ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

মূল্যবোধের অভাবে হত্যাকাণ্ড বাড়ছে

মাকসুদুর রহমান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:১৪, ৫ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
মূল্যবোধের অভাবে হত্যাকাণ্ড বাড়ছে

ফাইল ফটো

মাকসুদুর রহমান : রাজধানীর বাড্ডায় খুন হন বাবা-মেয়ে। স্ত্রীর পরকীয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে পুলিশ জানিয়েছে। একইদিন সম্পত্তি নিয়ে দ্বন্দ্বে কাকরাইলে মা ও ছেলেকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সমাজে চরম বিশৃঙ্খলা ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ে পরিকল্পিত এসব হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হচ্ছে।

রোববার বিকেলে বাড্ডা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কাজী ওয়াজেদ আলী রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘জামিলের স্ত্রী আরজিনা বেগমের মদদেই এ হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। জামিলকে হত্যার পরিকল্পনা থাকলেও নূসরাত হত্যার ঘটনা দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করা হয়। আর আর্থিক কিংবা সম্পত্তির লোভে মনোমালিন্যেই কাকরাইলে মা-ছেলেকে হত্যা করা হয় বলে রমনা থানা পুলিশ জানায়। এর আগে সাভারে দেড় বছরের এক শিশুকে লাথি মেরে হত্যা করেন পাষণ্ড বাবা। আর নরসিংদীতে ১৫ বছরের এক কিশোরীকে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেন তারই নিকট স্বজনেরা। শুধু এগুলোই নয়, আর্থিক বিষয়ে মনোমালিন্য, পারিবারিক  কলহ কিংবা পরকীয়ার ঘটনায় সমাজে অপরাধ ক্রমেই বাড়ছে। শিশু ও নারীরা এর মূল শিকার। আবার কিছুক্ষেত্রে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়ছে নারীরা। বাবা-মায়ের হাতে কিংবা তাদের মদদেও খুন হচ্ছে আদরের সন্তান। সমাজের চরম বিশৃঙ্খলা ও মূল্যবোধের অবক্ষয় হিসেবেই এসব হত্যাকাণ্ড হচ্ছে বলে মনে করেন প্রাক্তন অধ্যাপক ড. মনিরুল ইসলাম খান।

শনিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, ‘সুশাসন, আইনের শাসন, সমাজের কাঠামোগত পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে এ অবস্থার উত্তরণ ঘটাতে হবে।’ হত্যাকাণ্ডের অনেকগুলো কারণ আছে। মনস্তাত্ত্বিক, অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সংস্কৃতির বিরূপ প্রভাবও এর পেছনে কাজ করছে বলে অনেকেই মনে করেন।

একই অনুষ্ঠানে পুলিশের প্রাক্তন মহাপরিদর্শক নূরুল হুদা বলেন, ‘দারিদ্র্যতা বেড়ে যাওয়ায় সমাজে ক্রমাগত অপরাধ বাড়ছে। পারিবারিক বিচ্ছিন্নতা ও সংস্কৃতির বিরূপ প্রভাবও এজন্য অনেকাংশে দায়ী। কিছু অপরাধ পরিকল্পিত এবং কিছু ঘটনা আকস্মিক ঘটছে। আকস্মিক ঘটনাগুলো ব্যক্তির আত্মনিয়ন্ত্রণের অভাব, আর পরিকল্পিত হত্যার পেছনে উদ্দেশ্য থাকছে। এসব অপরাধের প্রতি কম নজরদারি এবং বিচারহীনতার কারণেও অপরাধের মাত্রা বাড়ছে।’

অন্যদিকে এক হিসেবে দেখা গেছে, গত অক্টোবর মাসে দেশে ধর্ষণের শিকার হয়েছে ৭৪ নারী ও শিশু। ১৭ নারী গণধর্ষণের শিকার হন ও ২ জনকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। এ সময় হত্যা করা হয় ৩০ শিশুকে। এদের মধ্যে মা-বাবার হাতে নিহত হয় পাঁচজন। আর পারিবারিক কলহে নিহত হন ৪২ জন, যার মধ্যে ১২ জন পুরুষ ও ৩০ নারী। স্বামীর হাতে নিহত হন ২৭ নারী।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ নভেম্বর ২০১৭/মাকসুদ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়