ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

লঞ্চডুবি : ক্ষতিগ্রস্তদের ১৭ কোটি টাকা দিতে রায় প্রকাশ

মেহেদী হাসান ডালিম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫০, ১৪ মার্চ ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
লঞ্চডুবি : ক্ষতিগ্রস্তদের ১৭ কোটি টাকা দিতে রায় প্রকাশ

নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০০৩ সালে চাঁদপুরের মেঘনা  নদীর মোহনায় এমভি নাসরিন-১ লঞ্চডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত ১২১ পরিবারকে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশিত হয়েছে। রায়ে ৬০ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দিতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার বিষয়টি অবগতি করতে ও কার্যকর ব্যবস্থা নিতে বিচারিক আদালতকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রায় প্রদানকারী বিচারপতি সৈয়দ মোহাম্মদ জিয়াউল করিম ও বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেনের স্বাক্ষরের পর ১৩৩ পৃষ্ঠার এ রায় প্রকাশ করা হয়।

বুধবার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান রায় প্রকাশের বিষয়টি রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে।’

এর আগে গত বছরের ৫ জুন চাঁদপুরের মেঘনা নদীর মোহনায় এমভি নাসরিন-১ লঞ্চডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত ১২১ পরিবারকে ১৭ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নিম্ন আদালতের রায় বহাল রাখেন হাইকোর্ট।

ওই দিন আদালতে আবেদনের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট আব্দুল বাসেত মজুমদার ও ইশরাত হাসান। বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্টের (ব্লাস্ট) পক্ষে ছিলেন ড. কামাল হোসেন, কামরুল হক সিদ্দিকী ও সুব্রত চৌধুরী। গত ২৪ মে এ বিষয়ে শুনানি শেষ হয়।

আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, ২০০৩ সালের ৮ জুলাই চাঁদপুরের মেঘনা ও ডাকাতিয়া নদীর মোহনায় এমভি নাসরিন-১ লঞ্চডুবিতে নিহত হন ১১০ জন, নিখোঁজ হন ১৯৯। ওই নৌদুর্ঘটনায় লঞ্চটির মালিক এবং মাস্টারও নিহত হন। এ ঘটনায় করা মামলায় লঞ্চটির নকশা তদারকি দলের (সুপারভাইজার প্যানেল) দুই সদস্যের এক লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছর করে কারাদণ্ড হয়। অভ্যন্তরীণ নৌচলাচল অধ্যাদেশ, ১৯৭৬ (ইনল্যান্ড শিপিং অর্ডিন্যান্স) অনুযায়ী গঠিত নৌ আদালতে এ রায় হয়।

এরপর একই বছর চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক লঞ্চডুবিতে ক্ষতিগ্রস্ত ৪০০ জনের তালিকা প্রকাশ করেন। সেই তালিকা অনুযায়ী নৌদুর্যোগ ট্রাস্টি বোর্ড নিহত ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারকে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ প্রদান করে, যার পরিমাণ ৭০ লাখ টাকার ওপরে।

নিহত ব্যক্তিদের দেওয়া ক্ষতিপূরণ অপ্রতুল দাবি করে ২০০৪ সালে ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে নিহত ১২১ জনের পরিবারের পক্ষে ক্ষতিপূরণ মামলা দায়ের করে বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড অ্যান্ড সার্ভিসেস ট্রাস্ট (ব্লাস্ট)। মামলায় ২৮ কোটি ৯৩ লাখ ৯৪ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়।

মামলায় নৌসচিব, সমুদ্র পরিবহন কর্তৃপক্ষের মহাপরিচালক, বিআইডব্লিউটির চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহনসহ ২১ জনকে বিবাদী করা হয়।

২০১২ সালে সেই মামলা বদলি হয়ে ঢাকার সপ্তম যুগ্ম জেলা জজ আদালতে সাক্ষ্য গ্রহণ হয়।

আইনজীবী ইশরাত হাসান আরো জানান, পরে ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি ঢাকার সপ্তম যুগ্ম জেলা জজ আদালত  রায় দেন। রায়ে ১৭ কোটি ১১ লাখ টাকা ৬০ দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্তদের দিতে বিবাদীদের প্রতি নির্দেশ দেন আদালত।

পরবর্তীকালে বিবাদীরা জেরা ও যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সুযোগ দেওয়ার জন্য আদালতে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন জানান। আদালত পুনরুজ্জীবিত করার আবেদন নামঞ্জুর করেন।

নিম্ন আদালতের এই আদেশের বিরুদ্ধে বিআইডব্লিউটিএসহ বিবাদীরা ২০১৬ সালের ২৪ অক্টোবর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন দায়ের করেন।

ওই আবেদনের শুনানি নিয়ে ২০১৬ সালের ২৫ অক্টোবর হাইকোর্টের একটি বেঞ্চ নিম্ন আদালতের রায় কেন বাতিল ও রদ করা হবে না, এ মর্মে রুল জারি করেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ মার্চ ২০১৮/মেহেদী/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়