ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

‘দেশে ৭০ লাখ মাদকাসক্ত’

মোহাম্মদ নঈমুদ্দীন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৭, ২৮ জানুয়ারি ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘দেশে ৭০ লাখ মাদকাসক্ত’

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক : দেশে আনুমানিক ৭০ লাখ মাদকাসক্ত রয়েছে। কিন্তু তার বিপরীতে পুনর্বাসন কেন্দ্রে বেড সরকারি মাদকাসক্তি ১১৫টি।

রোববার সচিবালয়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ তথ্য তুলে ধরেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী।

তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের এ মতবিনিময় সভায় সভাপতিত্ব করেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম।

ফরিদ উদ্দিন আহম্মদ চৌধুরী বলেন, মাদকের বিস্তার রোধে পুলিশ চেষ্টা করছে না তা নয়। এর মধ্যে কিছু ভূত যে নেই আমরা তাও বলব না। আমরা সেই জায়গায় পৌঁছাতে পারিনি, আমরা চেষ্টা করছি প্রতিনিয়ত। বিভিন্ন মিডিয়ায় আসে মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭০ লাখ, ৮০ লাখ, কেউ বলেন ৬০ লাখ।

তিনি বলেন, ‘মাদকাসক্তের সংখ্যা ৭০ লাখ হলে একজনকে নিরাময় করতে ৪ থেকে ৫ মাস সময় লাগে। ৭ মাস, ১০ মাসও লাগে। আমাদের সরকারি নিরাময় কেন্দ্রের অত্যন্ত খারাপ অবস্থা। সরকারি পর্যায়ে ঢাকাতে ১০০ সিট, আর তিন বিভাগে ১৫ বেড, মানে সরকারি পর্যায়ে ১১৫টি বেড, যেখানে ৭০ লাখ মাদকাসক্ত। আমরা বেসরকারি খাতকেও সম্পৃক্ত করেছি, ১৯৭টি হাসপাতালে ২ হাজার ৩শ বেড আছে।’

মাদকাসক্তের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে জানিয়ে সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব বলেন, ‘এজন্য অপরাধের হারও বাড়ছে। এটাকে যদি চ্যালেঞ্জ হিসেবে না নিই তবে সরকার লক্ষ্য অর্জন করতে পারবে না।’

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সারা দেশে ৯২টি ইউনিট রয়েছে জানিয়ে সচিব বলেন, ‘অধিদফতরের ৫১টি গাড়ি, এর মধ্যে মোটরসাইকেলও আছে। মাদকদ্রব্যের ব্যবসার সঙ্গে যারা জড়িত আমরা অনেকে তাদের চিনি বা ধারণা করতে পারি। তাদের গতির সঙ্গে আমাদের গতি কীভাবে মেলাবেন। আমরা সক্ষমতা বাড়ানোরও চেষ্টা করছি।’

ফরিদ উদ্দিন বলেন, ফেনসিডিলের ব্যবসা কমে আসছে, কিন্তু ইয়াবা আসক্তদের সংখ্যা বাড়ছে। কক্সবাজারে ৩০-৫০ টাকায় পাওয়া যায় এক ধরনের জিনিস (ইয়াবা), সেটা ঢাকায় এনে বিক্রি হচ্ছে ৩শত থেকে ১হাজার টাকায়। এর চেয়ে লাভজনক ব্যবসা আর কিছু হতে পারে না।’

‘মাদকের ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে কখন আমি, কখন আমার সন্তান, কখন আমার পরিবার- কে কখন যুক্ত হয়ে যায় তা বলা যাচ্ছে না। মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সক্ষমতা অনেক কম- বলেন সচিব।

তিনি বলেন, মাদকের বিস্তার রোধে আমরা কাজ করছি। একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে অন্যান্য এজেন্সিগুলোর সমন্বয় করার চেষ্টা করছি। মোবাইল ট্র্যাকিং ও বিভিন্ন বিষয়যুক্ত হবে এতে। সবাই মিলে একসঙ্গে মুভ না করলে এটা কোনোভাবেই কাভার করা যাবে না।

মাদকের ব্যবহার বন্ধে সন্তানদের প্রতি কড়া নজরদারি, সামাজিক দায়িত্ববোধ ও সচেতনতার বিকল্প নেই জানিয়ে সচিব বলেন, আমাদের সমাজে লক্ষ্যণীয় একটা বিষয় হচ্ছে, আমরা সন্তানদের সঙ্গে অনেক জিনিস শেয়ার করছি না। পিতা হিসেবে সন্তানের রুমে ঢুকতে পারছি না। সন্তান ঘরে গেলে অনেক সময় দেখি অসন্তুষ্ট হয়। এখন সন্তুষ্টি-অসন্তুষ্টির একটা জায়গা হয়ে গেছে। সামাজিকভাবে এগোতে না পারলে আমরা সমস্যায় পড়ব। মাদকের ভয়াবহতার দিকগুলো মানুষের সামনে বেশি করে তুলে ধরতে হবে।’

তথ্য মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত এই সভায় অন্যদের মধ্যে তথ্য মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব নাসির উদ্দিন আহমেদ, কারা মহাপরিদর্শক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সৈয়দ ইফতেখার উদ্দিন, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা কামরুন নাহার, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের মহাপরিচালক জামাল উদ্দিন আহমেদসহ দুই মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ জানুয়ারি ২০১৮/নঈমুদ্দীন/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়