ঢাকা     বুধবার   ২৪ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১১ ১৪৩১

তারেক রহমানসহ চারজনের বিচার শুরু

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৮:১৭, ২০ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
তারেক রহমানসহ চারজনের বিচার শুরু

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, একুশে টিভির প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুস সালামসহ চারজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। অভিযোগ গঠনের ফলে আসামিদের বিরুদ্ধে এ মামলায় আনুষ্ঠানিক বিচার শুরু হয়েছে।

সোমবার ঢাকা মহানগর দায়রা জজ কামরুল হোসেন মোল্লা মামলার অভিযোগ গঠন করেন। একইসঙ্গে বিচারক আগামী ১৫ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের তারিখ ধার্য করেন।

বিচার শুরু হওয়া অপর আসামিরা হলেন- ইটিভির তৎকালীন সাংবাদিক মাহাথির ফারুকী ও  কনক সারওয়ার।

সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল বলেন, ‘রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে তারেকসহ চারজনের বিরুদ্ধে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। তাদের মধ্যে আবদুস সালাম ছাড়া বাকি তিনজন পলাতক। গত ২৩ অক্টোবর তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।’ অভিযোগ গঠনের শুনানির সময় সালাম আদালতে হাজির ছিলেন বলে জানান তিনি।

প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালের ৮ জানুয়ারি তারেক রহমান এবং আবদুস সালামের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রেহের এই মামলাটি দায়ের করেন তেজগাঁও থানার এসআই বোরহানউদ্দিন। ওই মামলায় গত ১১ জানুয়ারি আব্দুস সালামের পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ঢাকা সিএমএম আদালত। ওই রিমান্ড শেষে ১৯ জানুয়ারি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এরপর মামলাটি তদন্ত করে তারেক রহমানসহ চারজনের বিরুদ্ধে গত বছরের ৬ সেপ্টেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর ইমদাদুল হক।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, ২০১৫ সালের ৫ জানুয়ারি বাংলাদেশ সময় দিবাগত রাত ১টা ২৮ মিনিটে (যুক্তরাজ্য সময় ৪/১/২০১৫ ইং সন্ধ্যা ৭ টা ২৮ মিনিটে) যুক্তরাজ্য বিএনপি আয়োজিত ‘৫ জানুয়ারি গণতন্ত্র হত্যা দিবস’ ব্যানারে এক প্রতিবাদ সভায় বিভিন্ন বিচারাধীন মামলার পলাতক আসামি বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান এক সুদীর্ঘ (প্রায় ৫০ মিনিট) বক্তব্য প্রদান করেন। তার এই দীর্ঘ বক্তব্য একুশে টেলিভিশন সরাসরি সম্প্রচার করে। উক্ত বক্তব্যে ‘বাংলাদেশের প্রধান বিচারপতি একজন রাজনৈতিক নেতার কবর জিয়ারত করে এবং রাজনৈতিকত বক্তব্য দিয়ে নিরপেক্ষ ও ন্যায়বিচার করতে পারবেন না,’ মর্মে মন্তব্য করেন, যা স্বাধীন বিচার বিভাগের প্রতি অবজ্ঞা প্রদর্শনের শামিল। সেইসঙ্গে রাষ্ট্রের অন্যতম অঙ্গ বিচার বিভাগের প্রতি জনগণের ঘৃণা ও বিদ্বেষ সৃষ্টি করার ইন্ধন যোগান। বিডিআর হেডকোয়ার্টার্স পিলখানায় আওয়ামী লীগের মুখোশপরা লোকেরা ৭৫ জন সেনা অফিসারকে হত্যা করে বলেও তারেক রহমান মিথ্যা বক্তব্যে বলেন। উক্ত হত্যাকাণ্ডের তদন্তের দাবিদার সেনা অফিসারদের চাকরিচ্যুত করা হয় মর্মে বক্তব্য দেন। তার এ ধরনের উসকানিমূলক বক্তব্যের মাধ্যমে সেনাবাহিনীর মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করতঃ সরকারের বিরুদ্ধে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে উস্কে দেওয়ার তথা সেনাবাহিনীর মধ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে। একটি বিশেষ এলাকার পুলিশকে দিয়ে বিএনপির নেতা-কর্মীদের ওপর নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে, বক্তব্যের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মধ্যে অসন্তোষ ও বিভক্তি সৃষ্টি এবং শৃঙ্খলা বাহিনীর চেইন অব কমান্ড ভঙ্গ করতে প্ররোচিত করার মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির প্রয়াস চালান। তারেক রহমান প্রশাসনের লোকদের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করার লক্ষ্যে গণতান্ত্রিকভাবে প্রতিষ্ঠিত সরকারের বিরুদ্ধে ব্যাপক আন্দোলন গড়ে তুলতে বক্তব্যে উল্লেখ করেন। তিনি তার বক্তব্যে ঢাকা শহরকে অন্য জেলা শহর থেকে এবং ঢাকার এক এলাকাকে অন্য এলাকা থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার জন্য তার দলের নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দেন, যার ফলে বিএনপি-জামায়াতসহ ২০ দলীয় ঐক্য জোটের সমর্থকরা গত বছরের ৫ জানুয়ারি দেশের বিভিন্ন স্থানে ধ্বংসাত্মক কার্যক্রমের মাধ্যমে জানমালের ব্যাপক ক্ষতি সাধন করার উসকানি পায় এবং তিনি বাংলাদেশের অখণ্ডতা ও পরোক্ষভাবে সার্বভৌমত্বের প্রতি হুমকি প্রদর্শন করেছেন।

তার ওই সকল বক্তব্য আব্দুস সালাম এবং অন্যান্যরা ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠিত, গণতান্ত্রিক ও আইনানুগ সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, উসকানিমূলক বিভ্রান্তিকর তথ্যাদি একুশে টেলিভিশনের মাধ্যমে প্রচার করে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অপরাধ করেছেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০নভেম্বর ২০১৭/মামুন খান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়