৫ লস অ্যাঞ্জেলেস এবং অকল্যান্ডের মধ্য পথে।’

তথ্যসূত্র : মিরর




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মে ২০১৭/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়