প্রশ্ন ফাঁস : ক্যামব্রিজের শিক্ষকসহ ৫ জন রিমান্ডে
নিজস্ব প্রতিবেদক : প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় রাজধানীর উত্তরখানের ক্যামব্রিজ হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকসহ পাঁচজনের একদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার ঢাকা মহানগর হাকিম দেবব্রত বিশ্বাসের আদালত শুনানি শেষে রিমান্ডের আদেশ দেন।
রিমান্ডে যাওয়া আসামিরা হলেন- উত্তরখানের ক্যামব্রিজ হাই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক তানভীর হোসেন, হাসানুর রহমান ওরফে রকি ভাই , মো. সজীব মিয়া, মো. এনামুল হক ও মো. ইব্রাহিম । এদের মধ্যে মো. সজীব মিয়া ক্যামব্রিজ হাই স্কুলের অ্যাকাউন্টিং বিষয়ের শিক্ষক, মো. ইব্রাহিম এবং মো. এনামুল হক সৃজনশীল কোচিং সেন্টারের শিক্ষক।
এর আগে রাজধানীর উত্তরখান থানায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রত্যেকের পাঁচ দিন করে রিমান্ড চান তদন্ত কর্মকর্তা সংশ্লিষ্ট থানার এসআই সাইফুল ইসলাম। প্রশ্ন ফাঁসের উৎস, প্রশ্ন ফাঁসের সাথে আরো কেউ জড়িত কি না এবং জড়িতদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে রিমান্ড মঞ্জুরের আবেদন করেন তদন্ত কর্মকর্তা। একইসঙ্গে তিনি আসামিদের জামিনের বিরোধিতা করেন।
অপরদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ ইয়ার খান, মিজান মোল্লা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন চেয়ে শুনানি করেন। শুনানিতে তারা বলেন, এজাহারে বলা হয়েছে, হাসানুর রহমান অপর আসামিদের প্রশ্ন দিতেন। এখানে নতুন কোনো তথ্য উদ্ধারের যৌক্তিকতা নেই। পুলিশ বলছে, তাদের কাছ থেকে মোবাইল উদ্ধার করা হয়েছে। মোবাইল তো সবার কাছেই থাকে। কিন্তু সেই মোবাইল থেকে কোন কোন প্রশ্ন ফাঁস হয়েছে তদন্ত কর্মকর্তা রিমান্ড আবেদনের তা উল্লেখ করেননি। এখানে রিমান্ডের যৌক্তিকতা নেই। অযৌক্তিক রিমান্ড অগ্রাহ্য করে তাদের জামিন দেওয়া হোক।
উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে প্রত্যেকের একদিন করে রিমান্ডের আদেশ দেন।
প্রসঙ্গত, রাজধানীর উত্তরখান ও গাজীপুর এলাকা থেকে সোমবার ভোরে চার শিক্ষকসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। র্যাবের দাবি, তানভীর ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিয়ে দ্রুত সমাধান করে দিতেন।
এরপর গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়, হাসানুর রহমান ওরফে রকি ভাই একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। তার ফেসবুক আইডি ‘রকি ভাই’। প্রশ্নপত্র সরবরাহের ক্ষেত্রে তার বেশ খ্যাতি আছে। সে ফেসবুক গ্রুপের এডমিন। সে গত চার বছর ধরে প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িত। গ্রেপ্তারকৃত হাসান পরীক্ষা শুরু হওয়ার ২ মাস আগে থেকেই ফেসবুক, হোয়াটস অ্যাপ, ইমোতে বিভিন্ন ইলেক্ট্রনিক মানি ট্রান্সফার নম্বর আইডি দিয়ে প্রচারণা করতে শুরু করেন। প্রচারণায় উল্লেখ থাকে যে, যারা প্রশ্ন পেতে চায় তারা ২০০০ টাকার বিনিময়ে তার গ্রুপের সদস্য হতে পারে।
পরীক্ষার দিন ভোরে হাসানুর রহমান ফাঁস হওয়া প্রশ্ন এসব শিক্ষকদের দিতেন এবং শিক্ষকরা খুব কম সময়ের মধ্যে প্রশ্নপত্র সমাধান করে হাতে লেখা উত্তরপত্র সরবরাহ করতেন।
র্যাব জানায়, ফাঁস হওয়া প্রশ্ন শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার নতুন কৌশল গ্রহণ করেছে আসামিরা। আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে র্যাব জানতে পারে, তারা ব্লাড ডোনেশন-১, ব্লাড ডোনেশন-২ এবং ব্লাড ডোনেশন-৩ নামে গ্রুপ খুলে যাতে কেউ একে প্রশ্ন ফাঁসের গ্রুপ মনে না করতে পারে।
এদিকে গ্রেপ্তারের সময় তাদের কাছ থেকে আটটি মোবাইল সেট ও একটি ট্যাব উদ্ধার করা হয়। ট্যাবে ইলেক্ট্রনিক ডিভাইসের ভেতরে এসএসসি পরীক্ষার বিভিন্ন প্রশ্নপত্র পাওয়া গেছে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮/মামুন খান/সাইফুল
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন