ঢামেকে টিকিটের অর্ধকোটি টাকা লোপাট : ৬ মামলায় আসামি হবে ৬
নিজস্ব প্রতিবেদক : ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগের টিকিট বিক্রির অর্ধকোটির বেশি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ছয়জনের বিরুদ্ধে পৃথক ছয়টি মামলা করবে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুদকের অনুসন্ধানে ওই ছয়জনের বিরুদ্ধে ৫৯ লাখ ১০ হাজার ৬০১ টাকা আত্মসাৎ করার প্রাথমিক প্রমাণ পাওয়া গেছে।
মঙ্গলবার কমিশন থেকে এসব মামলার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। দুদকের উপ-সহকারী পরিচালক মো. নূরুল ইসলাম বাদী হয়ে শিগগিরই মামলাগুলো দায়ের করবেন।
দুদকের উপ-পরিচালক (জনসংযোগ) প্রনব কুমার ভট্টাচার্য্য রাইজিংবিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।
অভিযুক্তরা হলেন- ঢামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ইনচার্জ (বরখাস্ত) মো. আজিজুল হক ভুইয়া (বর্তমানে প্রশাসনিক বিভাগে সংযুক্ত), প্রাক্তন এমএলএসএস মো. আলমগীর হোসেন (বর্তমানে ক্যাশিয়ার), প্রাক্তন এমএলএসএস মো. আব্দুল বাতেন সরকার (বর্তমানে অফিস সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর), প্রাক্তন অফিস সহকারী কাম মুদ্রাক্ষরিক ও ক্যাশিয়ার মো. শাহজাহান, প্রাক্তন এমএলএসএস মো. আবু হানিফ ভুইয়া এবং জরুরি বিভাগের অফিস সহকারী মো. হারুনর রশিদ।
অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, আজিজুল হক ভুইয়া হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে ৮ লাখ ৩৮ হাজার ৬৬৮টি টিকিট গ্রহণ করে ৮১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৮৫ টাকায় বিক্রি করেন। পরে তিনি এসব টিকিট বিক্রির টাকার মধ্যে ৬৬ লাখ ১৫ হাজার ৯৩০ টাকা সরকারি খাতে জমা করলেও বাকি ১৫ লাখ ৫৯ হাজার ৬৫৫ টাকা জমা করেননি।
অপরদিকে, তিনি জরুরি বিভাগে রোগী ভর্তি করে ৩৮ লাখ ৩৮ হাজার ২২৭ টাকা আদায় করেন। এর মধ্যে সরকারি কোষাগারে জমা দিয়েছেন ২৩ লাখ ৪৭ হাজার ২৮১ টাকা। এখানেও তিনি ১৪ লাখ ৯০ হাজার ৯৪৬ টাকা কম জমা করেন বলে প্রতিবেদনে বলা হয়।
আজিজুল হক দুই খাত থেকে মোট ৩০ লাখ ৫০ হাজার ৬০১ টাকা সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ এবং সংশ্লিষ্ট আলামত নষ্ট করেছেন বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
মো. শাহজাহানের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে (২০০৯ থেকে ২০১০ সাল) ১৫ হাজার টিকিট বিক্রি করে দেড় লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
আবু হানিফ ভুইয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি গত ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ২৮ হাজার টিকিট বিক্রি করে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।
হারুনর রশিদ গত ২০০৯-২০১০ থেকে ২০১২-১৩ সাল পর্যন্ত ১ লাখ ১৫ হাজার টিকিট বিক্রি করে ১১ লাখ ৫০ হাজার আত্মসাৎ করেন বলে প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
আলমগীর হোসেন গত ২০১০ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত ২৮ হাজার টিকিট বিক্রি করে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে প্রতিবেদেন উল্লেখ করা হয়।
অন্যদিকে, আব্দুল বাতেন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি জরুরি বিভাগে ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে গত ২০০৯ থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত ১ লাখ টিকিট বিক্রি করে ১০ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়।
এসব অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে দণ্ডবিধির ৪০৯ ও ২০১ ধারা এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলাগুলো করা হবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮/এম এ রহমান/রফিক
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন