ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে সব মন্ত্রণালয়

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:২৬, ১২ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করবে সব মন্ত্রণালয়

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের পুষ্টি পরিস্থিতি উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয় একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেছে।

মঙ্গলবার রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা অবহিতকরণ সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের আহ্বানের পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা এ অঙ্গীকার করেন।

২০১৬ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যে বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয়েছে।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী।

মতিয়া চৌধুরী বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রায় ৪৫ বছর আগে জনগণের পুষ্টি নিশ্চিত করার কথা বলেছিলেন। তাকে স্বপরিবারে হত্যার পর রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব পালনকারী কোনো সরকারই এ বিষয়ে গুরুত্ব দেয়নি। প্রথমবারের মতো ক্ষমতায় যাওয়ার পর ১৯৯৭ সালে শেখ হাসিনা পুষ্টি কার্যক্রম শুরু করে। পরে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় গিয়ে তা বন্ধ করে দেয়।

আওয়ামী লীগের বাইরে বিভিন্ন সময়ে রাষ্ট্র পরিচালনায় থাকা সরকারের সমালোচনা করে মতিয়া চৌধুরী বলেন, জিয়া, এরশাদ থেকে শুরু করে খাদেলা জিয়ার নেতৃত্বে রাষ্ট্র পরিচালনাকারী সরকারগুলো পুষ্টি কার্যক্রমে হাত দেয়নি। কারণ, জনগণের প্রতি তাদের কোনো দায়িত্ববোধ নেই। তারা মনে করেন, মানুষ সচেতন হলে অধিকার চাইবে, সে কারণেই এমন মনোভাব।

দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি পরিকল্পনাকে একটি জাতীয় দলিল আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, পুষ্টি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন প্রধানন্ত্রী শেখ হাসিনার অঙ্গীকার। এ কাজে কৃষি মন্ত্রণালয় সবসময় পাশে থাকবে।

অনুষ্ঠানে মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকি বলেন, পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়ন হলে নারী ও শিশুরা বেশি উপকৃত হবে। শিশুরা অবুঝ এবং নারীরা উপার্জনক্ষম না হওয়ায় সমাজ ও পরিবার তাদের জন্য অর্থ ব্যয়ে কৃপণতা দেখায়। এ অবস্থায় রাষ্ট্র নারী ও শিশুদের জীবনমান উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছে। মহিলা ও শিশুবিষয়ক মন্ত্রণালয় এ কাজে পাশে থাকবে।

সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদ দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নে একসঙ্গে কাজ করা অঙ্গীকার করেন।

অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেন, পুষ্টি কার্যক্রমের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সব মন্ত্রণালয়কে একসঙ্গে পাওয়া যায় না।  পুষ্টি কার্যক্রমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় নেতৃত্ব দিচ্ছে। বিভিন্ন সভায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সভায় অংশগ্রহণের জন্য আহ্বান জানালেও তারা আসতে চান না। এটি হতে পারে না। পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে, তাতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।

স্বাস্থ্যমন্ত্রী আরো বলেন, এই কর্মপরিকল্পনার মাধ্যমে পুষ্টিবিষয়ক একটি দলিলের যাত্রা শুরু হলো। জাতির পিতা পুষ্টিসমৃদ্ধ জাতি গঠনের যে স্বপ্ন দেখেছিলেন, তার সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে তা বাস্তবায়ন করা হবে।

পুষ্টির বিষয়ে কোনো রাজনীতি না করার অনুরোধ জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী সবাইকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান। অনুষ্ঠানে উপস্থিত মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রীরা হাত তুলে পুষ্টি মান উন্নয়নে একসঙ্গে কাজ করার অঙ্গীকার করেন।

শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর বিষয়ে মায়েদের সচেতনতার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, আধুনিকতার নামে অনেক মা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান না। মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য পুষ্টিকর। এ বিষয়ে সচেতন হতে হবে।

দেশীয় ফল খাওয়ার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।

রোহিঙ্গাদের মাধ্যমে রোগব্যাধী ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা ব্যক্ত করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, পোলিওসহ অনেকগুলো রোগ আমরা কয়েক বছর আগেই নির্মূল করেছি। অথচ রোহিঙ্গাদের মধ্যে এসব রোগ পাওয়া যাচ্ছে। বিষয়টি উদ্বেগের।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালেক, স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব সিরাজুল হক খান, স্বাস্থ্য শিক্ষা ও পরিবারকল্যাণ সচিব ফয়েজ আহম্মেদ, অতিরিক্ত সচিব রোকসানা কাদের, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল কালাম আজাদ প্রমুখ।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ ডিসেম্বর ২০১৭/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়