ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

বিয়ে পাগল মনজুর অবশেষে শ্রীঘরে

অলোক সাহা || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৯, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বিয়ে পাগল মনজুর অবশেষে শ্রীঘরে

মনজুর আলম

ঝালকাঠি প্রতিনিধি : ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলায় নববধূকে তুলে নিতে এসে বিয়ে পাগল বরসহ তিনজনকে জেল হাজতে যেতে হয়েছে।

এরা হলেন- বর মনজুর আলম (২৪), তার বাবা সোবাহান হাওলাদার (৫২) ও ঘটক হানিফ হাওলাদার (৪০)। বৃহস্পতিবার দুপুরে এদের আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

গ্রেপ্তার মনজুর আলম ও সোবাহান হাওলাদারের বাড়ি ঝালকাঠির সদর উপজেলার ধানসিড়ি ইউনিয়নের বেরপাশা গ্রামে। হানিফ হাওলাদারের বাড়ি রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি গ্রামে। মনজুর আলম বরিশাল জজ আদালতের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী বলে জানা গেছে।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছে, গত সোমবার মনজুর আলমের সঙ্গে রাজাপুর উপজেলার বলাইবাড়ি এলাকার মৃত সোবাহান তালুকদারে মেয়ে সাথী আক্তারের বিয়ে হয়। বুধবার দুপুরে অর্ধশত বরযাত্রীসহ নববধূকে তুলে নিতে আসেন মনজুর আলম ও তার বাবা সোবাহান হাওলাদার। এ সময় স্থানীয়দের সহযোগিতায় নববধূ সাথী আক্তারের পরিবার জানতে পারে মনজুর এর আগে এক ডজনেরও বেশি বিয়ে করেছেন।

প্রত্যেক বউয়ের পরিবার থেকে যৌতুক নিয়ে তাদের আর খোঁজখবর রাখছেন না তিনি। পরে স্থানীয়রা বর মনজুর আলম, তার বাবা সোবাহান হাওলাদার ও ঘটক হানিফকে আটক করে পুলিশে সোর্পদ করে। এ সময় বরযাত্রীরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে নববধূ সাথী আক্তারের ভাই আল-আমিন বাদী হয়ে মনজুর আলম, তার বাবা সোবাহান হাওলাদার ও ঘটক হানিফের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনে রাজাপুর থানায় মামলা দায়ের করেন। এ মামলায়  গ্রেপ্তার দেখিয়ে মনজুর আলম, তার বাবা সোবাহান হাওলাদার ও ঘটক হানিফকে বৃহস্পতিবার দুপুরে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।

মনজুর আলমের একাধিক স্ত্রীর মধ্যে রাজাপুর শহরে বসবাস করা পারভিন বেগম (১৯) মনজুরকে আটক করা হয়েছে- এমন খবর শুনে থানায় আসেন। তিনি জানান, গত দেড় বছর আগে মনজুর আলমের সঙ্গে এক লাখ টাকা দেনমোহরে তার বিয়ে হয়েছে। বিয়ের পর থেকে মনজুর আলম তার কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করতেন। তার বাবা গরিব হওয়ায় টাকা দিতে পারেননি। সেজন্য মনজুর আলম তাকে প্রায়ই মারধর করতেন। সবশেষ গত আট দিন আগে টাকা দিতে না পারায় মনজুর মারধর করে চলে যান। 

কনের ভাই আল আমিন জানান, মঠবাড়ী ইউনিয়ন কাজী অফিসে এক লাখ টাকা দেন মোহরে এ বিয়ে হয়েছে। ঘটক মো. হানিফ বর মনজুর আলমের অপকর্মের তথ্য গোপন করে বিয়ের আয়োজন করেন।

ধানসিড়ি ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য নূর হোসেন বলেন, ‘মনজুরের বিষয়ে আমার কাছে বিভিন্ন অভিযোগ এসেছে। তিনি বিভিন্ন এলাকায় বিয়ে করে শ্বশুরবাড়ি থেকে যৌতুক নিয়ে বউয়ের আর খবর নেন না। আমি এমন ৫-৬টি ঘটনা সম্পর্কে অবগত। কিন্তু এখন শুনছি- তিনি এর আগে ডজনখানেক বিয়ে করেছেন।’

এ বিষয়ে রাজাপুর থানার ওসি শেখ মুনীর উল গিয়াস বলেন, কনে পক্ষ থেকে লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মনজুর আলম, তার বাবা সোবাহান হাওলাদার ও ঘটক হানিফকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।  


রাইজিংবিডি/ঝালকাঠি/২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/অলোক সাহা/বকুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়