ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

জনসচেতনতার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ সম্ভব

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:৫৫, ১৭ জুন ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
জনসচেতনতার মাধ্যমে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ সম্ভব

নিজস্ব প্রতিবেদক : জনসচেতনতার মাধ্যমেই চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ সম্ভব বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম।

তিনি বলেন, যে যার অবস্থান থেকে নিজের বাড়িঘর ও আশেপাশের এলাকা পরিস্কার রাখলে এবং কোথাও পানি জমতে না দিলে এই চিকুনগুনিয়া রোগ প্রতিরোধ সম্ভব। শুধু চিকুনগুনিয়া নয়, সব রোগ প্রতিরোধেই সবাইকে সচেতন হতে হবে।

রাজধানী ঢাকায় চিকুনগুনিয়া জ্বরের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা শনিবার সচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছেন। ধানমন্ডিতে এই কার্যক্রমের উদ্বোধনকালে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া এই কার্যক্রম চলে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, এডিস মশা থেকেই যেহেতু চিকুনগুনিয়া রোগের ভাইরাস ছড়ায়, তাই এই মশার উৎপত্তি স্থল নিধন কার্যক্রম আমরা প্রতিকিভাবে শুরু করেছি। আমাদের এই অভিজানের মূল উদ্দেশ্য জনগণকে সচেতন করা।



তিনি বলেন, সবাইকে যার যার অবস্থান থেকে মশা নিধন কার্যক্রমে এগিয়ে আসতে হবে। প্রথমে একজন নাগরিককে নিজ বাড়ি, আশেপাশের এলাকায় লক্ষ্য রাখতে হবে কোথাও যাতে কোনো পানি জমে না থাকে। জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্যই এমন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী।

এ সময় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক (রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা) অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (ডা.) শেখ সালাহউদ্দিন, গবেষক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধ সচেতনামূলক অভিযানে অংশ নেয় ঢাকার সরকারি-বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজ, ডেন্টাল কলেজ, নার্সিং ইনস্টিটিউট, ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজি, মেডিক্যাল অ্যাসিস্ট্যান্ট ট্রেনিং স্কুলসহ সকল চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থী। ঢাকার ৯২টি পয়েন্টে তারা সচেতনতামূলক কাজ চালিয়েছে।



চিকুনগুনিয়া জ্বরের বাহক এডিস মশার প্রজনন ক্ষেত্র ধ্বংস করতে এবং এ রোগ নিয়ে জনসচেতনতা তৈরি করতে মাঠ পর্যায়ে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ভাগ করে এই কার্যক্রম পরিচালনা করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের পরিচালক অধ্যাপক ডা. সানিয়া তাহমিনা বলেন, আমরা চেয়েছিলাম ৯২টি স্পটে এই সচেতনতনতামূলক কার্যক্রম চালাবো। কিন্তু সেটি এখন আরো অনেক বেশি স্থানে হয়েছে।

তিনি জানান, সাধারণ মানুষকে সতর্ক করতেই আজকের এই কার্যক্রম। কেবল ঘরের বাইরে নয়, ঘরের ভেতরে পানি, ফুলের টব, ফেলে রাখা কৌটা বা বোতল, পানির ট্যাংক, ছাদেু জমে থাকা পানি, পরিত্যক্ত টায়ার, আবর্জনার স্তুপ বা ডাবের খোসার ভেতরেও জন্ম নেয় এডিস মশা। সিটি করপোরেশনের কর্মীরা ঘরের ভেতরে ঢুকতে পারে না। তাই ঘরে ঘরে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীরা কাজ করছেন।

এ ছাড়া স্বাস্থ্যমন্ত্রী রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল  কলেজ হাসপাতাল এলাকা, ধানমন্ডি ২নং সড়ক এবং আজিমপুর সরকারি কলোনির ভিতরে মেডিক্যাল শিক্ষার্থীদের সঙ্গে এই সচেতনতামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ শনিবার রাতে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, শিক্ষার্থীরা তাদের শিক্ষক ও চিকিৎসকদের নেতৃত্বে ২০৫টি দলে বিভক্ত হয়ে ঢাকা উত্তর ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ৯২টি ওয়ার্ডের ৭৫০টি এলাকায় এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। অংশগ্রহণকারী  প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা কর্মসূচির শুরুতে একটি র্যা লি করে। এরপর ২০ থেকে ৩০ জনের ছোট ছোট দলে বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন স্থানে কর্মসূচি পালন করে। এ সময় জনসচেতনতা সৃষ্টিতে লিফলেট বিতরণ ও পথসভা করা হয়। এ ছাড়া পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীর তথ্য নেওয়া হয়।

বিজ্ঞপ্তিতে তিনি আরো জানান, ১৪০ এলাকার ১৪৮০ বাড়ি থেকে প্রাপ্ত তথ্য বিশ্লেষণ করা হয়েছে। এসব বাড়ি থেকে চিকুনগুনিয়ার ২৯৫৬ জন রোগী সনাক্ত করা হয়েছে। তাদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। জরিপের পূর্ণাঙ্গ তথ্য বিশ্লেষণ শেষ হওয়ার পর তা সংবাদ মাধ্যমে জানানো হবে বলেও বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।

 


রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ জুন ২০১৭/সাওন/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়