ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

সিরিজ বোমা হামলা : সাজা হয়েছে ৩৩৪ জঙ্গির

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ১৭ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সিরিজ বোমা হামলা : সাজা হয়েছে ৩৩৪ জঙ্গির

মাকসুদুর রহমান : ২০০৫ সালের এই দিনে সারা দেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশ (জেএমবি) সিরিজ বোমা হামলা চালায়। হামলার ১৩ বছরের মধ্যে বেশিরভাগ মামলার বিচার শেষ হয়েছে। মামলাগুলোতে ৩৩৪ জঙ্গির সাজা হয়েছে।

১০ মামলা এখনো দেশের বিভিন্ন আদালতে বিচারাধীন আছে বলে তদন্ত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।

পুলিশ হেডকোয়ার্টার্স থেকে জানানো হয়, ২০০৫ সালে সিরিজ বোমা হামলার পর সারা দেশে বিভিন্ন থানায় মোট ১৫৯টি মামলা হয়। এর মধ্যে তদন্ত শেষে ১৪৯টির অভিযোগপত্র আদালতে জমা দেওয়া হয়েছে। এতে আসামি করা হয় ১ হাজার ১০৬ জনকে। এরমধ্যে মৃত্যুদণ্ড হয়েছে ২৭ জঙ্গির।

পুলিশ জানায়, ২০০৫ সালে মুন্সীগঞ্জ জেলা বাদে দেশের ৬৩ জেলায় সিরিজ বোমা হামলা হয়। ৩০০ স্থানে আধা ঘণ্টার ব্যবধানে একযোগে ৫০০ বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। দুজন নিহত ও দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়।

হামলা চালানো হয় হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট, জেলা আদালত, বিমানবন্দর, বাংলাদেশে থাকা মার্কিন দূতাবাস, জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়, প্রেসক্লাব ও সরকারি-আধাসরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা লক্ষ্য করে। হামলার স্থানগুলোতে জেএমবির লিফলেট পাওয়া যায়। লিফলেটগুলোতে বাংলাদেশে আল্লাহর আইন প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে বক্তব্য লেখা ছিল।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, সিরিজ বোমা হামলা করতে এক হাজার ২০০ কোটি টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছিল। ফান্ডের বেশির ভাগ টাকা এসেছিল মধ্যপ্রাচ্যের কয়েকটি দেশ থেকে। বাকি অর্থ যুদ্ধাপরাধীদের গঠিত একটি রাজনৈতিক দল ছাড়াও বিভিন্ন এনজিওর মাধ্যমে জোগান দেওয়া হয়েছিল।

পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম বলেন, নিজেদের অস্তিত্ব ও সাংগঠনিক সক্ষমতা দেখাতে,  জাতীয় ও আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট ৬৩ জেলায় একযোগে বোমা হামলা করেছিল জেএমবি। সিরিজ বোমা হামলার পর তারা যে আলটিমেটাম দিয়েছিল তার ভিত্তিতেই তারা সুইসাইডাল অ্যাটাক করতে থাকে।

তিনি বলেন, জেএমবি প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানের ফাঁসি হলে দ্বিতীয় অধ্যায়ে হবিগঞ্জের মাওলানা সাইদুর রহমান জেএমবির আমির হিসেবে হাল ধরার চেষ্টা করেন। কিন্তু তাকেও গ্রেপ্তারের মাধ্যমে জেএমবির সেই চেষ্টাও ভণ্ডুল করে দেওয়া হয়।

২০০৭ সালের ২৯ মার্চ রাতে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আবদুর রহমান, সিদ্দিকুর রহমান বাংলা ভাই, আতাউর রহমান সানি, আবদুল আউয়াল, খালেদ সাইফুল্লাহ ও ইফতেখার হাসান আল মামুনের (ল্যাংড়া মামুন) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে কারা কর্তৃপক্ষ। শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি কার্যকরের মাধ্যমে জেএমবির প্রথম অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটে। যারা সিরিজ বোমা হামলার অন্যতম কারিগর ছিলেন।

নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সাম্প্রদায়িক ও অনগ্রসর-পশ্চাৎপদ দৃষ্টিভঙ্গির চূড়ান্ত পরিণতির নাম জঙ্গিবাদ। দেশ থেকে ১৭ আগস্টের মতো অপরাজনৈতিক তৎপরতা চিরতরে দূর করতে হবে। এ দেশের জঙ্গিবাদের শীর্ষ নেতা ও পৃষ্ঠপোষকরা পাকিস্তান বা মধ্যপ্রাচ্যে পালিয়ে আছে। তাদের দেশে এনে বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। তাহলে জঙ্গিবাদের শেকড় তুলে ফেলা সম্ভব হবে।  

 

 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ আগস্ট ২০১৮/মাকসুদ/ইভা

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়