ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

শীতকালে শরীরে যেসব অদ্ভুত ঘটনা ঘটে (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৬:৩১, ৪ ডিসেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
শীতকালে শরীরে যেসব অদ্ভুত ঘটনা ঘটে (শেষ পর্ব)

এস এম গল্প ইকবাল : শীতকালে শুষ্ক ও ফাঁটা ঠোঁট সাধারণ ঘটনা, কিন্তু আপনি কি বরফ অন্ধত্ব ও শীতকালীন বলিরেখা সম্পর্কে জানেন?

শীতকালে আমাদের শরীরে অনেক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে যা আপনাকে বিস্মিত করবে। শীতের মাসগুলোতে শরীরে ঘটে এমন কিছু অদ্ভুত ঘটনা নিয়ে দুই পর্বের প্রতিবেদনের আজ থাকছে শেষ পর্ব।

* মাংসপেশী শক্ত হয়ে যায়
স্মরণ করুন যে গ্রীষ্মকালে পানিতে ঝাঁপ দেওয়া, সাঁতার কাটা কিংবা খেলাধুলা করা কত সহজ। এর একটি কারণ হচ্ছে, আপনার শরীর গ্রীষ্মে কাজের সঙ্গে দ্রুত অ্যাডজাস্ট হতে পারে- কারণ, আপনার মাংসপেশী আক্ষরিক অর্থে উষ্ণতর। শীতকালে মাংসপেশী ঠান্ডা ও শক্ত হয়ে যায়, যার ফলে যে কাজটি গ্রীষ্মে সহজে করা যায় তা শীতকালে সম্পন্ন করা তুলনামূলক কঠিন হয়। ব্যালেন্স কাইরোপ্র্যাকটিক অ্যান্ড রিহ্যাবের কাইরোপ্র্যাক্টর ড্যানিয়েল পোজার্নস্কাই বলেন, ‘যদি আপনি শীতকালে পর্যাপ্ত প্রস্তুতি ছাড়া সক্রিয় হন এবং আপনার মাংসপেশীতে টান লাগে, তাহলে হ্রাসকৃত রক্তপ্রবাহ ও সংবহনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মাংসপেশী সেরে ওঠতে দীর্ঘসময় লাগবে।’

* আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বেড়ে যায়
ঠান্ডা আবহাওয়ায় হাতে আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বেড়ে যায়, কিন্তু শীতের ঠান্ডা তাপমাত্রা আসলে আপনার আর্থ্রাইটিসের ব্যথা বৃদ্ধি করে না। ডা. পোজার্নস্কাই বলেন, ‘বিশ্বাস করুন কিংবা নাই করুন, শীতে ঠান্ডার কারণে রোগীরা বর্ধিত আর্থ্রাইটিক অনুভূতি অনুভব করে না, তাদের এই অনুভূতির কারণ হচ্ছে বায়ুচাপের পরিবর্তন। বায়ুমণ্ডলীয় চাপের পরিবর্তন কিছু আর্থ্রাইটিস রোগীদের অবস্থা আরো খারাপ করে। সেই সময় উষ্ণ গ্লাভস ব্যথা উপশম করে না, কিন্তু ধীরে ধীরে গতি বা চলাফেরা বাড়ানো সহায়ক হতে পারে।’

* বাইরে অবস্থান বিপজ্জনক হতে পারে
ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাইরে বসে ক্রিকেট কিংবা ফুটবল ম্যাচ দেখা যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে। ডা. পোজার্নস্কাই বলেন, ‘ঠান্ডার সময় মাংসপেশী বেশি দ্রুত তাপ হারায়, যা তাদের সারা শরীরে সংকোচন ও টাইট অবস্থা সৃষ্টি করে। এটি তাদের চলাফেরা ও গতির রেঞ্জও সীমিত করে ফেলে এবং স্নায়ুতে অধিক সহজে খোঁচা খাওয়ার অনুভূতি দিতে পারে।’ বসা থেকে ওঠুন এবং আশপাশে হাঁটুন- এটি আপনার মাংসপেশী শিথিল ও উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে।

