কালের সাক্ষী সেই টর্চার সেল ও গণকবর
পলাশ সাহা || রাইজিংবিডি.কম
রহমতখালী খাল সংলগ্ন গণকবর
লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বাগবাড়ি সংলগ্ন জঙ্গলে ঘেরা সারের গুদাম ছিল পাকিস্তানিদের টর্চার সেল।
মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে এখানে অমানুষিক নির্যাতন চালানো হতো। তারপর গুলি করে মেরে লাশ ফেলে দেওয়া হতো পাশের ডোবায়।
বাগবাড়ি গণকবরের পাশে দাঁড়িয়ে যুদ্ধের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে বারবার শিউরে উঠছিলেন মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক মাস্টার। সেই টর্চার সেল ও গণকবরটি এখনো দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে।
বাগবাড়ি গণকবরের পাশে মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক
বাগবাড়ি গণকবরের পাশেই শহীদ স্মৃতি উচ্চ বিদ্যালয়। এই বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্র আরাফাত হোসেন প্রতিদিন গণকবরটির পাশ দিয়ে বিদ্যালয়ে যাতায়াত করলেও সে জানে না এটি কিসের কবর।
বর্তমান প্রজন্ম এই সব গণকবর সম্পর্কে অবগত নয়। তাদের এ সম্পর্কে ধারণা দিতে শিক্ষকদের এগিয়ে আসতে হবে বলে মনে করেন জেলা মুক্তিযোদ্ধা ইউনিট কমান্ডার আনোয়ারুল হক মাস্টার।
বাগবাড়ি গণকবর সংলগ্ন সারের গুদাম
এ ছাড়া শহরের মাদামপুল এলাকা সংলগ্ন রহমতখালী খাল পাড়ে মুক্তিযোদ্ধাদের ধরে এনে সারিবদ্ধভাবে দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে খালে ফেলে দেওয়া হতো। পরে মাদামপুলটি মুক্তিযোদ্ধারা ভেঙে ফেলে যাতে পাকিস্তানিরা গ্রামে ঢুকতে না পারে। সেই খাল পাড়ের গণকবরের জায়গাটি দীর্ঘদিন বেদখল হয়ে থাকলেও পৌরসভার মেয়র মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের গণকবরটির জায়গা দখলমুক্ত করে সংস্কারের উদ্যোগ নেন।
জেলায় মুক্তিবাহিনীর সঙ্গে পাকিস্তানি বাহিনীর ১৭টি সম্মুখযুদ্ধ হয়। এ ছাড়া মুক্তিবাহিনী ২৯টি দুঃসাহসিক অভিযান পরিচালনা করে। এ সব যুদ্ধে ৩৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন।
৩ রহমতখালী খাল সংলগ্ন গণকবরের পাশে মুক্তিযোদ্ধা আবু তাহের
যুদ্ধকালীন নির্যাতনের কথা তুলে ধরে আবু তাহের বলেন, ‘শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হলেও প্রত্যেকটি থানায় যেসব অস্ত্রধারী রাজাকার ছিল তারা এখনো ধরা ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। এদের চিহ্নিত করে বিচার করা হলে জঙ্গিবাদমুক্ত বাংলাদেশ গঠন সম্ভব বলে।’
রাইজিংবিডি/লক্ষ্মীপুর/২০ ডিসেম্বর ২০১৬/পলাশ সাহা/উজ্জল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন