ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশি তরুণের সাফল্য

ছাইফুল ইসলাম মাছুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৫, ২৭ জুলাই ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশি তরুণের সাফল্য

ছাইফুল ইসলাম মাছুম : জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে প্রথমবারের মতো অদ্বিতীয় নাগের হাত ধরে মেডেল পেল বাংলাদেশ। সম্প্রতি ইরানের তেহরান শহরে ৭০টি দেশের অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হয়েছে ২৯তম আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড।

এতে বাংলাদেশের হয়ে ব্রোঞ্জপদক জিতেছেন রাজধানী ঢাকার এসএফএক্স গ্রিন হেরাল্ড স্কুলের লেভেল শিক্ষার্থী অদ্বিতীয় নাগ। অদ্বিতীয়র মা-বাবা দুজনই চিকিৎসক। বাবা অধ্যাপক দীপক কুমার নাগ। মা ডা. রিংকু পাল।

জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে ব্রোঞ্জপদক জয়ের অনুভূতির কথা বলতে গিয়ে অদ্বিতীয় নাগ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বড় মঞ্চে ব্রোঞ্জপদক বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হচ্ছিল। অন্য অন্য দেশের নাম ঘোষণার মাঝে হঠাৎ বলে উঠলো বাংলাদেশ। আমার নাম ঘোষণা করা হলো। আমাদের টিমের সদস্যরা চিৎকার উঠলেন। পরে দেশের পতাকা নিয়ে মঞ্চের দিকে দৌড় দিলাম। মেডেলটা আমার গলায় পরিয়ে দেওয়া হলো। তখন দেশের জন্য গর্ব হচ্ছিল।’
 


জীববিজ্ঞান অলম্পিয়াডে অংশগ্রহণ প্রসঙ্গে অদ্বিতীয় নাগ জানান, জীববিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ থাকার কারণে জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের বাংলাদেশ পর্বে অংশ নিতে প্রথমে রেজিস্টেশন করেছিলেন তিনি। ঢাকা ডিভিশনে বাচাই পর্বে মনোনীত হওয়ার পর সাভারে জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের জাতীয় রাউন্ডে অংশ নেন। জাতীয় রাউন্ডে তিন দিনের আবাসিক ক্যাম্পে অংশ নিয়েছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন ডিভিশনের বাচাইকৃত ২০ জন প্রতিযোগী।

বাচাই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে চুড়ান্ত রাউন্ডের জন্য চার জনকে মনোনীত করা হয়। বাংলাদেশের চার ক্ষুদে জীববিজ্ঞানী ১৫ জুলাই ইরানের তেহরানে যান চূড়ান্ত অলিম্পিয়াডে অংশ নিতে। বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী চারজন ছিলেন: ইন্টারন্যাশনাল টার্কিশ হোপ স্কুলের মো. বায়েজিদ মিয়া, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রকৃতি প্রযুক্তি, এসএফএক্স গ্রিনহেরাল্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের অদ্বিতীয় নাগ এবং সরকারি এমএম সিটি কলেজের মো. তামজিদ হোসেন তানিম।

জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশ দলের দলনেতা ছিলেন অধ্যাপক রাখহরি সরকার। উপ দলনেতা ছিলেন অধ্যাপক গাজি জাকির হোসেন।

জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের চূড়ান্ত রাউন্ড ছিল দুই দিনে বিভক্ত। ১৭ জুলাই প্রতিযোগিদের ৫০০ মার্কের মধ্যে ব্যবহারিক ৪০০ মার্কে অংশ নিতে হয়। প্রতিযোগিতা চলে সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। ১৯ জুলাই প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় দিনে জীববিজ্ঞানের তাত্ত্বিক বিষয়ে ১০০ মার্কের পরীক্ষায় অংশ নিতে হয় প্রতিযোগিদের। ২২ জুলাই প্রতিযোগিতার ফলাফল ঘোষণা করে আয়োজকেরা। অলিম্পিয়াডে বাংলাদেশের হয়ে ব্রোঞ্জপদক জিতেছেন অদ্বিতীয়।
 


অদ্বিতীয় বলেন, ‘আমার চেষ্টা ছিল দেশের জন্য কিছু করার, ইচ্ছাও ছিল। সে অনুযায়ী প্রস্তুতিও নিয়েছিলাম। আমি সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি ভালো কিছু করার। বিশ্বমঞ্চে বাংলাদেশের পতাকা তুলে ধরতে পেরে আমি অনেক খুশি হয়েছি। নতুন সব মানুষের সঙ্গে মিশতে পেরে আমি নিজেই যেন নতুন মানুষে পরিণত হয়েছি।’

বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের সাধারণ সম্পাদক ডা. সৌমিত্র চক্রবর্তী বলেন, ‘এবার তৃতীয়বারের মতো বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বায়োলজি অলিম্পিয়াডে লড়াই করে। আমাদের কোনো নিয়মিত পূর্ণাঙ্গ স্পন্সর না থাকা সত্ত্বেও জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডের সঙ্গে যুক্ত সকলের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং পরিশ্রমের ফলেই আমাদের এ অর্জন। আমরা আগামীতে আরো ভালো করতে পারবো যদি সার্বিক সহযোগিতা পাই।’

প্রসঙ্গত, আন্তর্জাতিক জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াডে ২০১৫ সাল থেকে বাংলাদেশ অংশ নিচ্ছে। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ এই প্রথম পদক অর্জন করেছে। এ বছর বাংলাদেশ জীববিজ্ঞান অলিম্পিয়াড আংশিকভাবে স্পন্সর করে বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর।

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জুলাই ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়