ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ২৫ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১২ ১৪৩১

ওয়াশিকুর হত্যা : দুই বছরেও বিচার শেষ হয়নি

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৫২, ৩০ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ওয়াশিকুর হত্যা : দুই বছরেও বিচার শেষ হয়নি

মামুন খান : আলোচিত ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবু হত্যার বিচার দুই বছরেও শেষ হয়নি।

২০১৫ সালের এই দিনে রাজধানীতে প্রকাশ্যে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন ওয়াশিকুর রহমান বাবু। ওই ঘটনায় দায়ের করা মামলাটি ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ এসএম জিয়াউর রহমানের আদালতে বিচারাধীন। প্রায় এক বছর আগে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিমের পাঁচ সদস্যের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু হলেও এখন পর্যন্ত মামলার বাদী নিহতের ভগ্নিপতি মো. মনির হোসেন আদালতে সাক্ষি দিতে আসেননি। এমনকি তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। এতে চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রপক্ষ।

এদিকে সরাসরি খুনে অংশ নেওয়া একজনসহ দুই আসামিকে এখন পর্যন্ত গ্রেপ্তার করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। গত ১৬ মার্চ এ মামলায় সর্বশেষ ১৬ নম্বর সাক্ষি হিসেবে মোশাররফ হোসেন সাক্ষ্য দেন। মামলাটিতে আগামী ১৬ এপ্রিল পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য রয়েছে।

মামলার সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর সালাউদ্দিন হাওলাদার বলেন, মামলাটিতে চার্জ গঠন করে আসামিদের বিচার শুরু হয়েছে। তবে মামলা করে বাদী উধাও হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। মামলার বাদী অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষি। তাকে অবশ্যই সাক্ষ্য দিতে হবে। তা না হলে মামলার মেরিট কমে যাবে।

তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যেই বাদীর গ্রামের ঠিকানায় ও ঢাকার ঠিকানায় জামিন অযোগ্য গ্রেপ্তারি পরোয়ানা পাঠানো হয়েছে। কিন্তু তাকে খুঁজে পাচ্ছে না পুলিশ। তবে তিনি অবশ্যই দেশে আছেন। এভাবে গা ঢাকা দেওয়ায় রাষ্ট্রপক্ষ খুবই হতাশ। তবে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা হয়েছে। চার্জশিটভুক্ত ৪০ সাক্ষির মধ্যে ১৬ জনের সাক্ষ্য শেষ হয়েছে। এ ছাড়া মামলার অপর দুই পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তার সংক্রান্ত কোনো খবরও আদালতকে দিতে পারেনি পুলিশ।

আদালত সূত্র জানায়, মতিঝিলের ফারইস্ট অ্যাভিয়েশন নামে একটি ট্রাভেল এজেন্সিতে ট্রেইনি অফিসার হিসেবে কর্মরত ওয়াশিকুর রহমান বাবু ২০১৫ সালের ৩০ মার্চ রাজধানীর তেজগাঁও শিল্পাঞ্চলের ৪/২ দক্ষিণ বেগুনবাড়ির সামনে খুন হন। বাবা টিপু সুলতানের সঙ্গে তিনি বেগুনবাড়ির ৪/৩-এ ভবনের দ্বিতীয় তলায় একটি কক্ষে সাবলেট থাকতেন। তাদের গ্রামের বাড়ি লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপেজলার উত্তর হাজীপুরে। বাবুকে হত্যার পর পালানোর সময় হিজড়া ও এলাকাবাসী মিলে আরিফুল ইসলাম, জিকরুল্লাহ ওরফে হাসানকে আটক করে। এ ঘটনায় ওয়াশিকুরের ভগ্নিপতি মনির হোসেন মাসুদ বাদী হয়ে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় হত্যা মামলা করেন।

পরবর্তী সময়ে এ মামলায় সাইফুল নামে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। খুনের পরদিন নিহতের ভগ্নিপতি মনির হোসেন বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানায় একটি মামলা করেন। পরে মামলার তদন্তভার ডিবিকে দেওয়া  হয়। ২০১৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর ডিবি পরিদর্শক শাহ মো. মশিউর রহমান পাঁচজনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০১৬ সালের ২০ জুলাই আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলায় চার্জ গঠন করেন আদালত। আসামিরা হলেন- জিকরুল্লাহ, আরিফুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম, জুনায়েদ ওরফে তাহের ও হাসিব আবদুল্লাহ। এদের মধ্যে জিকরুল্লাহ, আরিফুল ও সাইফুল কারাগারে আছে। অপর দুই আসামি পলাতক। আসামিদের মধ্যে সাইফুল আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।


রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩০ মার্চ ২০১৭/মামুন খান/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়