ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সামরিক বাহিনীর প্রতি ‘নমনীয়’ নই : সু চি

রাসেল পারভেজ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:৪৩, ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সামরিক বাহিনীর প্রতি ‘নমনীয়’ নই : সু চি

মিয়ানমারের রাষ্ট্রীয় পরামর্শক অং সান সু চি

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : মিয়ানমারের গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী ডি ফ্যাক্টো সরকারপ্রধান অং সান সু চি দাবি করেছেন, তিনি সামরিক বাহিনীর প্রতি নমনীয় হননি।

এই সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘ অভিযোগ তুলেছে, তারা রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নিধন অভিযান চালাচ্ছে।

সামরিক বাহিনীর প্রতি নমনীয় না হওয়ার দাবি করলেও তিনি বলেছেন, জেনারেলদের সঙ্গে তার সম্পর্ক এখন স্বাভাবিক। তবে তার উদ্দেশ্য হলো জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা।

রেডিও ফ্রি এশিয়া-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন সু চি। খবর রয়টার্স অনলাইনের।

মঙ্গলবার নেপিদো থেকে জাতির উদ্দেশে দেওয়া সরাসরি টেলিভিশন ভাষণে রাখাইনে সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের নিন্দা করেছেন এবং লঙ্ঘনকারীদের শাস্তির আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে অভিযানের নামে সেনাবাহিনী যে তাণ্ডব চালিয়েছে এবং যার ফলে ৪ লাখ ১০ হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে, সেনাবাহিনীর সেই কর্মকাণ্ডের ব্যাপারে তিনি কিছুই বলেননি।

জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে জাতিগত নির্মূলের আশঙ্কায় যে উদ্বেগ জানিয়েছে এবং জাতিসংঘ মহাসচিব ও জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের প্রধান মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিগত নিধনের যে অভিযোগ করেছেন, সে বিষয়ে মঙ্গলবারের ভাষণে কোনো কথা বলেননি সু চি। সেনাবাহিনীর বিষয়টি তিনি সম্পূর্ণ এড়িয়ে গেছেন। এ নিয়ে আবার সমালোচনা মুখে পড়েছেন তিনি।

সামরিক বাহিনীর প্রতি নমনীয় হয়েছেন কি না- এমন এক প্রশ্নের জবাবে রেডিও ফ্রি এশিয়াকে সু চি বলেছেন, ‘আমরা কখনো আমাদের অবস্থান পাল্টাইনি... শুরু থেকেই আমাদের লক্ষ্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা। আমরা কখনো সামরিক বাহিনীর সমালোচনা করিনি কিন্তু শুধু তাদের কৃতকর্মের বিরুদ্ধে বলেছি আমরা।’

সামরিক সরকারের হাতে তৈরি সংবিধান পরিবর্তনের প্রচেষ্টা এখনো পার্লামেন্টে সফল করতে পারেননি। এ ছাড়া দেশের সামরিক-বেসামরিক নিরাপত্তার দায়িত্ব সেনাদের হাতে রয়েছে। সাক্ষাৎকারে সু চি বলেছেন, ‘পার্লামেন্টের মাধ্যমে আমরা পরিবর্তনগুলো আনতে চাই। আমি আগেও সামরিক বাহিনী নিয়ে শক্ত অবস্থান নিয়েছি এবং এখনো তা করব।’ তবে তিনি কখনো বলননি, সেনাবাহিনী জাতিগত নিধনে যুক্ত।

মানবাধিকার গোষ্ঠীগুলো ও রাখাইন থেকে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গারা বলছে, সেখানে সেনাবাহিনী ও স্থানীয় উগ্রবাদী বৌদ্ধরা মিলে নিধন অভিযান চালাচ্ছে। প্রায় দেড় শতাধিক গ্রাম জ্বালিয়ে দিয়ে রোহিঙ্গাদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। গণহত্যা, খুন, ধর্ষণ ও নির্যাতনের অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু মঙ্গলবার সু চি যে ভাষণ দিয়েছেন, তাতে বিষয়গুলো উঠে আসেনি এবং মনে হয়েছে, রাখাইনে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে তেমন কিছুই করা হয়নি। অথচ তারা নিজেদের বাড়ি ছেড়ে বাংলাদেশে পালিয়ে যাচ্ছে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রাসেল পারভেজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়