ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লারার ৪৫ বলের ঝড়?

ইয়াসিন হাসান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:১৭, ৯ অক্টোবর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে লারার ৪৫ বলের ঝড়?

ইয়াসিন হাসান: ১৯৯৮ সালে প্রথম বাংলাদেশে এসেছিলেন ক্রিকেটের বরপুত্র ব্রায়ান চার্লস লারা। সেবার উইলিস ইন্টারন্যাশনাল কাপের আসর বসেছিল বাংলাদেশ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ফাইনাল খেলেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ। বৈশ্বিক কোনো টুর্নামেন্টে সেটাই ছিল দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম শিরোপা। শিরোপা আসে দক্ষিণ আফ্রিকার নায়ক থেকে খলনায়কে রূপ নেয়া হেনসি ক্রোনিয়ার হাত ধরে!

দলকে নেতৃত্ব দিয়ে ব্রায়ান লারা ওয়েস্ট ইন্ডিজকে শিরোপার কাছাকাছি নিয়ে গিয়েছিলেন। কিন্তু শিরোপার স্বাদ দিতে পারেননি। তারপরও ক্রিকেটের বরপুত্রের মনে ধরে যায় বাংলাদেশকে! এক বছর যেতে না যেতেই লারা নিজ দলকে নিয়ে চলে আসেন বাংলাদেশে। তখন ছিল না কোনো টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট। বাংলাদেশ পায়নি টেস্ট স্ট্যাটাসও। তাই খেলতে হয়েছিল শুধু ওয়ানডে ম্যাচ। দুই ম্যাচের জন্য লারার নেতৃত্বে ঢাকায় আসে জিমি অ্যাডামস, ওয়েভাল হাইন্ডস, শিবনারায়ন চন্দরপল, রিকার্ডো পাওয়েলরা। দুটি ম্যাচেই বড় ব্যবধানে জয় পেলেও লারা ক্যারিয়ার জুড়ে বাংলাদেশের ওই সফরকে স্মরণীয় করে রাখেন ভিন্ন এক কারণে।

ঘটনাটি ৯ অক্টোবর ১৯৯৯ সালের। আগের রাতেই বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বাংলাদেশকে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। পরদিনই আবার একই মাঠে ম্যাচ। প্রথম ওয়ানডেতে ২ রান করা লারা কিছুটা বিষন্ন, কিছুটা বিমর্ষ। পরের ম্যাচে তাই জ্বলে ওঠার জেদ চেপে বসে তার। সেই জেদের বহিঃপ্রকাশ এমনটা হবে তা ভাবতেও পারেননি বাংলাদেশ, ক্রিকেট বিশ্ব।

 


২২ গজের ক্রিজে তাণ্ডব চালিয়ে ৪৫ বলে ব্রায়ান লারা তুলে নেন সেঞ্চুরি। মনে পড়ছে লারার সেই তাণ্ডবলীলার কথা! ১৭ চার ও ৪ ছক্কায় ৪৫ বলে সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন লারা। ২৬ বলে পেয়েছিলেন হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ। পাকিস্তানের শহীদ আফ্রিদির পর সেটি ছিল ওয়ানডেতে দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরি। ৭ বছর এ রেকর্ড ধরে রাখতে পেরেছিলেন। বাঁহাতি এ ব্যাটসম্যানের বিস্ফোরক ব্যাটিংয়ে হতাশ হয়ে পড়ে বাংলাদেশ শিবির। তার আউটের জন্য হাপিত্যেশ করে পুরো বাংলাদেশ। জানেন শেষ পর্যন্ত কার বলে আউট হয়েছিলেন ক্রিকেটের এ বরপুত্র? নামটা শুনলে অবাকই হবেন। কারণ হাবিবুল বাশার সুমন আউট করেছিলেন লারাকে। ডানহাতি অফব্রেক বোলার বাশারের সেটিই মাত্র একমাত্র আন্তর্জাতিক উইকেট। লারা আউট হন ১১৭ বলে। ৬২ বলে ১৮ চার ও ৪ ছক্কায় ইনিংসটি সাজিয়েছিলেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক।

লারা অনেকটাই ভাগ্যবান। ১৮ বছর আগে তার গড়া রেকর্ড এখনও ভাঙতে পারেননি কোনো ওপেনার। পরবর্তীতে যারা দ্রুততম সেঞ্চুরি করেছেন তারা কেউই ওপেনিংয়ে ছিলেন না।  ১৯৯৬ সালে সনাৎ জয়াসুরিয়ার (৪৮ বল) দ্রুততম সেঞ্চুরি তুলে নেওয়ার ছয় মাস পরই শহীদ আফ্রিদি (৩৭ বল) তার রেকর্ড ভাঙেন। আফ্রিদির রেকর্ড টিকে ১৮ বছর। ২০১৪ সালের পহেলা জানুয়ারি তার রেকর্ড ভাঙেন কোরি অ্যান্ডারসন (৩৬)। কোরি অ্যান্ডারসনও ভাগ্যবান নন। তার রেকর্ডটি টিকে মাত্র ৩৮২ দিন। কারণ দক্ষিণ আফ্রিকার এবি ডি ভিলিয়ার্স ২০১৫ সালে ৩১ বলে করেছিলেন দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। দুই বছরের বেশি সময় ধরে ভিলিয়ার্স নিজের কাছেই  রেখেছেন রেকর্ডটি। মাঝে ২০০৬ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার মার্ক বাউচার ৪৪ বলে সেঞ্চুরি করে লারার রেকর্ড ভেঙেছিলেন। 

বাংলাদেশের মাটিতে লিস্ট ‘এ’ ম্যাচের দ্রুততম সেঞ্চুরি লারার। ১ বল বেশি খেলে ২০১৩ সালে ৪৬ বলে সেঞ্চুরি করেছিলেন ব্রেন্ডন টেলর। ঢাকা লিগে প্রাইম ব্যাংকের হয়ে রাজশাহীতে ঝড় তুলেন টেলর।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ অক্টোবর ২০১৭/ইয়াসিন/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়