ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে বাধা নেই : অর্থমন্ত্রী

বিশেষ প্রতিবেদক : মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে ব্যবসায়ীদের আর কোনো আপত্তি নেই বলে দাবি করেছেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন নিয়ে ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কিছুটা ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিল; সেটি পুরোপুরি কেটে গেছে। আর কোনো বাধা নেই। আসছে বাজেটে কোনো পণ্যে ভ্যাটের হার বাড়বে না, বরং কমবে।

মঙ্গলবার শেরেবাংলা নগরে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভা কক্ষে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (এফবিসিসিআই) সঙ্গে ভ্যাট আইন নিয়ে এক বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূইয়া, এফবিসিসিআইর নবনির্বাচিত সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম, বিজিএমইএর প্রাক্তন সভাপতি সিদ্দিকুর রহমানসহ ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দ এবং এনবিআরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

আগামী পয়লা জুলাই থেকে বাস্তবায়ন হতে যাওয়া ভ্যাট আইন নিয়ে সরকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোনো আলোচনা করছে না বলে অভিযোগ করে আসছেন ব্যবসায়ীরা। একই সঙ্গে কোন পণ্যে কত শতাংশ ভ্যাট বসবে তা নিয়েও অস্পষ্টতা রয়েছে বলে গত কয়েকদিন ধরে বলে আসছেন ব্যবসায়ী প্রতিনিধিরা। বিষয়টি সুরাহা করতে অর্থমন্ত্রী ও এনবিআর চেয়ারম্যান বরাবর চিঠিও দেওয়া হয়েছিল ব্যবসায়ীদের তরফ থেকে। এ অবস্থায় আজ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল।

বৈঠক শেষে অর্থমন্ত্রী বলেন, আইনগত কারণে ভ্যাট আইনের সব তথ্য এখন প্রকাশ সম্ভব নয়। তবে আইনটি ব্যবসায়ীদের জন্য ক্ষতিকর হবে না, বরং ব্যবসায়ীবান্ধব আইন হবে। বিষয়টি বোঝানোর পর ব্যবসায়ীরা আশ্বস্ত হয়েছেন। এর ফলে এনবিআরের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের আর কোনো দূরত্ব নেই।

মন্ত্রী বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দু-একদিনের কাজ নয়। এটি একটি চলমান প্রক্রিয়া অর্থাৎ এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিবর্তনযোগ্য। ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের পরও যদি কোথাও কোনো সীমাবদ্ধতা দেখা দেয় তাহলে তা জনবান্ধব ও ব্যবসাবান্ধব করতে পরিবর্তন করে সময়োপযোগী করা হবে। ভ্যাট আইন স্বচ্ছতার সঙ্গে ঝামেলাহীনভাবে আগামী পয়লা জুলাই থেকেই বাস্তবায়ন  হবে। এই বিষয়ে ব্যবসায়ীরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবে বলে আশ্বস্ত করেছেন।

ভ্যাট আইন প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী বলেন, কোনো পণ্যে ভ্যাট বাড়বে না বরং কমবে। তবে ভ্যাটের আওতা বাড়বে। সবকিছু জনবান্ধব আর দেশের অগ্রগতির লক্ষ্যে সুন্দরভাবে করা হবে। ভ্যাট দিতে কেউ কষ্ট পাবে না, সবকিছুই করা হবে উইন উইন অবস্থানে। কোন পণ্যে কী হারে ভ্যাট বসবে ব্যবসায়ীরা তা আমাদের কাছে জানতে চেয়েছেন। আমরা তাদেরকে বলেছি, বিদ্যমান যেসব আইন আছে, তাতে বাজেট ঘোষণার আগ পর্যন্ত কোন পণ্যে কত শতাংশ হারে ভ্যাট বসবে, সে তথ্য প্রকাশের কোনো নিয়ম নেই। বাজেট ঘোষণার আগে এসব তথ্য প্রকাশ করা যায় না।

এনবিআর চেয়ারম্যান মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া বলেন, ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে কোনো সমস্যা থাকলে তা পরবর্তীতে সংশোধন ও পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভ্যাট আইন বাস্তবায়নে সকলের সহযোগিতা আমাদের কাম্য। ভ্যাট আইন সংস্কারে এফবিসিসিআই ও এনবিআরের যৌথ উদ্যোগে একটি ওয়ার্কিং গ্রুপ করা হবে। যারা ভ্যাট আইন সংস্কারে ভবিষ্যতে কাজ করবে।

বৈঠকে এফবিসিসিআইর সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন অর্থমন্ত্রীর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে বলেন, দেশটা আমাদের সবার। দেশের উন্নয়নে আমরা অর্থমন্ত্রীর পাশে আছি। উনি আমাদের বলেছেন, কোনো পণ্যে ট্যাক্স বৃদ্ধি পাবে না। তবে ট্যাক্সের আওতা আরো বাড়বে। ভ্যাটের কারণে পণ্যের দাম বাড়ুক, এটা অর্থমন্ত্রী চান না।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মে ২০১৯/হাসনাত/রফিক