ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

জন্মদিন : কথাশিল্পী মঈনুল আহসান সাবের

শাহ মতিন টিপু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:৫৪, ২৬ মে ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জন্মদিন : কথাশিল্পী মঈনুল আহসান সাবের

শাহ মতিন টিপু : কথাশিল্পী এটাই তার বড় পরিচয়। এর বাইরেও আরো দু’টি পরিচয় আছে তার। তিনি সাংবাদিক এবং প্রকাশক। নিভৃতে দু’হাতে লিখে চলেছেন তিনি। আরেকটি পরিচয় তিনি কবি আহসান হাবীব এর ছেলে।

এতো পরিচয়ের মানুষটির নাম মঈনুল আহসান সাবের। আজ এই কথাশিল্পীর ৬১তম জন্মদিন। তিনি গত কয়েক দশক জুড়েই লেখালেখিতে সরব। কিন্তু নিভৃতে। কোন ঢাকঢোল নেই। প্রকাশিত হয়েছে অসংখ্য জনপ্রিয় উপন্যাস, ছোটগল্প, কিশোর উপন্যাস। আবার তার বেশ কয়েকটি লেখা নিয়ে টেলিভিশন নাটকও তৈরি হয়েছে।

এই কথাশিল্পীর জন্ম (২৬ মে, ১৯৫৮) এবং বেড়ে ওঠা ঢাকায়। বইয়ের মধ্যেই বেড়ে উঠেছেন। পড়াশোনাও ঢাকায়। কলেজ জীবন থেকেই লেখালেখি শুরু। কিন্তু সাংবাদিক বাবার কারণে ছোটবেলাতেই এই পেশার প্রতি টান। পরবর্তীতে পেশা হিসাবে সাংবাদিকতাকেই বেছে নেন। তবে সবসময়েই প্রাধান্য পেয়েছে লেখালেখি। একসময় তিনি প্রকাশনা ব্যবসা শুরু করলেন।

বন্ধুদের সংখ্যা খুব কম। একা থাকতে ভালোবাসেন। নির্জনতা প্রিয়, ভ্রমণ ভালো লাগে। আবার ইচ্ছা করলে ঘরেও দিনের পর দিন পার করে দিতে পারেন। যাকে অনায়াসেই নিভৃতচারী বলতে পারি।

তার জীবনে বাবা আহসান হাবীব কেমন ছিলেন? এ প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আসলে বাবা হিসেবে না আমরা তাকে যতটা কাছে পেয়েছি তারচেয়েও বেশি কাছে পেয়েছি বন্ধু হিসেবে। বাবার সঙ্গে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ, শেয়ারিং করার বিষয়টি ছিল। আমার সব কথাই বাবার সঙ্গে শেয়ার করেছি। বাবাকে পেয়েছি একজন পথপ্রর্দশক হিসেবে, দার্শনিক হিসেবে, বন্ধু হিসেবে।’

আবার মা ছিলেন সাহিত্যানুরাগী। প্রচুর বই পড়তেন। পত্র-পত্রিকায় তার লেখা ছাপা হতো। তিনি খুব ভালো অনুবাদ করতে পারতেন। মঈনুল আহসান সাবের ওই সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘একটা ভয়ও ছিল যেন এমন কিছু না করে ফেলি যাতে বাবার বদনাম হয়।

