ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

দাম চড়া, তবু ইফতারে চাই মৌসুমি ফল

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০২:৪৭, ২৯ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
দাম চড়া, তবু ইফতারে চাই মৌসুমি ফল

ছবি: লেখক

হোসাইন মোহাম্মদ সাগর : আমের আকার দেখে পছন্দ হয় না, ছোট। অথচ দাম চড়া। তবু স্বস্তি এই যে, মুখে দিলেই মন ভরে যায় মিষ্টতায়। সে কথা মাথায় রেখেই রাজধানীর জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের সামনে থেকে আমসহ আরো কয়েক প্রকারের ফল কিনলেন শারমীন শারীফ লাবণ্য।

রাইজিংবিডিকে বললেন, ‘ইফতারের টেবিলে নিয়মিত উপকরণের পাশাপাশি বিভিন্ন ফলের ব্যবহার বাড়তি মাত্রা যোগ করে। গরমে সারাদিন রোজা রেখে ভাজাপোড়া খাবারের পরিবর্তে ফলটাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছি আমার পরিবারের জন্য।’

রোজাদারদের কাছে অন্যবারের তুলনায় এবারের রমজান মাস একটু ব্যতিক্রম। কেননা এবার ইফতারে ফলের তালিকায় এসেছে পরিবর্তন। বিদেশি আপেল-আঙুর-কমলার পরিবর্তে এবার ইফতারে থাকছে মৌসুমি ফল। তবে মৌসুমি ফলের পাশাপাশি রয়েছে বিদেশি ফলের চাহিদাও।

এবারে মৌসুমি ফলের ভরা মৌসুমে রোজা শুরু হয়েছে। তাই রোজাদারদের কাছে বিদেশি ফলের চেয়ে মৌসুমি ফলের কদর অনেকটাই বেশি। রাজধানীর বিভিন্ন স্থান ঘুরে দেখা গেছে, প্রত্যেক অলিগলি ও ফুটপাথে এখন মৌসুমি ফলের পসরা। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য আম, কাঁঠাল, সফেদা, তরমুজ, বাঙ্গি, পেয়ারা, লিচু, পেঁপে, কলা, আনারস, জাম, মেওয়া, ডালিম, জাম্বুরা, কামরাঙা, আমলকী, পানিফল, গাব, বেল, তালশাঁসসহ আরো অনেক কিছু।



অপরদিকে রোজায় সুস্থ থাকতে মুখরোচক খাবারের ঝোঁক কমিয়ে স্বাস্থ্যকর খাবার গ্রহণ করতে পরামর্শ দিয়েছেন স্বাস্থ্যবিদরা। গরমে রোজা পালনে ভাজাপোড়া বা তৈলাক্ত খারার পরিহার করে প্রচুর পরিমাণ পানি পান ও ফল দিয়ে ইফতার করারও পরামর্শও দিয়েছেন তারা।

এ ব্যাপারে নর্দান মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের চিকিৎসক প্রিয়াংকা রিয়া বলেন, ‘দেশি ফলে সব ধরনের পুষ্টি গুণাগুণ বিদ্যমান থাকে। পুষ্টিকর ও সুস্বাদু খাবারের উৎস হলো মৌসুমি এসব ফল। এই ফলগুলো পর্যাপ্ত পরিমাণ ভিটামিন ও খনিজ পদার্থের অন্যতম উৎস। ফলের মধ্যে যেসব উপাদান পাওয়া যায় তা মানবদেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধিসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। রান্না ছাড়া সরাসরি খাওয়া যায় বলে ফলের মধ্যে থাকার পুষ্টির সবটুকুই শরীর গ্রহণ করতে পারে।’

রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, আম ৮০ থেকে ১৪০, বাঙ্গি ১৫০, পেয়ারা ১২০, কাঠাল ১৫০ থেকে ৩০০, জাম ৩৫০, মেওয়া ১০০০ টাকা প্রতিকেজি। এছাড়া কলা ২০ থেকে ৪০ টাকা হালি, বন কাঠাল ৮০০ টাকা কেজি, পিচফল প্রতি ১০০ পিছ ৫০০ টাকা, লিচু প্রতি ১০০ পিস ৩০০ থেকে ৬০০ টাকা, কামরাঙা ১২০ টাকা কেজি। অন্যদিকে পেঁপে এবং আনারস ৬০ থেকে ১২০ টাকা প্রতিটি, বেল ৪০ থেকে ৮০ এবং তরমুজ ১২০ টাকা। বিদেশি ফলের মধ্যে ড্রাগন ৫০০, মেগিস্টিক ৭০০, চেরি ২৪০০, নাশপাতি ১৮০, আপেল ১৫০ থেকে ১৮০, মালটা ১৪০ থেকে ১৬০, বেদানা ৩০০, সবুজ মালটা ৬০০ টাকা, আঙুর ১৮০ থেকে ২৫০ টাকা প্রতিকেজি।

ফলের দাম সম্পর্কে রাজধানীর পুরানা পল্টন এলাকায় ফল কিনতে আসা ব্যবসায়ী রিয়াজ বিল্লাহ বলেন, রমজান হিসেবে ফলের দাম মোটামুটি ভাবে বেশ নাগালের মধ্যেই রয়েছে। তবে মৌসুমি ফলের দামটা একটু চড়া। যদিও অন্য সময়ের তুলনায় প্রতিটি ফলেই দাম একটু বেশি রাখা হচ্ছে, তবে তা অন্যবারের তুলনায় সহনীয়।

একই এলাকার ফল ব্যবসায়ী আব্দুল জলিল জানান, প্রতিবারের মতো এবারো ফলের বেচাকেনা বেশ ভালো। তবে এবারে রমজান মৌসুমি ফলের সময়ে হওয়ায় বিদেশি ফলের তুলনায় দেশি ফলের চাহিদায় বেশি। রোজা গরমে হওয়ায় ক্রেতারা জুস তৈরির জন্যই বেশি ফল নিচ্ছেন। আর ফলের দাম বাড়েনি বরং কোনো কোনো ফলের দাম কমেছে।

পড়ুন :



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৯ মে ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়