ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বিলুপ্তপ্রায় নীলপূজা

এম জসিম উদ্দিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:১৮, ১৩ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিলুপ্তপ্রায় নীলপূজা

এম জসিম উদ্দিন : চৈত্র সংক্রান্তির অন্যতম উৎসব হলো হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী নীলপূজা। চৈত্র সংক্রান্তিতে এই পূজা শেষ হয়ে গেলেও বর্ষবরণেও থাকে পূজার আমেজ। পূজায় বালা নৃত্যে অংশগ্রহণ করেন শিব, গৌরী, রাধা, কৃষ্ণ সাজে স্থানীয় যুবক-যুবতী। দলপতি সংগীত পরিবেশন করেন ‘শিব বলে ও গৌরী তুই বড় সুন্দরী, অল্প বয়সে হইছি বুড়া তাতে তোমার ক্ষতি কি?’ মূলত সনাতন নিম্ন বর্ণের মানুষের কাছে নীল নাচ ঐতিহ্যের উৎসব হিসেবে পরিচিত, যা আজ বিলুপ্তপ্রায়।

বরগুনা পাথরঘাটার স্থানীয় সাংবাদিক বাবু খোকন কর্মকার বলেন, নীলপূজা বা নীলষষ্ঠী হলো বাংলার হিন্দু সমাজের এক লৌকিক উৎসব, যা মূলত শিব-দুর্গার বিবাহ বা ‘শিবের বিয়ে’ নামে পরিচিত। সাধারণত চৈত্র সংক্রান্তির চড়ক উৎসবের আগের দিন নীলপূজা অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। নীলসন্ন্যাসীরা ও শিব-দুর্গার সঙেরা পূজার সময় নীলকে সুসজ্জিত করে গীতিবাদ্য সহযোগে বাড়ি বাড়ি ঘোরান এবং ভিক্ষা সংগ্রহ করেন। নীলের গানকে বলা হয় ‘অষ্টক গান’। ঐদিন সন্তানবতী হিন্দু রমণী উপবাস থাকেন। সন্ধ্যাবেলা তারা সন্তানের কল্যাণার্থে প্রদীপ জ্বালিয়ে শিবপূজা করে উপবাস ভঙ্গ করেন।

তিনি আরো বলেন, প্রাচীন ঐতিহ্যগুলো ধীরে ধীরে বীলিন হয়ে যাচ্ছে। এখন আর কেউ আগ্রহ প্রকাশ করে না রং-ঢং সেজে রাস্তায় নামতে। আগে তারা চৈত্র সংক্রান্তিতে সকলের বাড়ি বাড়ি গিয়ে নৃত্য করত এবং নগদ অর্থ, চাল, ডাল যে যা দিত সাদরে গ্রহণ করত। এখন এগুলোর প্রচলন আর নেই। আমাদের সন্তানেরা এই ঐতিহ্য ভুলে গেছে।


পাথরঘাটার গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, আমরা নিজেরাই তো নীলপূজার কথা ভুলে গেছি। চৈত্র মাসে আমরা আগে দেখতাম ঘরে ঘরে গিয়ে নীলপূজা হতো। এখন আর আমরা নীলপূজার আমেজ দেখি না। হিন্দু, বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের পাথরঘাটা উপজেলা সহ-সভাপতি বাবু বাসুদেবচন্দ্র শীল বলেন, এখন দুর্গাপূজা ব্যতীত সকল পূজাই ব্যক্তিকেন্দ্রিক হয়ে গেছে। আমাদের এই উপজেলার চরদুয়ানি, রায়হানপুর ও কাকচিড়া ইউনিয়নে নীলপূজা হয়। এর আগে বিভিন্ন স্থানে এই পূজা পালিত হতো। এখন এর প্রচলন অনেকটাই কমে গেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ এপ্রিল ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়