ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

ইন্ডিয়ান লিগে ‘বাংলাদেশি উপহার’ সাবিনা

শামীম হোসেন পাটোয়ারি || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ১৪ এপ্রিল ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ইন্ডিয়ান লিগে ‘বাংলাদেশি উপহার’ সাবিনা

ক্রীড়া ডেস্ক : নানা জটিলতার পর প্রথম বাংলাদেশি ফুটবলার হিসেবে ভারতীয় লিগে খেলার সুযোগ পেয়েছিলেন সাবিনা খাতুন। বাংলাদেশি এ গোল মেশিনের আগুণে ফর্মে এবার দারুণ দাপটে ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগের সেমিফাইনালে উঠেছিল সিথু এফসি।

বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। প্রথম বারের মতো ভারতীয় লিগে খেলার সুযোগ পেয়ে নিজের সেরাটা প্রমাণ দিয়ে আসলেন। তার দলের মোট ১১ গোলের ৬টিই এসেছে সাবিনার কাছ থেকে। তাই বাংলাদেশি এই ফুটবল কন্যাকে নিয়ে প্রতিবেদন করেছে গোল ডট কম ইন্ডিয়া। তাদের শিরোনাম হচ্ছে ‘ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগে ‘‘বাংলাদেশি উপহার’’ সাবিনা’।

ভারতীয় ক্লাব সিথু এফসিতে যোগ দেওয়ার পর দলটির এক প্রাণ ভোমরা হয়ে উঠেন বাংলাদেশি সাবিনা। একই ক্লাব কৃষ্ণাকে নিলেও তাকে বদলি হিসেবে খেলানো হয়েছে। এক সময় ভিসা জটিলতার কারণে ভারতে পৌঁছানোটাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছিল তাদের জন্য। অথচ দেখা গেল সাবিনা গোলের ম্যাচগুলোতেই কেবল জিতল সিথু এফসি।

সিথুর হয়ে টানা চার ম্যাচে গোল পেয়েছেন সাবিনা। আর এই চার ম্যাচেই জিতেছে তার দল। শেষ ম্যাচে সাবিনা গোল পাননি, তার দলও জিতেনি। সেমিফাইনালে ইস্টার্ন স্পোর্টিং ইউনিয়নের বিপক্ষে তাদের দলও হেরেছে ২-০ গোলের ব্যবধানে। এর মধ্য দিয়ে ছিটকে গেছে ফাইনালে ওঠার লড়াই থেকে।

এমন আগুণে পারফরম্যান্সের পর সাবিনার প্রশংসা করে গোল ডটকমের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘সাবিনার মধ্যে সিথু গোল মেশিন খুঁজে পেয়েছে।’

ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগের(আইডব্লিউএল) নতুন নিয়ম অনুযায়ী ম্যাচের দিন সর্বোচ্চ দুজন বিদেশি খেলোয়াড় স্কোয়াডে ঠাঁই পাবেন। এর মধ্যে একজন থাকবেন মূল একাদশে। এই নিয়মের সুবিধা পেয়ে বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগ কাঁপিয়েছেন সাবিনা।

বিদেশি খেলোয়াড় হিসেবে সাবিনা সিথুর একাদশে থাকার লড়াইয়ে হারিয়ে দিয়েছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত টটেনহামের তানভি হ্যানসকে। প্রথম ম্যাচে তানভির বদলি হিসেবে মাঠে নেমেছিলেন সাবিনা। পরের পাঁচটি ম্যাচেই খেলেছেন একাদশে।

সতীর্থ থেকে বন্ধু বনে যাওয়া সাবিনার সঙ্গে একাদশে থাকার লড়াইয়ে  হেরে গেছেন তানভি। তবে সাবিনার সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকতে না পারলেও বাংলাদেশি এ গোল মেশিনের প্রশংসা করতে কার্পন্য করেননি তানভি। তার ভাষায়, ‘ইংল্যান্ডে খেলার যোগ্যতা রাখে সাবিনা।’

২৪ বছর বয়সি সাবিনা ইংল্যান্ডে খেলার সুযোগ পাবেন কিনা তা ভবিষ্যত বলে দেবে। তবে আপাতত ইন্ডিয়ান উইমেন্স লিগে দারুণ পারফরম্যান্সে সবার নজর কেড়েছেন বাংলাদেশি এ ফুটবল ললনা।



২০০৯ সালে জাতীয় চ্যাম্পিয়নসশিপে সাতক্ষীরা জেলার (খুলনা বিভাগ) হয়ে খেলার মধ্য দিয়ে ক্যারিয়ারের সূচনা হয় সাবিনার। অসাধারণ পারফরম্যান্সে ২০১০ সালে সাউথ এশিয়ান গেমসে বাংলাদেশ জাতীয় দলে ডাক পান সাবিনা। এরপর থেকে বাংলাদেশ দলের নিয়মিত মুখ এ বাঘিনী।

এর আগে ফুটসাল লিগে মালদ্বীপ পুলিশ ক্লাবের হয়ে দুইবার খেলেছেন সাবিনা। দেশে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাবের হয়ে ক্যারিয়ার শুরুর পর মোহামেডান এফসি সহ বিভিন্ন করপোরেট লিগে খেলেছেন তিনি।

সাবিনা ও বদলি হিসেবে খেলা কৃষ্ণাকে আগামী বছর আবারও নিতে প্রস্তুাব দিয়ে রেখেছে তাদের দল সিথু এফসি। বাংলাদেশি এই দুই তারকার পারফরম্যান্সে মুগ্ধ তামিল নাড়ুর ক্লাবটি। বিদেশি লিগে সাবিনার এমন পারফরম্যান্স বাংলাদেশি ধুঁকতে থাকা ফুটবলে অঙ্গনে নতুন প্রাণের সঞ্চার করবে বলে বিশ্বাস অনেকের।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ এপ্রিল ২০১৮/শামীম/ইয়াসিন

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়