ঢাকা     মঙ্গলবার   ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ১০ ১৪৩১

বেসিক ব্যাংকের সিপার ও তার ৩ ভাই-বোনের বিরুদ্ধে মামলা

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৪, ১৩ আগস্ট ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
বেসিক ব্যাংকের সিপার ও তার ৩ ভাই-বোনের বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক : বেসিক ব্যাংকের ঋণ কেলেঙ্কারি অন্যতম কারিগর ও ২৩ মামলার আসামি প্রাক্তন ডিজিএম সিপার আহমেদ ও তার তিন ভাই-বোনের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং আইনে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

সোমবার ‍গুলশান মডেল থানায় দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মুহাম্মদ জয়নাল আবেদীন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।

দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

আসামিরা হলেন- বেসিক ব্যাংক লিমিটেডের গুলশান শাখার প্রাক্তন ডিজিএম ও ব্রাঞ্চ ইনচার্জ সিপার আহমেদ, তার ভাই রকিব হাসান, শাকিল অহমেদ এবং বোন শাকিলা আহমেদ।

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে দুর্নীতি ও অপরাধের মাধ্যমে অর্জিত ৮ কোটি ১৯ লাখ ৩৬ হাজার ৩৯৮ টাকা হস্তান্তর, রূপান্তর ও স্থানান্তরের মাধ্যমে লেয়ারিং করে তা অর্জনের অবৈধ উৎস, অবস্থান, মালিকানা ও নিয়ন্ত্রণ গোপন করেছেন। ক্ষেত্র বিশেষে অপরাধলব্ধ আয় বৈধতা প্রদানের উদ্দেশ্যে মানিলন্ডারিং সংক্রান্ত অপরাধ করেছেন। যা মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪ ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ। মামলায় সময়কাল ধরা হয়েছে ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের জুলাই পর্যন্ত।

২০০৯ সাল থেকে ২০১২ সালের মধ্যে রাষ্ট্রায়ত্ত বেসিক ব্যাংকের গুলশান, দিলকুশা ও শান্তিনগর শাখা থেকে মোট সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা ঋণ অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণের অভিযোগ ওঠার পর অনুসন্ধানে নামে দুদক। ঋণপত্র যাচাই না করে জামানত ছাড়া, জাল দলিলে ভুয়া ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে ঋণ দানসহ নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে বিধিবহির্ভূতভাবে ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ ওঠে ব্যাংকটির তৎকালীন পরিচালনা পর্ষদের বিরুদ্ধে।

প্রায় চার বছর অনুসন্ধান শেষে প্রায় সাড়ে ৩ হাজার কোটি টাকা লোপাটের ঘটনায় ২০১৫ সালের ২১, ২২ ও ২৩ সেপ্টেম্বর তিন দিনে টানা ৫৬টি মামলা করেন দুদকের অনুসন্ধান দলের সদস্যরা। রাজধানীর মতিঝিল, পল্টন ও গুলশান থানায় এসব মামলায় আসামি করা হয় ১৫৬ জনকে। অনিয়মের মাধ্যমে ২ হাজার ৬৫ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয় বলে মামলায় অভিযোগ করা হয়। এর মধ্যে রাজধানীর গুলশান শাখায় ১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা, শান্তিনগর শাখায় ৩৮৭ কোটি টাকা, প্রধান শাখায় প্রায় ২৪৮ কোটি টাকা এবং দিলকুশা শাখায় ১৩০ কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়। অভিযোগের বাকি অংশের অনুসন্ধান দুদকে চলমান।

মামলায় আসামিদের মধ্যে বেসিক ব্যাংকের কর্মকর্তা আছেন ২৬ জন। বাকি ১৩০ আসামি ঋণগ্রহীতা ৫৪ প্রতিষ্ঠানের মালিক ও সার্ভে প্রতিষ্ঠান। ব্যাংকার ও ঋণগ্রহীতাদের অনেকেই একাধিক মামলায় আসামি হয়েছেন। এর মধ্যে ব্যাংকের প্রাক্তন এমডি কাজী ফখরুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে ৪৮টি মামলায়। সম্প্রতি গ্রেপ্তার হওয়া ডিএমডি ফজলুস সোবহান ৪৭টি, কনক কুমার পুরকায়স্থ ২৩টি, মো. সেলিম আটটি, বরখাস্ত হওয়া ডিএমডি এ মোনায়েম খান ৩৫টি মামলার আসামি। তবে কোনো মামলায় ব্যাংকের প্রাক্তন চেয়ারম্যান আব্দুল হাই বাচ্চুসহ পরিচালনা পর্ষদের কাউকে আসামি করা হয়নি। এছাড়া, বেসিক ব্যাংক সংক্রান্ত বিষয়ে আরো পাঁচটি মামলা করে দুদক। এর মধ্যে সিপার আহমেদ ২২টি মামলার আসামি। এছাড়া, অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে আরো এক মামলার আসামি তিনি।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৩ আগস্ট ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়