ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সাইদুরসহ তিনজনের সাড়ে ৭ বছর করে কারাদণ্ড

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:৩২, ২৫ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাইদুরসহ তিনজনের সাড়ে ৭ বছর করে কারাদণ্ড

নিজস্ব প্রতিবেদক : নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন জামাআতুল মুজাহিদীন বাংলাদেশের (জেএমবি) শীর্ষ নেতা সাইদুর রহমানসহ তিনজনের সাড়ে ৭ বছর করে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার বিকেলে ঢাকার বিশেষ জজ-৬ এর বিচারক কে এম ইমরুল কায়েশ এ রায় ঘোষণা করেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত অপর দুই আসামি হলেন- আবদুল্লাহিল কাফী ও আয়েশা আক্তার।

রায়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইন-২০০৯ এর ৮ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে প্রত্যেককে ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। জরিমানা অনাদায়ে তাদের আরো এক মাসের করে কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। একই আইনের ৯ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করে তাদের ৭ বছর করে কারাদণ্ড, ৫০ হাজার টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে আরো এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আদালত।

এদিকে ১০ ধারায় তাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনা হলেও রাষ্ট্রপক্ষ তা প্রমাণ করতে না পারায় ওই ধারার অভিযোগ থেকে তিন আসামিকে খালাস দিয়েছেন বিচারক।

রায় ঘোষণার আগে বিচারক পর্যবেক্ষণে বলেন, মাওলানা সাইদুর রহমান ইসলাম সম্পর্কে অভিজ্ঞ হয়েও ইসলামের মনগড়া ব্যাখ্যা ছড়িয়েছেন এবং প্রচার করেছেন। তাগুতিদের বিরুদ্ধে তিনি আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেছেন। জেএমবির শুরুর দিকে যে লিফলেট পাওয়া গেছে গ্রেপ্তারের সময় সেই একই লিফলেট সাইদুর রহমানসহ অপর আসামিদের কাছ থেকে পাওয়া গেছে।

এদিকে সংশ্লিষ্ট আদালতের পিপি কাজী জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, রায়ে বলা হয়েছে, আসামিদের দুই ধারার সাজা পরপর খাটতে হবে। অর্থাৎ তাদের মোট সাত বছর ছয় মাস জেলে কাটাতে হবে।

দণ্ডপ্রাপ্তদের হাজতবাসের সময়ও সাজা খাটা হিসেবে গণ্য হবে। ফলে ঠিক সাত বছর আগে এই দিনে গ্রেপ্তার হওয়া সাইদুর রহমানকে এ মামলায় সাজা খাটতে হবে আর ছয় মাস। আগামী ২৫ নভেম্বর তার সাজার মেয়াদ শেষ হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী শাহনাজ সাথী।

রায় ঘোষণাকালে আসামিদের মধ্যে সাইদুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। অপর আসামিরা জামিন নিয়ে পলাতক আছেন।

রায় ঘোষণার কিছুক্ষণ আগে সাইদুর রহমানকে হুইল চেয়ারে করে আদালতে আনা হয়। রায় শুনে প্রতিক্রিয়ায় সাইদুর রহমান বলেন, আমি কখনোই এর সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলাম না। আমি নির্দোষ। আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সঠিক নয়। এ ধরনের কাজ আমি কখনোই করিনি।

প্রসঙ্গত, মামলাটিতে ২০১০ সালের ৭ আগস্ট ডিবি পুলিশের পরিদর্শক মাহবুবুর রহমান আসামিদের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এরপর মামলাটির বিচার শুরুর জন্য ঢাকার ৬ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে ২০১১ সালের ২ জানুয়ারি পাঠানো হয়। ওই আদালত মামলাটিতে পাঁচজন সাক্ষীর সাক্ষ্যও গ্রহণ করেন। কিন্তু আইন অনুযায়ী মামলাটিতে সরকারের অনুমোদন না থাকায় পরে ওই আদালত মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালতে ফেরত পাঠান। পরে মহানগর দায়রা জজ আদালত ২০১৫ সালের ৮ সেপ্টেম্বর সরকারের অনুমোদন চেয়ে চিঠি পাঠান।

২০১৬ সালের ২৬ আগস্ট মামলাটিতে সরকার অনুমোদন দেয়। গত ৪ জানুয়ারি আদালত নতুন করে অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। ২০১৬ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি সাইদুর রহমানসহ তিন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন আদালত।

উল্লেখ্য, ২০১০ সালের ২৫ মে রাজধানীর দনিয়ার একটি বাড়ি থেকে আসামিদের ২৪ ধরনের জিহাদি বইসহ গ্রেপ্তার করা হয়।

জেএমবির প্রধান শায়খ আব্দুর রহমানের মৃত্যুদণ্ড হওয়ার পর ২০০৬ সালের শেষের দিকে সাইদুর রহমান দলটির প্রধানের দায়িত্ব গ্রহণ করে পুনর্গঠিত করেন। তিনি দেশে সন্ত্রাসী কার্যকলাপ করার জন্য সুরা সদস্য নিয়োগ করে তাদের বিভিন্ন বিভাগের দায়িত্ব দিতেন। তিনি নিজে বিভিন্ন জেলায় সফর করে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে গোপন বৈঠক করতেন বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ মে ২০১৭/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়