ঢাকা     শুক্রবার   ২৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১৩ ১৪৩১

ক্যাম্পাসে সম্প্রীতির ইফতার

ইমানুল সোহান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০০, ১৮ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ক্যাম্পাসে সম্প্রীতির ইফতার

ইমানুল সোহান : রোজা মুসলমানদের জন্য অবশ্য পালনীয় বিধান। তাই শেষ রাতে সাহ্‌রির পর দিনশেষে ইফতার পরম আনন্দের মুহূর্ত। তবে শহর বা গ্রামাঞ্চলের ইফতার আয়োজন থেকে কিছুটা ভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের ইফতার। এখানে ধর্ম-বর্ণ মিলেমিশে বন্ধুতার প্রকাশ ঘটে। ফলে ক্যাম্পাসের ইফতারে অংশ নেয় অন্য ধর্মের বন্ধুরাও। তাই সবকিছু ছাপিয়ে এ আয়োজন হয়ে ওঠে সম্প্রীতির বন্ধন হিসেবে।

গোধূলি বেলায় বিকেলের নরম রোদে সবুজ ঘাসের চাদরে বৃত্তাকার হয়ে বসে আছে ১০-১৫ জন বন্ধু। বৃত্তের মাঝে বিছানো পত্রিকা। তাতে ছোলা, মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ একসঙ্গে মেশানো। সবাই অপেক্ষায় রয়েছেন আজানের। ইফতার সামগ্রী খুব বেশি না হলেও সবার চোখে-মুখে উচ্ছ্বাসের ছটা স্পষ্ট। সবাই মশগুল আড্ডায় তবে কেউ কেউ ব্যস্ত শেষ মুহূর্তের শরবত বা অন্য সামগ্রী তৈরিতে। শুক্রবার শেষ বিকেলে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্রিকেট মাঠের চিত্র এটি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্রিকেট মাঠ ছাড়াও পেয়ারা তলা, টিএসসির সিঁড়ি, জিয়া হল মোড় এবং ডায়না চত্বরেও এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

গ্রীষ্মের প্রচণ্ড খরতাপে ক্লান্ত-তৃষ্ণার্ত শিক্ষার্থীরা নিজেরাই বন্ধুদের নিয়ে দলে দলে বিভক্ত হয়ে ইফতারের আয়োজন করে। পরিবারের সঙ্গে সাহ্‌রি-ইফতার করতে না পারার কষ্ট তারা এভাবেই ভুলে থাকতে চায়। এই ক্ষুদ্র আয়োজনে চলে খুঁনসুটি আর আড্ডা। ইফতার আয়োজনে থাকে ছোলা, মুড়ি, পিঁয়াজু, বেগুনি, আলুর চপ আর সঙ্গে থাকে শরবত এবং কলাসহ দু’এক রকমের ফল। এর মধ্যেই সবাই খুঁজে পায় নির্মল আনন্দ এবং পরিতৃপ্তি। রমজান মাসজুড়েই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ইফতার আয়োজন থাকে চোখে পড়ার মতো।



বন্ধুদের আয়োজন ছাড়াও ক্যাম্পাসে বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক-স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, জেলা ও অঞ্চলভিত্তিক সংগঠন এবং বিভিন্ন বিভাগের পক্ষ থেকে ইফতারের আয়োজন তো আছেই। এভাবে পুরো রমজান মাস একের পর এক সংগঠনের ইফতার আয়োজন চলতেই থাকে। তবে বাঁধাধরা নিয়মে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে চলে না কিছুই। ক্লাস-পরীক্ষা থাকায় অনেকে ইচ্ছা থাকলেও পরিবারের কাছে যেতে পারে না। আবার অনেকে আবাসিক হল খোলা থাকায় চাকরির পড়া বা বন্ধুদের সঙ্গে থেকে যায় হলে।

বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী মাইদুল বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের ইফতার মানেই আলাদা অভিজ্ঞতা। শেষ রাতে সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে বসে হলের ডাইনিংয়ে সাহ্‌রি খাওয়ার মাঝে থাকে অন্যরকম তৃপ্তি। ক্যাম্পাসে সবুজ ঘাসের ওপর পত্রিকা বিছিয়ে সহপাঠী বা বন্ধুদের নিয়ে ইফতার করলে সব ক্লান্তি যেন এক নিমিষেই দূর হয়ে যায়।’

বন্ধুদের সঙ্গে ইফতারে অংশ নেয়া হৃদয় পাল বলেন, ‘এ এক অসাধারণ অনভূতি! বন্ধুদের সঙ্গে ইফতার পার্টি খুব উপভোগ করি।’



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ মে ২০১৯/ফিরোজ/তারা

রাইজিংবিডি.কম

সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়