ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

চিটাগংয়ের সাফল্যের রহস্য কী?

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৫৭, ১৪ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
চিটাগংয়ের সাফল্যের রহস্য কী?

ক্রীড়া প্রতিবেদক, সিলেট থেকে : টপ অর্ডারে লুক রনকির খেলার কথা ছিল চিটাগং ভাইকিংসের হয়ে। কিন্তু বিপিএলের ঠিক আগ মুহূর্তে নিজের নাম সরিয়ে নেন নিউজিল্যান্ডের মারকুটে ব্যাটসম্যান। 

বিদেশি তারকা ক্রিকেটার বলতে শুধুমাত্র লুক রনকিই ছিলেন। এছাড়া দেশিদের মধ্যে একটাই নাম মুশফিকুর রহিম। কাগজে কলমে বিপিএলের দলগুলোর মধ্যে সবথেকে পিছিয়ে তারা! স্কোয়াড দেখে মনে হচ্ছিল শুধুমাত্র অংশগ্রহণের জন্যই তাদের মাঠে নামা।

কিন্তু মাঠের খেলায় তো উল্টোচিত্র। ঢাকা পর্বের শুরুতে অভাবনীয় পারফরম্যান্সে চিটাগং ভাইকিংস এখন টক অব দ্য কান্ট্রি। চার ম্যাচের তিনটি জিতে পয়েন্ট তালিকার দুইয়ে চিটাগংয়ের অবস্থান। শুধু জয় না, প্রতিপক্ষকে মাঠে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ম্যাচ জিতছে তারা। ব্যাট-বলে কড়া জবাব দিচ্ছে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করছে। এ যেন মুশফিকের নেতৃত্বে চিটাগং গ্ল্যাডিয়েটরস ২২ গজের ক্রিজে। 

ষষ্ঠ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে রংপুরকে হারিয়ে শুরু বন্দরনগরীর দলটির। পরের ম্যাচে সিলেট সিক্সার্সের বিপক্ষে শেষ মুহূর্তে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে হার মানে মাত্র ৫ রানের ব্যবধানে। এরপর খুলনা টাইটান্সের বিপক্ষে সুপার ওভার জিতে চিটাগং আবার জয়ের ধারায় ফেরে। জয়ের তালিকায় রোববার যুক্ত হয় আরেকটি ট্যালি। এবারের জয়টি অবিশ্বাস্য, দুর্দান্ত। 

থিসারা পেরেরার ঝোড়ো ব্যাটিংয়ে কুমিল্লার ছুড়ে দেওয়া ১৮৪ রান তাড়া করে চিটাগং জয় নিশ্চিত করে মিরপুর শের-ই-বাংলায়। দলের অধিনায়ক মুশফিকুর রহিমের হাত ধরে রচিত হয় বিজয়ের গল্প। মাত্র ৪১ বলে ৭৫ রানের ইনিংস খেলে কুমিল্লার বোলারদের নাকানি-চুবানি খাওয়ান চিটাগংয়ের অধিনায়ক। শুরুতে রান না পেলেও শেষ ম্যাচে মুশফিকের রানে ফেরা চিটাগংয়ের জন্য সবথেকে বড় প্লাসপয়েন্ট।

তবে চিটাগংয়ের সবথেকে বড় চমক রবি ফ্রাইলিঙ্ক। প্রোটিয়ান পেস অলরাউন্ডার ব্যাট-বলে দুর্দান্ত প্যাকেজ। দলকে দুই ম্যাচে একাই জিতিয়েছেন। সিলেটের বিপক্ষে জেতানোর পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু ভাগ্যদেবী সেদিন সঙ্গে ছিলেন না। প্রথমবারের মতো বিপিএলে অংশ নিয়ে ফ্রাইলিঙ্ক বাজিমাত করেছেন। ৪ ম্যাচে বল হাতে নিয়েছেন ৯ উইকেট। ব্যাটিংয়ে করেছেন ৮৮ রান।  তার ধ্রুপদী পারফরম্যান্সই চমকে দিয়েছে সবাইকে। 



এছাড়া মোহাম্মদ শাহজাদ (৮৯), ডেলপোর্ট (৭৬) অবদান রাখছেন। বোলিংয়ে পেসার খালেদ আহমেদ ৬টি, স্পিনার নাঈম হাসান ও পেসার আবু জায়েদ রাহী ৪টি করে উইকেট নিয়েছেন। দেশি এ তিন বোলারের ওপরই চিটাগংয়ের মূল ভরসা। মুশফিকের (১৩৯) সঙ্গে দেশি ক্রিকেটারদের মধ্যে আছেন ইয়াসির আলী। দুই ম্যাচে ৪৫ রান করেছেন। শুরুতে দুই ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন আশরাফুল। কিন্তু ২৫ রানের বেশি করতে পারেননি। ভালো করতে পারছেন না মোসাদ্দেক। মাত্র ৩৩ রান করেছেন ৪ ইনিংসে।

ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সে বিদেশিদের থেকে দেশি ক্রিকেটাররা পিছিয়ে আছে স্পষ্ট। তবে দলগত পারফরম্যান্সে চিটাগং দারুণ। দলের সাফল্যর রহস্য জানাতে গিয়ে পেসার খালেদ আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে খেলছি। একসাথে সবাই খেলছে। মাঠে সবাই সবাইকে সাপোর্ট করছে। দলের ভেতরে সমঝোতা বেশ ভালো। তাই দল ফল পাচ্ছে। মুশফিক ভাই ভালো অধিনায়কত্ব করছেন। নান্নু ভাই দলকে শুরু থেকে সাপোর্ট করছেন। 

কুমিল্লার বিপক্ষে ম্যাচ জিতে বেশ ফুরফুরে মেজাজে চিটাগং ভাইকিংস। ঢাকার প্রথম পর্ব বুক ভরা আত্মবিশ্বাস নিয়ে শেষ করেছে তারা। তরুণ পেসার খালেদের বিশ্বাস চিটাগং সামনে আরও চমক দেখাবে। উড়াবে বিজয়ের ঝাণ্ডা, ‘ড্রেসিং রুমের অবস্থা খুবই ভালো। সবাই বেশ চাঙ্গা। আমরা পয়েন্ট টেবিলে দুই নম্বরে আছি। দলের সবার মনোবল শক্ত যে আমরা সামনের ম্যাচে আরও ভালো করব।’

আপাতত বিশ্রামেই থাকবে চিটাগং ভাইকিংস। সিলেটে উড়াল দেবে ১৭ জানুয়ারি। এর আগে ঢাকায় অনুশীলন। সিলেটে তাদের একমাত্র ম্যাচ খুলনার বিপক্ষে ১৯ জানুয়ারি। 
 

 

 

রাইজিংবিডি/সিলেট/১৪ জানুয়ারি ২০১৯/ইয়াসিন/আমিনুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়