ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

ফরিদপুরে শীতের আবহ, কদর বেড়েছে লেপ তোষকের

মো. মনিরুল ইসলাম টিটো || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩৯, ৭ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ফরিদপুরে শীতের আবহ, কদর বেড়েছে লেপ তোষকের

ফরিদপুর প্রতিনিধি : ফরিদপুর জেলায় দু’সপ্তাহ ধরেই নেমে এসেছে শীত। কুয়াশা পড়তে শুরু করেছে। ভোরবেলায় কুয়াশায় ঢেকে যাচ্ছে সবুজ মাঠ ও সড়ক।

সামনেই পুরো শীত মৌসুম। তাই পদ্মা ও মধুমতির চরাঞ্চলসহ গ্রামাঞ্চলের মানুষ আগে ভাগেই লেপ-তোষক বানাতে শুরু করেছে।

আবার ফরিদপুর অঞ্চলের রীতি অনুযায়ী নতুন মেয়ে-জামাই এর বাড়িতে বালিশ, লেপ, তোষক দেওয়ার ঐতিহ্য হিসেবেও অনেকে তৈরি করছেন লেপ তোষক।

শীতের আগমনীবার্তার সাথে সাথেই কদর বেড়েছে লেপ-তোষকের। সেই সাথে ধুনারিদের তুলা ছাঁটাই ও লেপ তোষক তৈরির কাজে নিয়োজিতদের কর্মচাঞ্চল্য বেড়েছে।

ফরিদপুরের বিভিন্ন বাজারেই দেখা গেছে, লেপ-তোষক কারিগরদের এখন দম ফেলার সময় নেই। বিরামহীনভাবে কাজ করছেন তারা। কেউ কেউ পুরনো লেপ ভেঙে নতুন করে বানিয়ে নিচ্ছেন। আবার কেউ নতুন তুলা দিয়ে তৈরি করে নিচ্ছেন লেপ-তোষক ও বালিশ।

ফরিদপুর শহরের চকবাজারের লেপ তোষকের কারিগর মো. মালেক মিয়া, মো. হাফিজ মাতুব্বর, মো. রহমান শেখ জানান, তারা বছরের ছয় মাস অন্যান্য কাজ করেন। আর শীতের সময়ে বিভিন্ন লেপ-তোষকের দোকানে গিয়ে তারা প্রতিদিন ছয় শ থেকে সাত শ টাকায় আবার কেউ কেউ লেপ প্রতি দুই শ থেকে তিন শ টাকা হিসেবে লেপ-তোষক তৈরি করে থাকেন।

শহরের জনতা ব্যাংক মোড়ের লেপ-তোষকের দোকান মালিক জাকির হোসেন জানান, শীত এখনো জেঁকে না বসলেও অনেকে আগে ভাগেই লেপ ও তোষক বানাতে আসছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর ক্রেতার সংখ্যা বেশি। সারা বছরের চেয়ে শীতের সময়ে বেচাকেনা একটু বেশিই হয়।

তিনি জানালেন, ক্রেতাদের কথা বিবেচনায় কাজের গুণগতমান বজায় রেখে অর্ডারি কাজের পাশাপাশি রেডিমেড জিনিসও তৈরি করা হচ্ছে।

আলীপুর থেকে লেপ তৈরি করতে আশা কবির মোল্লা জানান, এখনো শীতের দেখা না মিললেও আগেভাগেই শীতের জন্য একটি লেপ বানিয়ে নিচ্ছি। আর চকবাজার আসা জান্নাতুল ফেরদৌস নামের এক গৃহিনী জানান, কিছুদিন আগে তার মেয়ের বিয়ে হয়েছে। তাই মেয়ের জন্য লেপ, তোষক বানাতে এসেছেন।

এদিকে শহর ও গ্রামে লেপ-তোষকের ফেরিওয়ালার হাঁক-ডাক বেড়েছে। এ ডাক মৌসুমী ফেরিওয়ালাদের, যারা শীত এলে রিকশা ভ্যানে লেপ-তোষক বিক্রিতে নেমে পড়েন। মহাজনদের কাছ থেকে কমিশনে কিনে গ্রামে গ্রামে ঘুরে বাড়ি বাড়ি আর শহরের পাড়ায় মহল্লায় বিক্রি করে বেড়ান তারা। এসব ফেরিওয়ালারা নগদ টাকা ছাড়াও কিস্তিতেও লেপ-তোষক বিক্রি করে থাকেন। শীত মৌসুম শেষ হওয়ার আগেই কিস্তির সে টাকা পরিশোধ করেন ক্রেতারা।

শহরের লক্ষিপুর এলাকায় লেপ বিক্রি করতে আসা এক ফেরিওয়ালা বলেন, ‘সব মিলিয়ে লেপ বানাতে কাপড়, গার্মেন্সের তুলা, মজুরি মিলে হাজার থেকে ১২শ টাকা খরচ পড়ছে, আমরা এটা বিক্রয় করছি ১৫শ থেকে ১৭শ টাকায়’।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, এবার লেপ-তোষক তৈরির মূল উপাদান কার্পাস তুলা ১২০-১৪০ টাকা, বোমা তুলা ১০০-১১০ টাকা, চাদর তুলা ৮০-৯০ টাকা এবং গার্মেন্টস তুলা ২৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

ফরিদপুর আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র ওয়েদার পর্যবেক্ষক সুশিল কুমার জানান, ফরিদপুর অঞ্চলে শীত আসা শুরু হয়েছে বেশ ক’দিন হলো। তবে আকাশে মেঘলা থাকায় এখন কিছুটা কম, মেঘ কেটে গেলে শীতের আগমন বেশি ঘটবে । তিনি জানান, এ বছর বর্ষা কম হওয়ায় মাটির আদ্রতা কমে গেছে, তাপ ধারণ ক্ষমতাও কম। এ কারণে শীতের বার্তা আগে থেকে অনুভব করা যাচ্ছে।



রাইজিংবিডি/ ফরিদপুর/৭ নভেম্বর ২০১৮/মো. মনিরুল ইসলাম টিটো/টিপু

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়