প্রকাশিত গ্রন্থ’র সংখ্যা অনেক: পরাস্ত সহিস (১৯৮২), অরক্ষিত জনপদ (১৯৮৩), স্বপ্নযাত্রা (১৯৮৪), আগমন সংবাদ (১৯৮৪), মামুলী ব্যাপার (১৯৮৪), চারদিক খোলা (১৯৮৫), একবার ফেরাও (১৯৮৫), আদমের জন্য অপেক্ষা (১৯৮৬), আগামী দিনের গল্প (১৯৮৭), পাথর সময় (১৯৮৯), এসব কিছুই না (১৯৮৯), লাল বাড়ির অদ্ভুত ভূত (১৯৮৯), ভিড়ের মানুষ (১৯৯০), এরকমই (১৯৯০), কেউ জানে না (১৯৯০), কোনো একদিন (১৯৯০), মানুষ যেখানে যায় না (১৯৯০), এক রাত (১৯৯০), চার তরুণ-তরুণী (১৯৯০), কয়েকজন অপরাধী (১৯৯০), পরাজয় (১৯৯০), লিলিপুটরা বড় হবে (১৯৯০), বাংলাদেশের ফুটবল তারকা (১৯৯০), সীমাবদ্ধ (১৯৯১), অচেনা জায়গায় (১৯৯১), কয়েকটি প্রেমপত্র (১৯৯১), সতের বছর পর (১৯৯১), এ এক জীবন (১৯৯১), অপরাজিতা (১৯৯১), ফেরা হয় না (১৯৯১), অগ্নিগিরি (১৯৯১), ধারাবাহিক কাহিনী (১৯৯২), অপেক্ষা (১৯৯২), কবেজ লেঠেল (১৯৯২), হারানো স্বপ্ন (১৯৯২), দুই বোন (১৯৯২), নীল খাম (১৯৯২), না (১৯৯২), সে তোমাকে পাবে না (১৯৯২), মুন্নী (১৯৯২), লজ্জা (১৯৯২), ভূতের থাকা না থাকা (১৯৯২), সুদূর (১৯৯৩), প্রেম ও প্রতিশোধ (১৯৯৩), স্বজন (১৯৯৩), তুমি আমাকে নিয়ে যাবে (১৯৯৩), মঈনুল আহসান সাবেরের প্রেমের গল্প (১৯৯৩), এক ঝলক আলো (১৯৯৪), দুপুর বেলা (১৯৯৫), মৌমাছি ও কাঠুরিয়া (১৯৯৬), তিন সাংবাদিক ভূত (১৯৯৭), মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল মালেকের হাসি (১৯৯৭), সংসার যাপন (১৯৯৭), মৃদু নীল আলো (১৯৯৭), রেলস্টেশনে অজানা গল্প (১৯৯৮), জ্যোতির্ময়ী, তোমাকে বলি (১৯৯৮), যোগাযোগ (১৯৯৮), নির্বাচিত প্রেমের উপন্যাস (১৯৯৯), ঠাট্টা (১৯৯৯), অবসাদ ও আড়মোড়ার গল্প (১৯৯৯), ফিরে আসা (১৯৯৯), নির্বাচিত গল্প (১৯৯৯), ব্যক্তিগত (২০০০), বৃষ্টির দিন (২০০০), খুনের আগে ও পরে (২০০০), সবচেয়ে সুন্দর (২০০০), এটা আমার একার গল্প (২০০১), কেউ একত্রে অপেক্ষা করছে (২০০১), উপন্যাসসমগ্র (২০০১), কিশোর সমগ্র (২০০৩), ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ (২০০৩), আমাদের খনজনপুর (২০০৪), পরের ঘটনা (২০০৪), শরীরের গল্প (২০০৪), যে কেউ না, তার সঙ্গে (২০০৫), সুকুমারের লজ্জা (২০০৫), তিলকের গল্প (২০০৬), দূরের ঐ পাহাড়চূড়ায় (২০০৬), এই দেখা যায় বাংলাদেশ (২০০৬), ঋষি ও নারী (২০০৫), আখলাকের ফিরে আসা (২০১৪)। (সূত্র: বাংলা একাডেমি লেখক অভিধান)

এর বাইরেও আরো বই আছে তার। ১৯৭৪ সালে তার প্রথম গল্প ছাপা হয় সাপ্তাহিক বিচিত্রায়। গল্প দিয়ে লেখার শুরু। প্রথম উপন্যাস ছাপা হয় ১৯৭৮-৭৯-এর দিকে। লেখালেখির জন্য সর্বোচ্চ বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার (১৯৯৬) পেয়েছেন। এ ছাড়াও বাপী শাহরিয়ার শিশুসাহিত্য পুরস্কার, ফিলিপস পুরস্কার, হুমায়ুন কাদির সাহিত্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি।

জন্মদিনে কথাশিল্পীকে আমাদের শুভেচ্ছা।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ মে ২০১৮/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়