চোরাচালান রোধে আসছে ‘টার্গেটিং স্মাগলড সিগারেট’
এম এ রহমান : সিগারেট চোরাচালান প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ‘চোরাচালানকৃত সিগারেট প্রতিরোধ সপ্তাহ’ উদযাপনের উদ্যোগ নিয়েছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।
যেখানে ওই প্রতিরোধ সপ্তাহের নাম দেওয়া হয়েছে ‘টার্গেটিং স্মাগলড সিগারেট’। সম্প্রতি এ ধরনের একটি প্রস্তাবনা শুল্ক গোয়েন্দা থেকে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান বরাবর পাঠানো হয়েছে।
এনবিআরে পাঠানো চিঠির সূত্রে জানা যায়, ‘টার্গেটিং স্মাগলড সিগারেট’ নামে চোরাচালানকৃত সিগারেট প্রতিরোধ সপ্তাহ আয়োজনের লক্ষ্যে এই দপ্তর বিশেষ উদ্যোগ গহণ করতে আগ্রহী। বিভিন্ন সূত্র হতে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সিগারেট ইন্ড্রাস্ট্রি থেকে সরকার ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ১৬ হাজার ৩ শত ২৫ কোটি টাকার রাজস্ব আদায় করেছে, যা জাতীয় অভ্যন্তরীণ রাজস্বের প্রায় ১১ শতাংশ। চোরাচালান প্রতিরোধের মাধ্যমে এই ক্ষেত্র থেকে আরো অন্তত ৫০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত আদায় করা সম্ভব বলে এ শিল্পের সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন।
এজন্য চোরাচালানের বিরুদ্ধে সামাজিক সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে সাধারণ জনগণের মধ্যে নকল ও চোরাচালানকৃত সিগারেট সম্পর্কে এবং এর ফলে আইনগত কী কী শাস্তির বিধান আছে সে সম্পর্কে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ জরুরি। একই সঙ্গে অসৎ ব্যবসায়ীদের মনে ভীতি সৃষ্টি করতে হবে। আর এজন্যই এ ধরনের সপ্তাহ আয়োজনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, চোরাচালানকৃত সিগারেট প্রতিরোধ সপ্তাহে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এবং ভ্যাট গোয়েন্দাসহ অভিন্ন মনোভাবাপন্ন অংশীজন একসঙ্গে কাজ করবে। অন্যদিকে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ দ্বারা কোনো চোরাচালানকৃত সিগারেট ধরা পড়লে বা জব্দ করলে বর্তমানে এসআরও এর মাধ্যমে পর্যটন করপোরেশন কর্তৃক নির্ধারিত দামে যেকোনো আগ্রহী সংস্থা বা সংগঠকের কাছে বিক্রয় কিংবা জনসমক্ষে সেগুলো বিনষ্ট করা যেতে পারে। এতে চোরাচালানবিরোধী কার্যক্রম সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করবে। আর এজন্যই সপ্তাহব্যাপী টার্গেটিং স্মাগলড সিগারেট নামে চোরাচালানকৃত সিগারেটের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ সপ্তাহ আয়োজন করতে চাই। এ লক্ষ্যে সদয় সম্মতি ও নির্দেশনা জন্য অনুরোধ করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘দেশে বর্তমানে বিপুল পরিমাণ সিগারেট চোরাচালন হচ্ছে। এর ফলে সরকার বড় অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে। অন্যদিকে জনস্বাস্থ্যের জন্যও তা হুমকি স্বরূপ। এই সেক্টরে আমরা ২০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করি। কিন্তু আমরা লক্ষ করেছি, সিগারেটে চোরাচালানের কারণে এই সেক্টরের শিল্প উদ্যোক্তরা মার খাচ্ছে। এ কারণেই এ ধরনের উদ্যোগ।’
তিনি আরো বলেন, ‘তা ছাড়া আমরা আরো লক্ষ্য করেছি স্মাগলিংয়ের মাধ্যমে বিদেশ থেকে যে সিগারেটে আসে তা নকল কিংবা মেয়াদ উত্তীর্ণ। এ ধরনের সিগারেট যাতে মার্কেটে প্রবেশ করতে না পারে সেজন্য সেমিনার ও সভার মাধ্যমে জনসেচেতনতা বৃদ্ধি করাই আমাদের উদ্দেশ্য।’
মইনুল খান বলেন, ‘সিগারেট চোরাচালান প্রতিরোধ সপ্তাহ আয়োজনের মাধ্যমে বিভিন্ন সংস্থা ও নাগরিককে সম্পৃক্ত করা হবে। যাতে যে কেউ এই সংশ্লিষ্ট তথ্য থাকলে আমাদের অবহিত করে। ইতিমধ্যে এ বিষয়ে আমরা আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন চেয়েছি। আশা করি খুব শিগগিরই অনুমতি পাওয়া যাবে।’
এদিকে, বিষয়টি বিবচনাধীন রয়েছে বলে জানিয়েছেন অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও এনবিআর চেয়ারম্যান মো. নজিবুর রহমান।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ এপ্রিল ২০১৭/এম এ রহমান/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন