ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ঢাকার জলজট নিরসনে সমন্বিত পরিকল্পনা জরুরি

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৫, ৯ আগস্ট ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ঢাকার জলজট নিরসনে সমন্বিত পরিকল্পনা জরুরি

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানী ঢাকার জলজট নিরসনে সমন্বিত ড্রেনেজ প্ল্যান প্রস্তুত ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)। এজন্য ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে সামগ্রিক ও সমন্বিত পরিকল্পনা জরুরি।

বুধবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির গোলটেবিল মিলনায়তনে ‘বারংবার জলজটে জনদুর্ভোগ : প্রতিকারের উপায় কি?’ শীর্ষক এক সংবাদ সম্মেলনে এসব আহ্বান জানানো হয়।

বাপার সাধারণ সম্পাদক ডা. মো. আব্দুল মতিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে মূল বক্তব্য রাখেন বাপার যুগ্ম সম্পাদক ও নগরায়ন-সুশাসন কর্মসূচির সদস্য সচিব স্থপতি ইকবাল হাবিব। আরো বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আকতার মাহমুদ।

এছাড়া সংবাদ সম্মেলনে বাপার প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক মহিদুল হক খান, নির্বাহী সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স, বাপার যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর কবির ও হুমায়ন কবির সুমন উপস্থিত ছিলেন।

ইকবাল হাবিব বলেন, প্রতি বর্ষায় নগরবাসীর নাকাল অবস্থা। জলজটে শহরের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ড বিপর্যস্ত। পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙেচুরে হয়েছে একাকার। এখন নগরীতে খাবারের পানিসহ সব জলাধার আর লেকের জলে দূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে এবং জনস্বাস্থ্যের জন্যেও তা হুমকিস্বরূপ। অনেক পরিকল্পনার প্রতিশ্রুতি আর সিদ্ধান্তও আছে এই অবস্থা ঘিরে। তারপরও অবস্থার অবনতি বৈ উন্নতি হয়নি, হচ্ছেও না।

তিনি বলেন, মূলত ‘ডেভেলপারদের’ মধ্যকার বিশেষ স্বার্থান্বেষী মহলের প্রভাব ও প্রতিপত্তি; সরকারের কার্যকর, সমন্বিত ও সময়নির্ভর পদক্ষেপ গ্রহণে অনীহা;  পরিকল্পনা বাস্তবায়নে জনসম্পৃক্ততার ও জবাবদিহিতার অভাব;  দখলকৃত এসব খাল, নদী-জলাশয় পুনরুদ্ধার প্রকল্প বাস্তবায়ন কার্যক্রম পর্যবেক্ষণে কাঠামোগত ব্যর্থতা ইত্যাদি কার্যকারণের পাশাপাশি জনসচেতনতার অভাবও এর জন্যে দায়ী। যথাযথ নগর উন্নয়ন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়নেও রয়েছে দায়িত্বহীন কর্মকাণ্ড।

এ প্রেক্ষাপটে জনদুর্ভোগের শিকার বিশাল জনগোষ্ঠির স্বার্থের কারণ ও প্রতিকার নির্ধারণে পাঁচটি সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সংস্থা বা মন্ত্রণালয়ের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সক্রিয় কর্মধারার উদ্যোগ গ্রহণের দারি জানান তিনি।

ড. আকতার মাহমুদ বলেন, এবারের ঢাকা মহানগরীর জলাবদ্ধতা ও জনদুর্ভোগের ঘটনা সাধারণ জনগণসহ সব মহলকে বিশেষভাবে নাড়া দিয়েছে। মাত্র ৪০ মি.মি বৃষ্টিতে যেভাবে ঢাকা মহানগরী ব্যাপক জলাবদ্ধতার কবলে পড়েছে, তা খুবই উদ্বেগের বিষয়।

তিনি বলেন, ১৯৬২ সাল থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত ঢাকা মহানগরীর ড্রেনেজ মাস্টার প্ল্যান নিয়ে পাঁচবার স্টাডি হয়েছে, অনেক পরিকল্পনা হয়েছে। তবে এসবের বাস্তবায়ন হয়নি। তাই ঢাকার জলাবদ্ধতা নিরসনে সামগ্রিক ও সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি। এজন্য ঢাকা মহানগরীর ৫০টি খালের মধ্যে প্রধান প্রধান খালগুলোকে পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণ করতে হবে এবং ঢাকা ওয়াসা, দুই সিটি করপোরেশন, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সমন্বয়ে একটি সমন্বিত ড্রেনেজ প্ল্যান প্রস্তুত ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানান তিনি।

ডা. মো. আব্দুল মতিন বলেন, আমরা প্রায় দেড় যুগ ধরে ঢাকা শহরের জলাবদ্ধতার কারণ এবং এর করণীয় বিষয়ে বিভিন্ন সময় বলে এলেও আজও কার্যকর কিছু হচ্ছে না। যার কারণে প্রতি বর্ষা মৌসুমে মহানগরবাসীকে ব্যাপক ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। আমরা চাই, শুধুমাত্র জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হলেই তৎপরতা না বাড়িয়ে, এজন্য একটি কার্যকর সমন্বিত পরিকল্পনার মাধ্যমে এর স্থায়ী সমাধান করা হোক।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ আগস্ট ২০১৭/সাওন/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়