ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বন্ড অপব্যবহারে ২৬০৯ টন গার্মেন্টস পণ্য আটক

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৯:০৭, ২৮ মে ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বন্ড অপব্যবহারে ২৬০৯ টন গার্মেন্টস পণ্য আটক

নিজস্ব প্রতিবেদক : বন্ড সুবিধার অপব্যবহারের মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে ২৬০৯ টন গার্মেন্টস পণ্য আটক করেছে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর।

একই সঙ্গে ময়মনসিংহের মেসার্স আইডিয়াল পলিমার এক্সপোর্ট লিমিটেডের বিরুদ্ধে কাস্টমস আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সম্প্রতি অভিযান শেষে এই মামলা দায়ের হয়েছে।

রোববার  শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, প্রতিষ্ঠানটি বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করছে- এ অভিযোগে সম্প্রতি ভালুকার উথুরা বাজার এলাকায় প্রতিষ্ঠানটিতে অভিযান চালানো হয়। পরে প্রতিষ্ঠানটির রপ্তানি সংক্রান্ত দলিলাদি যাচাই-বাছাই করা হয়।

প্রাপ্ত দলিলপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠালগ্ন হতে ২০১৬ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত যে সমস্ত কাঁচামাল সংগ্রহ করেছে তা দিয়ে উৎপাদিত এক্সেসরিজ রপ্তানি না করে স্থানীয় বাজারে বিক্রি করে দিয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি এ সময়ে যে সমস্ত এক্সেসরিজ বিভিন্ন প্রত্যক্ষ রপ্তানিকারকের নিকট রপ্তানির উদ্দেশ্যে ইউপি (ইউটিলাইজেশন পারমিট) গ্রহণ করেছে তার মধ্যে ১৫৯টি ইউপি-তে উল্লিখিত কাঁচামাল/পণ্য/এক্সেসরিজ স্থানীয় একটি মাছ প্রক্রিয়াজাত কারখানায় সরবরাহ করেছে।

১৫৯টি ইউপি পর্যালোচনায় আরো দেখা যায়, এর মধ্যে ১৮টি ইউপি অন্তর্ভূক্ত ৪০টি এলসির মাধ্যমে এক্সেসরিজ সরবরাহ করেছে। এগুলো নিয়মবহির্ভূতভাবে স্থানীয় মুদ্রায় (টাকা) স্থাপিত এলসি-র মাধ্যমে দেখানো হয়েছে। ফলে রপ্তানির জন্য বন্ড লাইসেন্স দিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের সরকারি উদ্দেশ্য ব্যাহত হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটি নিয়মের ব্যত্যয় ঘটিয়ে পণ্য রপ্তানি করে বৈদেশিক মূদ্রার পরিবর্তে বাংলাদেশী মুদ্রায় পণ্য সরবরাহ করায় উক্ত সরবরাহকৃত পণ্য প্রচ্ছন্ন রপ্তানি হিসেবে গণ্য হয়নি।

ধারণা করা হচ্ছে, ভূয়া রপ্তানি দেখিয়ে ব্যক্তিগত মুনাফার জন্য বন্ড প্রতিষ্ঠানটি খোলাবাজারে শুল্কমুক্ত সংশ্লিষ্ট কাঁচামাল বিক্রি করে দিয়েছে।

তিনি আরো জানান, ১৮টি ইউপি এর অন্তর্ভূক্ত ৪০টি এলসির বিপরীতে স্টার্চ গাম ৮৩,১৭৭.৯৪ কেজি, প্যারাফিন ওয়াক্স ১২৭,৭৮৯.২৭ কেজি, প্রিন্টিং ইঙ্ক ২০,১৯৯.৫৭ কেজি, এইচডিপিই/এলএলডিপিই ২০০,৬৬২.৬৫ কেজি, পিপি ৪৪৩,৩৯৩.১৬ কেজি, সিপিপি/বিওপিপি ৫৯,৩৫৭.২৯ কেজি, ক্রাফট পেপার ৪৭,৭০৭.০০ কেজি, মিডিয়াম পেপার ৫২,০৬১.০৬ কেজি এবং ডুপ্লেক্স বোর্ড ১৫৭৫,৩৯২.৫৬ কেজি কাচামাল/এক্সেসরিজ উৎপাদনে ব্যবহার না করে অনিয়ম করা হয়েছে।

এতে প্রমাণিত হয় যে, বন্ডার বিদেশ হতে বন্ড সুবিধার আওতায় বিনা শুল্কে কাঁচামাল আমদানি করে বন্ড লাইসেন্স এর শর্তানুযায়ী রপ্তানি না করে অনিয়ম করেছেন। অনিয়মকৃত কাঁচামালের মোট শুল্কায়নযোগ্য মূল্য ১৬ কোটি টাকা এবং ফাঁকিকৃত শুল্ককরাদির পরিমাণ সাত কোটি টাকা। অনিয়মকৃত কাঁচামালের মোট মূল্য তেইশ কোটি টাকা।

অনিয়মকৃত কাঁচামালের উপর সাত কোটি টাকা আদায়ে কাস্টমস বন্ড কমিশনারেট, ঢাকা বরাবর রাজস্ব ফাঁকির একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ মে ২০১৭/এম এ রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়