ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

গ্রেনেড হামলা : প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করে বাবর-পিন্টু

মামুন খান || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৮, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গ্রেনেড হামলা : প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করে বাবর-পিন্টু

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা বাস্তবায়নে প্রশাসনিক সহায়তা নিশ্চিত করেন তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ও উপমন্ত্রী আবদুস সালাম পিন্টু।

সোমবার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় ১৮তম দিনের যুক্তিতর্কে এ তথ্য উপস্থাপন করেন।

রাষ্ট্রপক্ষের ১২ সাক্ষী  মেজর (অব.) আতিকুর রহমান, নাহিদ লায়লা কাকন (জঙ্গি মাজেদ ভাটের স্ত্রী), মোসাদ্দেক বিল্লাহ, আতাহার আলী, লে. কর্নেল (অব.) গোলাম রাব্বানী, পুলিশ সার্জেন্ট মো. সেকান্দার আরী, প্রাক্তন র‌্যাব কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন, আলমগীর কবীর চৌধুরী, উত্তম কুমার বিশ্বাস, ছাব্বির আহমেদ মাসুদ, র‌্যাবের তৎকালীন ডিজি মো. আবদুল আজিজ সরকার, এসআই গোলাম রহমানের জবানবন্দির আলোকে যুক্তিতর্ক পেশ করেন সৈয়দ রেজাউর রহমান। মেজর (অব.) সৈয়দ মুনিরুল ইসলামের জবানবন্দির অলোকে যুক্তি পেশ অসমাপ্ত অবস্থায় মামলার কার্যক্রম মঙ্গলবার পর্যন্ত মুলতবি করেন রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিন।

সাক্ষীদের জবানবন্দীর আলোকে রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ভয়াবহ ওই হামলার আলামত নষ্ট, হতাহতের নির্মম ঘটনা এবং অপরাধীদের বাঁচাতে বিভিন্ন তৎপরতার বিষয়  তুলে ধরেন।

রেজাউর রহমান বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলাসহ সারা দেশে পরিচালিত সব হামলায় গ্রেনেডসহ গোলাবারুদ সরবরাহ করেন বিএনপি নেতা পিন্টুর ভাই মাওলানা তাজউদ্দিন।

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সময়ে র‌্যাবের ডিজি আব্দুল আজিজ সরকারের জবানবন্দির আলোকে রেজাউর রহমান বলেন, জঙ্গি মুফতি হান্নানকে গ্রেপ্তারের পর তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বাবরকে জানানোর পর তিনি (বাবর) অসন্তোষ ও বিরক্ত হন। মুফতি হান্নান টিএফআই সেলে জিজ্ঞাসাবাদে ২১ আগস্ট হামলার যাবতীয় পরিকল্পনা ষড়যন্ত্র এবং সিলেটসহ অন্যান্য গ্রেনেড হামলার বিষয়ে স্বীকার করে বিভিন্ন তথ্য দেন। মুফতি হান্নানের স্বীকারোক্তির বিষয়টি তৎকালীন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করার পরও এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।

রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতে বলেন, স্বাক্ষী আব্দুল আজিজ সরকার তার জবানবন্দিতে বলেন, ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ব্যাপারে যেন তিনি কোনো পদক্ষেপ না নেন।

গত ১১ অক্টোবর মামলাটিতে আসামিপক্ষের সাফাই সাক্ষ্য শেষ হয়। মামলাটিতে বিভিন্ন সময়ে ২০ জন সাফাই সাক্ষ্য দেন।

এর আগে মামলাটিতে গত ১২ জুন জামিনে ও কারাগারে থাকা ৩১ আসামির আত্মপক্ষ শুনানি  হয়। আত্মপক্ষ শুনানিতে ৩১ আসামির সকলেই নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। মামলাটিতে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ ১৮ জন আসামি পলাতক থাকায় তারা আত্মপক্ষ শুনানির সুযোগ পাননি।

মামলাটিতে আসামি খালেদা জিয়ার ভাগ্নে লে. কমান্ডার (অব.) সাইফুল ইসলাম ডিউক, প্রাক্তন আইজিপি মো. আশরাফুল হুদা, শহিদুল হক ও খোদা বক্স চৌধুরী এবং মামলার তিন তদন্ত কর্মকর্তা তৎকালীন বিশেষ পুলিশ সুপার রুহুল আমিন, সিআইডির সিনিয়র এএসপি মুন্সি আতিকুর রহমান, এএসপি আব্দুর রশীদ ও প্রাক্তন ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলাম জামিনে রয়েছেন।

অন্যদিকে প্রাক্তন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, প্রাক্তন উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ জন কারাগারে এবং বিএনপির চেয়ারপারসনের বড় ছেলে তারেক রহমানসহ ১৯ জন পলাতক। এ মামলার আসামি হুজি নেতা মুফতি হান্নান ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মুহাম্মাদ মুজাহিদের অন্য মামলায় মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হয়েছে।

প্রসঙ্গত, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জনসভায় গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদিক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভি রহমানসহ ২৪ জনের নির্মম মৃত্যু হয়। গ্রেনেডের স্প্লিন্টারের আঘাতে আহত হন কয়েক শতাধিক। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে গেলেও শ্রবণশক্তি হারান।




রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ ডিসেম্বর ২০১৭/মামুন খান/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়