* শীতকালীন বলিরেখা হতে পারে
শীতকালীন বলিরেখার জন্য আপনি শীতকে সম্পূর্ণরূপে দোষারোপ করতে পারবেন না, কিন্তু আপনি এর জন্য শীতের মৌসুমে পরিবেশ ও জীবনধারার পরিবর্তনকে দায়ী করতে পারেন, বলেন ক্ল্যারিও সেন্টারস ফর অ্যাসথেটিক সার্জারির প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ট্যানটিলো। তিনি যোগ করেন, ‘আর্দ্রতা কমে যাওয়া, সংবহন হ্রাস পাওয়া, কোষ রিনিউয়াল কমে যাওয়া, শুষ্ক বায়ুর সংস্পর্শে আসা, বর্ধিত সূর্য এক্সেোজার, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন এবং সক্রিয়তার মাত্রা হ্রাস পাওয়ার কারণে এই সমস্যা হয়ে থাকে।’ বাইরে বের হলে তাপমাত্রার পরিবর্তন বিবেচনা করুন। ডা. ট্যানটিলো বলেন, ‘হ্রাসকৃত কোষ রিনিউয়াল ও ত্বকের সংবহন আমাদের ত্বকের উজ্জ্বলতা হ্রাস করে।’ উপরে উল্লেখিত ঘটনাগুলোর সমন্বয়ে আপনার বলিরেখা, শুষ্ক ত্বক ও ত্বকে দাগ হবে।

* চোখের পৃষ্ঠ শুকিয়ে যায়
অকিউলার সারফেস বা চোখের পৃষ্ঠ টিয়ার ফিল্মের একটি পাতলা স্তর দ্বারা আবৃত থাকে। একটি সুস্থ অকিউলার সারফেস আমাদেরকে স্বচ্ছ দৃষ্টি ও স্বস্তি দেয় এবং ইনফেকশন থেকে রক্ষা করতে সাহায্য করে। কিন্তু এই স্তরটি পরিবেশের পরিবর্তনের (যেমন- শুষ্ক বাতাস) প্রতি অত্যধিক সেনসিটিভ। ঘরের ভেতরে ফার্নেস অথবা ফায়ারপ্লেস বায়ুকে শুকিয়ে ফেলে এবং বাইরের বায়ু এক্সপোজার হতে পারে যন্ত্রণাদায়ক শুষ্ক চোখের কারণ। ডা. ম্যাককিগ বলেন, ‘হিউমিডিফাইয়ার, আর্টিফিশিয়াল টিয়ার এবং ইউভি-ব্লকিং শেড ব্যবহার করে আপনি এই স্তরকে রক্ষা করতে পারেন এবং চোখকে অধিক আরামদায়ক অবস্থায় রাখতে পারেন।’

* অ্যাজমা আরো খারাপ হয়
শীতকালে কোল্ড অথবা ফ্লু ভাইরাস অধিক কমন এবং অ্যাজমাকে আরো খারাপ করতে পারে। বাইরের ঠান্ডা ও শুষ্ক বায়ু ইরিট্যান্ট হিসেবে কাজ করে এবং অ্যাজমাকে আরো খারাপ করে। ডাস্ট মাইট ও অন্যান্য ইনডোর অ্যালার্জেন (যেমন- মোল্ড ও অ্যানিমল ড্যান্ডার) হচ্ছে অ্যাজমার বড় ট্রিগার, বলেন অ্যালার্জি অ্যান্ড অ্যাজমা নেটওয়ার্কের অ্যালার্জিস্ট/ইমিউনোলজিস্ট ডা. পারভি পারিখ।

* আপনার নাক আপনাকে অসুস্থ করতে পারে
ইয়েল ইউনিভার্সিটির একটি গবেষণা সাজেস্ট করছে যে, ঠান্ডা তাপমাত্রায় কমন কোল্ড বা সাধারণ ঠান্ডার ভাইরাস খুব দ্রুত বংশবিস্তার করতে পারে। এই গবেষণা আরো ইঙ্গিত দিচ্ছে যে, আপনি উষ্ণ তাপমাত্রার তুলনায় ঠান্ডা তাপমাত্রায় বেশি অসুস্থ হতে পারেন।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন :



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৪ ডিসেম্বর ২০১৮/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়