ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

মৌসুমি ফলে আগ্রহ বেশি

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:০৭, ২৫ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মৌসুমি ফলে আগ্রহ বেশি

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর : জ্যৈষ্ঠ বাঙালির ফলের মাস। এ মাসে নগরী সহ সারা দেশের অলিগলি, পাড়া-মহল্লা ও গ্রাম-গঞ্জ মৌ মৌ করে ফলের গন্ধে।

আম, কাঁঠাল, আনারস, জাম, জামরুল, সফেদা, ডালিম, পেয়ারা, তরমুজ, খেজুরসহ আরো কত দেশীয় ফল। আর কত রকমের ঘ্রাণ তার। চলছে বেচাকেনাও। বছরের নতুন ফল বলে কথা, বাড়িতে তা না নিলে কি হয়! তাইতো যার যতটা সাধ্য, নিয়ে নিচ্ছেন পরিবারের জন্য।

কথা হয় ফল ক্রেতা সাইফুল ইসলামের সঙ্গে। রাইজিংবিডিকে তিনি বলেন, গ্রামের বাড়ি থেকেই প্রতি বছর ফল পাঠায়। তবে সেটার এখনো একটু দেরি আছে। ছেলে মেয়েদের ফলের প্রতি আগ্রহ অনেক বেশি। তাই এখন বাজার থেকেই কিছু ফল নিয়ে যাচ্ছি। তবে ফলের দাম একটু বেশি বলেও জানান তিনি।

ঢাকাতে ফলের সবচেয়ে বেশি বেচা-কেনা হয় বাদামতলীতে। তবে ফলের গন্ধের চেয়ে ওখানে দুর্গন্ধই বেশি। ফল ও ফলের পাতা পচা গন্ধে সেখানে দাঁড়ানো দায়। রাস্তার ওপর ময়লার দুই ইঞ্চি পুরু আস্তরণ, যানজট ও যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে থাকা ভ্যানগাড়ি এখানকার ফলের আড়তের পুরোনো চিত্র।

প্রতিদিন কোটি টাকার ব্যবসা, হাজার হাজার লোকের কর্মসংস্থান হলেও দেশের ফল সংরক্ষণ, প্যাকেটজাতকরণ ও সরবরাহ ব্যবস্থার তেমন কোনো উন্নতি হয়নি এখনো। এসব কারণে প্রতিবছর প্রচুর পরিমাণে ফল নষ্ট হচ্ছে। গরম অথবা বৃষ্টি হলেই পানির দামে তা বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।

আম, লিচু প্যাকেট করা হয় বাঁশের ঝুড়িতে। ট্রাকে স্তূপ করে আনা হয় কাঁঠাল। অন্যান্য ফলেরও দশা হয় একই। ফলে জেলা থেকে ট্রাকে করে রাজধানীতে পাঠাতে নষ্ট হয়ে যায় প্রায় ২০ শতাংশ ফল। এর কিছু অংশ একেবারেই ভর্তা হয়ে যায় বলে ফেলে দিতে হয়।

তবে সম্প্রতি ফল প্যাকেটজাত করণে কিছুটা পরিবর্তন এসেছে। বিদেশ থেকে আঙুরের সঙ্গে আসা প্লাস্টিকের ঝুড়ি ব্যবহার করা হচ্ছে আম পরিবহনে। বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এর প্রচলন বেশি।

বাদামতলী বাজারের ফল বিক্রেতা আবুল কাশেম বলেন, ‘প্লাস্টিকের ঝুড়িতে ফল পরিবহন করলে ফল ততটা নষ্ট হয় না। তাই সারা বছর ধরে আমরা এগুলো সংগ্রহ করি। অনেক সময় আমরা অন্য ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কিনেও রাখি।’

ফল বিক্রেতা সালমান আজীজ জানান, প্লাস্টিকের ঝুড়ির ফল একটিও নষ্ট হয় না। বাঁশের ঝুড়ির ফল অনেক চাপে ভর্তা হয়ে যায়। তবে প্লাস্টিকের ঝুড়ির ফলের দাম একটু বেশি। বর্তমানে দিনমজুরের ‘দিন আনি দিন খাই’-এর মতো অবস্থা ফল বিক্রেতাদের। যেদিন দূরের জেলা থেকে ট্রাক আসে, সেদিনই অথবা পরের দিনই ফল বিক্রি করে দিতে হয়। নইলে পঁচে যায়।

প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে শুরু হয়ে দুপুরের মধ্যেই ক্রেতারা প্রায় সব ফল কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। বর্তমানে সাধারণ আম কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৭০ টাকা, হিমসাগর ৮০ থেকে ৯০ টাকা ও ল্যাংড়া ৭০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আবার লিচুর দামও অনেক বেশি রাখছেন খুচরা বিক্রেতারা। প্রতি ১০০ পিস লিচু বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা দরে।

দাম না কমার কারণ জানতে চাইলে ফল ব্যবসায়ী হাজি মোহাম্মদ শফী বলেন, অন্যান্য ফলের থেকে মৌসুমি ফলের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়ছে। মানুষ এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ফলপ্রিয়। তাছাড়া পাইকারি বাজারে দাম সহনীয় হলেও খুচরা বাজার উর্ধ্বমুখী।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়