ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

‘শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই’

এনএ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৭:৩৯, ২০ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চাই’

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : পাকিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে চান উল্লেখ করে নব নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, প্রতিবেশি সব দেশের সঙ্গে আলোচনা এবং সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে চান তিনি।

পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পরের দিন জাতির উদ্দেশে দেওয়া প্রথম ভাষণে একথা বলেন তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের (পিটিআই) প্রধান ইমরান খান।

১৯৯২ সালে বিশ্বকাপ জয়ী  পাকিস্তানের অধিনায়ক কিংবদন্তি ক্রিকেটার ইমরান খান গত মাসের নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর ১৮ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন।

রোববার রাতে দেওয়া ভাষণে ভারত বা অন্য কোনও দেশের নাম উল্লেখ করে ইমরান বলেন, ‘প্রতিবেশী সবার সঙ্গে আমার কথা হয়েছে, আমি সম্পর্কের উন্নতি চাই। তা না হলে পাকিস্তানে শান্তি আসবে না।

এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে দেওয়া ভাষণে তিনি পাকিস্তানের প্রশাসন, রাজনীতি, অর্থনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিক্ষা, জলবায়ু ও পরিবেশ, দুর্নীতি, শিশু নির্যাতন, আইন-শৃঙ্খলা, প্রতিবেশির সঙ্গে সম্পর্কসহ নানা বিষয় তুলে ধরেন। দেশটিতে ঋণের মাত্রা ও দারিদ্রতা কমিয়ে ইসলামী কল্যাণমূলক ব্যবস্থায় একটি ‘নতুন পাকিস্তান’ গড়ে তোলারও প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।

দেশটির বর্তমান আর্থিক সঙ্কটের কথা উল্লেখ করে ইমরান বলেন, ২৮ লাখ কোটি টাকা দেনার বোঝার জন্য আগের সরকার দায়ী। দেশটিতে অর্থের অপচয় বন্ধ করবেন জানিয়ে তিনি বলেন,‘আমি সাধারণ জীবনযাপন করবো এবং আপনাদের অর্থ বাঁচাবো’।

অভিজাত পাকিস্তানিদের বিলাসী জীবনযাপনের সমালোচনা করে প্রাসাদোপম প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনের বদলে তিন কক্ষবিশিষ্ট একটি ছোট বাসায় থাকবেন বলে ঘোষণা দেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ৫২৪ জন পরিচালক, ৮০টা গাড়ি, এর মধ্যে ৩৩টা বুলেটপ্রুফ গাড়ি। এসব প্রসঙ্গ তুলে ইমরান বলেন, আমি দু’জন সাহায্যকারী রাখব আর দু’টো বুলেটপ্রুফ গাড়ি থাকবে। বাকি গাড়িগুলো নিলাম করে প্রাপ্ত টাকা সরকারি কোষাগারে দিয়ে দেব।

ইমরান খান ধনীদের কর দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, ঋণের চাপ কমাতে দ্রুতই দেশজুড়ে কৃচ্ছ্বতা অভিযান শুরু করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের বুলেটপ্রুফ গাড়িবহরের বেশিরভাগ গাড়ি বিক্রি করে দিয়ে নিজেই এ কৃচ্ছ্বতা অভিযান শুরু করবেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সংকট নিরসনে নীতিগত পরিকল্পনা কী হবে, সে বিষয়ে কোনো আলোকপাত না করলেও কৃচ্ছ্বতা অভিযান পরিচালনায় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নর ইশরাত হুসেনের নেতৃত্বে একটি টাস্কফোর্স গঠন করার কথা বলেছেন তিনি।

প্রায় ২১ কোটি জনসংখ্যার মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশটির নতুন এই প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ঋণ নিয়ে জীবনযাপন ও অন্য দেশের কাছ থেকে সহায়তা নিয়ে চলার বাজে অভ্যাস করেছি আমরা। কিন্তু কোনো দেশ এভাবে উন্নতি করতে পারে না। আমাদের অবশ্যই নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে।’

প্রবাসী পাকিস্তানিদের নিজ দেশে বিনিয়োগ ও ধনীদের নিয়ম মেনে কর দেওয়ারও আহ্বান জানান ইমরান। প্রবাসীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘কর দেওয়া আপনাদের দায়িত্ব। মনে করুন এটি জিহাদ, আপনার দেওয়া কর দেশের উন্নতিতে ব্যয় হবে।’

নবজাতক ও মাতৃমৃত্যুর হার কমানোর প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন পিটিআইপ্রধান। পাশাপাশি স্কুলের বাইরে থাকা সোয়া দুই কোটিরও বেশি শিশুকে সাহায্য করার বিষয়েও কথা বলেন তিনি।

সৌদি আরবের মদিনায় হযরত মোহাম্মদ (সা.) যে আদর্শ রাষ্ট্রের কথা বলেছিলেন, পাকিস্তানকে সেই আদলে একটি কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চান উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আল্লাহ যাদের পর্যাপ্ত দেননি আমি তাদের পেছনে ব্যয় করতে চাই।’

তথ্যসূত্র : জিও টিভি, রয়টার্স, ডন



রাইজিংবিডি/২০ আগস্ট ২০১৮/এনএ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়