ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

স্মরণ : কবি শামসুর রাহমান

সাইফ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:০৫, ১৭ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্মরণ : কবি শামসুর রাহমান

রাইজিংবিডি ডেস্ক : বাংলা সাহিত্যের অন্যতম প্রধান কবি শামসুর রাহমানের ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ। ২০০৬ সালের এইদিনে তিনি চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন।

শামসুর রাহমান, সৃষ্টি ও মননের দ্যুতিময় উপস্থাপনা তাকে দেয় সমকালীন বাংলা কবিতার প্রধান কবির মর্যাদা। কবি হিসেবে দুই বাংলায় সমান জনপ্রিয় ছিলেন তিনি।

বাংলা ভাষায়, বাংলা কবিতায় কবি শামসুর রাহমান উজ্জ্বল উপস্থিতির মাধ্যমে অবদান রেখে গেছেন। তিনি শুধু নগর জীবনের রূপকারই নন, বিভিন্ন সংগ্রাম, আন্দোলন, গণমানুষের প্রতিবাদী উচ্চারণ এবং জাতির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিধ্বনি ওঠেছে তার কবিতায়।

তৎকালীন পাকিস্তান আমলে আইয়ুববিরোধী গণঅভ্যুত্থান এবং মুক্তিযুদ্ধ-পূর্ব ও পরবর্তী বাস্তবতায় অস্ত্র হিসেবে কলমকে বেছে নিয়েছিলেন শামসুর রাহমান। রচনা করেন বহু অনবদ্য কবিতা। স্বৈরশাসক আইয়ুব খানকে বিদ্রুপ করে ১৯৫৮ সালে সিকান্দার আবু জাফর সম্পাদিত সমকাল পত্রিকায় লেখেন ‘হাতির শুঁড়’ কবিতা। সত্তরের নভেম্বরে ভয়াল জলোচ্ছ্বাসের পর মওলানা ভাসানীর পল্টনের ঐতিহাসিক জনসভার পটভূমিতে রচিত ‘সফেদ পাঞ্জাবি’, তারও আগে ‘বর্ণমালা আমার দুঃখিনী বর্ণমালা’, ‘গেরিলা’, ‘কাক’ ইত্যাদি কবিতায় উচ্চারিত হয়েছে এ দেশের কোটি মানুষের কণ্ঠধ্বনি। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থানে জীবন বিসর্জন দেওয়া আসাদকে নিয়ে লিখেছেন ‘আসাদের শার্ট’ কবিতাটি। বাংলার অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যখন কারাগারে, তখন তাকে উদ্দেশ করে লেখেন কবিতা ‘টেলেমেকাস’। সামরিক স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে লিখেছেন ‘উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ’। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর লিখিত তার দুটি কবিতা ‘স্বাধীনতা তুমি’ এবং ‘তোমাকে পাওয়ার জন্য হে স্বাধীনতা’ একই সঙ্গে পাঠক ও বোদ্ধাদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় ও সমাদৃত হয়। যুদ্ধাপরাধীদের উত্থানে ক্ষোভের প্রকাশ ঘটিয়ে লিখেছেন ‘একটি মোনাজাতের খসড়া’, ‘ফুঁসে ওঠা ফতোয়া’র মতো আলোড়ন সৃষ্টিকারী কবিতা।

শামসুর রাহমানের জন্ম ১৯২৯ সালের ২৩ অক্টোবর ঢাকার মাহুতটুলিতে। পৈতৃক নিবাস নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার পাড়াতলী। শিক্ষাজীবনের সূচনা হয় ১৯৩৬ সালে ঢাকার পোগোজ স্কুলে। ১৯৪৫ সালে প্রবেশিকা এবং ১৯৪৭ সালে আইএ পাস করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে তিন বছর পড়াশোনা করলেও পরীক্ষায় অংশ নেননি।

পঞ্চাশের দশকের শেষদিকে মর্নিং নিউজে যোগদানের মাধ্যমে শামসুর রাহমান সাংবাদিকতা পেশায় প্রবেশ করেন। এরপর দৈনিক বাংলাসহ বহু জনপ্রিয় পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে গুরত্বপূর্ণ পদ অলঙ্কৃত করেন। স্বাধীনতা পুরস্কার, একুশে পদক, বাংলা একাডেমি পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন তিনি। রবীন্দ্রভারতী ও যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে সম্মানসূচক ডি-লিট উপাধি দেওয়া হয় তাকে।

উল্লেখযোগ্য গ্রন্থ : কাব্যগ্রন্থ : প্রথম গান, দ্বিতীয় মৃত্যুর আগে, রৌদ্র করোটিতে, বিধ্বস্ত নীলিমা, বন্দী শিবির থেকে, বাংলাদেশ স্বপ্ন দ্যাখে, ইকারুসের আকাশ, উদ্ভট উটের পিঠে চলেছে স্বদেশ প্রভৃতি। তার অনুবাদ কবিতাগ্রন্থ ও আত্মজীবনীও রয়েছে।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ আগস্ট ২০১৮/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়