ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

নিজেকে নির্দোষ দাবি খালেদা জিয়ার

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১০:০৬, ২৩ নভেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিজেকে নির্দোষ দাবি খালেদা জিয়ার

নিজস্ব প্রতিবেদক : জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া।

বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার বকশিবাজারে কারা অধিদপ্তরের প্যারেড মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ জজ ড. মো. আকতারুজ্জামানের অস্থায়ী আদালতে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন খালেদা জিয়া।

এদিন জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে অসমাপ্ত বক্তব্য দেওয়ার এবং জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য দিন ধার্য ছিল।

দুই মামলায় হাজিরা দিতে বেলা ১১টা ২৩ মিনিটে আদালতে হাজির হন খালেদা জিয়া। বেলা ১১টা ২৮ মিনিটে আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়।

শুরুতে দুদকের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল খালেদা জিয়ার আত্মপক্ষ শুনানি শুরু করার আবেদন জানান।

অপর দিকে খালেদা জিয়ার আইনজীবী জয়নুল আবেদীন আদালতকে জানান, খালেদা জিয়া আদালতের প্রতি অত্যন্ত শ্রদ্ধাশীল ছিলেন এবং আছেন। তিনি অসুস্থ বোধ করছেন। তারপরও আদালতের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে তিনি এসেছেন। তিনি যতটুকু সম্ভব বলবেন।

এরপর বেলা ১১টা ৩২ মিনিটে জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনের শুনানিতে অসমাপ্ত বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন খালেদা জিয়া। প্রায় ১ ঘণ্টা ৪ মিনিট বক্তব্য দেন খালেদা জিয়া। তবে তার বক্তব্য শেষ হয়নি। পরে তিনি সময় চান।

পরে জয়নুল আবেদীন বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) অসুস্থ। আমাদের ধারণা ছিল না তিনি আজ এত বক্তব্য রাখতে পারবেন। আমরা উভয় মামলায় জামিন স্থায়ী করার আবেদন করেছি। খালেদা জিয়া তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি পালিয়ে যাবেন না। ওয়ান ইলেভেনে যেখানে সেনাবাহিনী তাকে জোর করে বিদেশে পাঠাতে পারেনি, সেখানে এখন তো প্রশ্নই ওঠে না। তাছাড়া তিনি অসুস্থ।

এ সময় দুদকের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, তিনি (খালেদা জিয়া) এর আগেও পাঁচ দিন বক্তব্য দিয়েছেন। আজ ষষ্ঠ দিন। তিনি মামলার বিষয়ে বক্তব্য না দিয়ে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছেন। সময়ের ব্যাপারে আমাদের আপত্তি আছে। তার আরো বক্তব্য থাকলে তিনি লিখিতভাবে দিতে পারেন। আর আমাদের জামিন স্থায়ীর বিষয়েও আপত্তি আছে।

এরপর জয়নুল আবেদীন বলেন, মামলাটি রাজনৈতিক, সেখানে রাজনৈতিক বক্তব্য তো আসবেই। বুঝতে হবে, এই মামলাটা ওয়ান ইলেভেনের সময় দায়ের হয়েছে।

এরপর বিচারক বলেন, আমাদের আরো কাজ আছে। এরপর তিনি খালেদা জিয়ার উদ্দেশে বলেন, আপনি, ২০১৬ সালের ১ ডিসেম্বর চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় আত্মপক্ষ সমর্থনে আংশিক বক্তব্য দিয়েছিলেন।

এরপর বিচারক মামলাটিতে রিকলের সাক্ষীদের খালেদা জিয়ার পক্ষে করা জেরা পড়ে শোনান। এরপর খালেদা জিয়াকে জিজ্ঞেস করেন, আপনি দোষী না নির্দোষ? উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, আমি সম্পূর্ণভাবে নির্দোষ।

বিচারক বলেন, আপনি আগে একদিন মামলাটিতে আত্মপক্ষ শুনানিতে আংশিক বক্তব্য দিয়েছিলেন। আর বক্তব্য দিবেন কি না?

উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, বক্তব্য দেব। এরপর বিচারক জিজ্ঞেস করেন, আপনি কোনো কাগজপত্র দাখিল করবেন কি না? উত্তরে খালেদা জিয়া জানান, প্রয়োজন হলে করবেন।

এরপর বিচারক জামিন স্থায়ীর আবেদন নামঞ্জুর করে আগামী ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত জামিনের মেয়াদ বৃদ্ধি করে ওই দিন দুই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ধার্য করেন। এরপর বেলা ১টা ২০ মিনিটে আদালত থেকে বের হয়ে যান খালেদা জিয়া।

এদিকে খালেদা জিয়ার আদালতে আসাকে কেন্দ্র করে বিএনপির জ্যেষ্ঠ নেতারা আদালতে হাজির হন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, রুহুল করির রিজভী, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, আব্দুল আউয়াল মিন্টু, আমান উল্লাহ আমান, আফরোজা আব্বাস, শহিদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, খায়রুল কবীর খোকন, শায়রুল কবির খান প্রমুখ আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের মধ্যে ছিলেন- ব্যারিস্টার জমির উদ্দিন সরকার, খন্দকার মাহবুব উদ্দিন খোকন, জয়নুল আবেদীন, আব্দুর রেজ্জাক খান, সানাউল্লাহ মিয়া, মাসুদ আহমেদ তালুকদার, মহসিন মিয়া, আমিনুল ইসলাম, জাকির হোসেন ভূঁইয়া, হান্নান ভূঁইয়া, জয়নুল আবেদীন মেজবাহ, হান্নান ভূইয়া, হেলাল উদ্দিন, নুরুজ্জামান তপনসহ শতাধিক আইনজীবী।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৩ নভেম্বর ২০১৭/মামুন খান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়