ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

স্বীকৃতিতে রসগোল্লা পশ্চিমবঙ্গের

শাহেদ হোসেন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:৩৪, ১৪ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
স্বীকৃতিতে রসগোল্লা পশ্চিমবঙ্গের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : রসগোল্লা তুমি কার? এ নিয়ে দীর্ঘ দিন ধরে লড়াই চলছিল ভারতের পশ্চিমবঙ্গ আর ওড়িশা রাজ্যের মধ্যে। তবে শেষ পর্যন্ত ওড়িশাকে হারিয়ে রসগোল্লার ভৌগলিক নির্দেশ পণ্যের (জিআই)রেজিস্ট্রেশন আদায় করে নিল পশ্চিমবঙ্গ। জিআই জানিয়ে দিল রসগোল্লা পশ্চিমবঙ্গের নিজস্ব সৃষ্টি, তা কোনোভাবেই ওড়িশার নয়। রসগোল্লার উপকরণ বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে জিআই।

ওড়িশা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, রথযাত্রা শেষে সাত দিন মাসির বাড়ি কাটিয়ে মন্দিরে ফেরার সময়ে রসগোল্লাই জগন্নাথদেবের ‘পাসওয়ার্ড’। স্ত্রী লক্ষ্মীর মান-ভঞ্জন করে মন্দিরে ঢুকতে হয় তাকে। হাঁড়ি-ভরা রসগোল্লা দিয়েই বৌয়ের মন গলান তিনি। রীতি মেনে এখনও মন্দিরের সেবায়েতদের একাংশ লক্ষ্মীর হয়ে ঝগড়া করেন। কেন স্ত্রীকে ফেলে ঘুরতে বেরিয়েছিলেন জগন্নাথ! রীতিমাফিক এই তর্কে হার হয় জগন্নাথের প্রতিনিধিরই।

মন্দিরে ঢুকতে না-পেরে জগন্নাথ বাইরে দাঁড়িয়ে আছেন বলে একটা সময়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেন না মুখ্য দয়িতাপতি। পরেরবার এমন ভুল আর করবেন না, বলে স্বামীর তরফে আশ্বাস পেয়ে তবে মন গলে লক্ষ্মী ঠাকরুণের। মন্দিরের রত্নভাণ্ডারের কাছে লক্ষ্মী-নারায়ণের পুষ্পাঞ্জলি পুজোর পরেই রসগোল্লা-ভোগ স্ত্রীকে অর্পণ করেন জগন্নাথ। পুরী মন্দিরের এই ঐতিহ্যকে হাতিয়ার করেই ওড়িশার দাবি, রসগোল্লা আসলে উৎকলজাত। আর তাই জগন্নাথদেবের মন্দিরে প্রত্যাবর্তন উপলক্ষে খাজা-গজার শ্রীক্ষেত্র এখনও একদিনের জন্য রসগোল্লা-নগরী হয়ে ওঠে। দোকানে দোকানে রসগোল্লা-উৎসবের ধুম পড়ে।

স্বাভাবিকভাবেই ওড়িশার এই দাবিতে আঁতে ঘা লাগে পশ্চিমবঙ্গের রসগোল্লার ‘কলম্বাস’ বলে খ্যাত নবীন দাশের বংশধর তথা ‘কে সি দাশ’-এর কর্তাদের। দরবার করা হয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে। তাদের হিসেব মতো, ১৮৬৮ সালে বাগবাজারের দোকানেই ধবধবে স্পঞ্জ রসগোল্লার উদ্ভাবন ঘটান ‘নবীন ময়রা’। তাদের অভিযোগ ছিল, জগন্নাথদেবকে সামনে রেখে রসগোল্লা-গৌরব ছিনিয়ে নিতে চাইছে ওড়িশা।

এর পরই শুরু দড়ি টানাটানি। জিআই কর্তৃপক্ষের কাছে রাজ্য সব যুক্তি পেশ করে। তবে কোনোদিন জিআইয়ের কাছে এ বিষয়ে আবেদন জানায়নি ওড়িশা। অবশেষে জয় পেল পশ্চিমবঙ্গ। জিতলেন নবীন ময়রারাই। মঙ্গলবার জিআইয়ের স্বীকৃতির ফলে আর কোনও রাজ্য রসগোল্লা তাদের বলে দাবি করতে পারবে না।

স্বীকৃতির পরই টুইট করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। লন্ডন থেকে মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ‘আমরা আনন্দিত, গর্বিত।’

সূত্র : আনন্দবাজার



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ নভেম্বর ২০১৭/শাহেদ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়