ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ইউনিপে-২ ইউ’র এমডিসহ ছয়জনের ১২ বছর কারাদণ্ড

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৫১, ২৩ জানুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইউনিপে-২ ইউ’র এমডিসহ ছয়জনের ১২ বছর কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ইউনিপে-২ ইউ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ (এমডি) ছয়জনকে মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনের মামলায় ১২ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বুধবার ঢাকার বিশেষ জজ-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুনতাসির হোসেন, চেয়ারম্যান মো. শহিদুজ্জামান (শাহিন) (পলাতক), নির্বাহী পরিচালক মাসুদুর রহমান (পলাতক), জিএম এম জামশেদ রহমান, উপদেষ্টা মঞ্জুর এহসান চৌধুরী (পলাতক) ও ইউনিল্যান্ড লিমিটেডের পরিচালক এইচ এম আরশাদ উল্যাহ।

কারাদণ্ডের পাশাপাশি তাদের ২ হাজার ৭০২ কোটি ৪১ লাখ ১১ হাজার ৭৮৪ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। অর্থদণ্ডের টাকা রাষ্ট্র পাবে বলে আদেশে উল্লেখ করা হয়েছে। ১৮০ দিনের মধ্যে টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে জমা প্রদানের জন্য আসামিদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। ব্যর্থতায় রাষ্ট্র আসামিদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবে বলে আদেশে বলা হয়েছে।

রায় ঘোষণাকালে কারাগারে থাকা দুই আসামি মুনতাসির হোসেন ও জামশেদ রহমানকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। আর জামিনে থাকা এইচ এম আরশাদ জামিনে থেকে আদালতে হাজির হন। রায় ঘোষণার পর তাদের দণ্ড পরোয়ানা মূলে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। আর পলাতক তিন আসামির বিরুদ্ধে সাজা পরোয়ানাসহ গ্রেপ্তারি পরোয়ানা ইস্যুর আদেশ দেওয়া হয়েছে।

এ মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন হিসাব নম্বরে অবরুদ্ধ ৪২০ কোটি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৩ টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। এ মামলা সংক্রান্ত চার্জশিটে উল্লেখিত ইউনিপে-২ ইউ বাংলাদেশ লিমিটেড নামীয় এবং আসামিদের পরিচালিত সম্পত্তিসমুহও রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী ফরহাদ হোসেন নিয়ন জানান, মাল্টিলেভেল মার্কেটিং কোম্পানি ইউনিপে-২ ইউ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে সারা দেশে ১৪৫টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চারটি মামলায় আসামিরা খালাস পেয়েছেন। আর পঞ্চম মামলায় তাদের সাজা হলো।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, মুনতাসির হোসেন ও শহিদুজ্জামান ২০০৯ সালের ১১ অক্টোবর ইউনিপে-২ ইউ বাংলাদেশ লিমিটেড নামে একটি কোম্পানি রেজিস্টার অব জয়েন্ট স্টক কোম্পানিজে আমদানি, রপ্তানি ও মাল্টি লেভেল মার্কেটিং কোম্পানি হিসেবে নিবন্ধন করে। এ ধরনের বিনিয়োগের জন্য যে সমস্ত আইনানুগ কার্যক্রম সম্পন্ন করা প্রয়োজন তা না করে ভার্চুয়াল গোল্ড ক্রয়ে বিনিয়োগের কথা বলে নিরীহ ও সরলমনা জনসাধারণকে অল্প সময়ের মধ্যে অধিক হারে মুনাফা দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে কোম্পানির অনুকূলে অর্থ জমা করতে প্ররোচিত করে। নিরীহ জনসাধারণ ২০০৯ সালের ১১ নভেম্বর থেকে ২০১০ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির তিনটি হিসাবে বিভিন্ন গ্রাহকদের হিসাব হতে মোট ২৪৬ কোটি ১৩ লাখ ৩ হাজার ৪৫৫ টাকা জমা হয়।  মুনতাসির হোসেন ও শহিদুজ্জামান সদস্য/এজেন্টদের তথাকথিত কমিশন প্রদান, কোম্পানির খরচ ইত্যাদির নামে উক্ত হিসাবগুলো হতে ২৬ কোটি  ১২ লাখ ৩ হাজার ২০৭ টাকা উত্তোলন করেন। যার অধিকাংশ অর্থ কোম্পানির ব্যবস্থাপনা  পরিচালকের ব্যক্তিগত হিসাবে জমা করা হয়। ওই ঘটনায় ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি দুদকের সহকারী পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেন। তৌফিকুল ইসলাম মামলাটি তদন্ত করে ওই বছরের ২২ জুন আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৫ সালের ৬ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করেন আদালত। মামলাটিতে চার্জশিটভূক্ত ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ জানুয়ারি ২০১৯/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়