ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

রাজশাহী মহানগরীতে ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ হবে

হাসিবুল ইসলাম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৫৬, ১১ অক্টোবর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজশাহী মহানগরীতে ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ হবে

নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজশাহী মহানগরীতে পানির কাভারেজ শতভাগে উন্নীত করতে ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণের জন্য প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে সরকার।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে এনইসি সম্মেলন কক্ষে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠক শেষে সাংবাদিকদেরকে ব্রিফিংকালে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এ তথ্য জানান।

মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে রাজশাহী মহানগরের পানি সরবরাহের কাভারেজ ৭১ শতাংশ এবং রাজশাহী ওয়াসা মোট চাহিদার ৯৬ শতাংশ ভূ-গর্ভস্থ পানি উত্তোলন করে। ভূ-গর্ভস্থ উৎস থেকে অস্বাভাবিক পানি উত্তোলনের ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির স্থিতিতল প্রতি বৎসর শূন্য দশমিক ৫ থেকে ১ মিটার নীচে নেমে যাওয়ার ফলে ভূ-গর্ভস্থ পানির ওপর বিরুপ প্রভাব পড়ছে। রাজশাহী মহানগরীর পানির কাভারেজ শতভাগে উন্নীত করতে জি টু জি ভিত্তিতে ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণের জন্য রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার প্রকল্পটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রকল্পটির প্রাক্কলিত ব্যয় ৪ হাজার ৬২ কোটি ২২ লাখ টাকা। এর মধ্যে জিওবি ১ হাজার ৭৪৮ কোটি ৬৩ লাখ টাকা এবং প্রকল্প সাহায্য ২ হাজার ৩১৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। প্রকল্প সাহায্য প্রদানকারী সংস্থা চায়না এক্সিম ব্যাংক।

তিনি বলেন, এটি স্থানীয় সরকার বিভাগের আওতায় রাজশাহী পানি সরবরাহ ও পয়ঃনিস্কাশন কর্তৃপক্ষ (রাজশাহী ওয়াসা) কর্তৃক বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পটি ২০১৮ সালের জুলাই থেকে ২০২২ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদকালে বাস্তবায়িত হবে।

প্রকল্পটির মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে- রাজশাহী ওয়াসার ২০০ এমএলডি (দৈনিক ২০ কোটি লিটার) ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ; রাজশাহী মহানগরীতে পানির কাভারেজ ৭১ শতাংশ  থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীতকরণ; জনপ্রতি দৈনিক পানি ব্যবহার ৬৫ লিটার হতে ১৪০ লিটারে উন্নীতকরণ; পানি উৎস ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে টেকসই পানি সরবরাহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে পানির উৎস হিসেবে ১০০ সতাংশ ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করা।

আজকের একনেকে উপস্থাপিত ১৭টি (নতুন ও সংশোধিত) প্রকল্পে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ২০০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা । এর মধ্যে জিওবি ১১ হাজার ১৯৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা, সংস্থার নিজস্ব তহবিল ২ হাজার ৮১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা এবং বৈদেশিক প্রকল্প সাহায্য ১৯৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা।

পরিকল্পনামন্ত্রী সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, গত মঙ্গলবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দিয়েছে ২০টি উন্নয়ন প্রকল্প। দুই দিন পরই আজ বৃহস্পতিবার একনেক উঠেছে আরো ১৯টি উন্নয়ন প্রকল্প।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় সাধারণত বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ করেন না। এ সময় সরকারি বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। তাছাড়া, আমরা উন্নয়নের মাধ্যমে এমন পথ তৈরি করতে চাই, যাতে বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা ওই পথেই হাঁটতে পারেন। পরিবেশ তৈরি ও অবকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে তাদের বিনিয়োগ করতে উৎসাহ দেওয়া হবে। উন্নয়নের গতি থামানো যাবে না। নির্বাচন চলবে, আবার উন্নয়নও হবে। কোনোটির জন্য কোনোটি স্থগিত করা ঠিক নয়। উন্নয়ন অব্যাহত রাখতেই ঘন ঘন একনেক বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোতে নির্বাচনের দিন ছুটিও ঘোষণা করা হয় না। সবাই ভোট দিয়ে অফিসে চলে যান। সেখানে তো কোনো সমস্যা হয় না।

আজকের একনেকের অন্যান্য প্রকল্পগুলো হলো- ঢাকা সিটি করপোরেশনের পরিচ্ছন্নতাকর্মী নিবাস নির্মাণ প্রকল্প, রাজশাহী ওয়াসার ভূ-উপরিস্থ পানি শোধনাগার নির্মাণ প্রকল্প, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডে সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন এবং বাস/ট্রাক টার্মিনাল তৈরি প্রকল্প, ফরিদপুর-ভাঙ্গা-বরিশাল-পটুয়াখালী-কুয়াকাটা জাতীয় মহাসড়ক চার লেনে উন্নীতকরণের জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্প, বৈরাগীরপুল (বরিশাল)-টুমচর-বাউফল (পটুয়াখালী) জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণের নিমিত্তে নন্দিগ্রাম-তালোড়া-দুঁপচাচিয়া-জিয়ানগর-আক্কেলপুর জেলা মহাসড়ক এবং নন্দিগ্রাম-কালীগঞ্জ-রানীনগর জেলা মহাসড়ক যথাযথ মান ও প্রশস্ততায় উন্নীতকরণ প্রকল্প, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চত্বরে একটি বহুতল অফিস ভবন নির্মাণ প্রকল্প, বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থার উন্নয়ন- চট্টগ্রাম জোন (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প, মোল্লাহাটে ১০০ মেগাওয়াট সোলার পিভি পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি প্রকল্প, যশোর অঞ্চলের গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, খুলনা-বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার পল্লী অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প, গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় বঙ্গবন্ধু দারিদ্র্য বিমোচন প্রশিক্ষণ কমপ্লেক্স সম্প্রসারণ, সংস্কার ও আধুনিকায়ন প্রকল্প (তৃতীয় সংশোধিত) প্রকল্প, পরিবেশবান্ধব কৌশলের মাধ্যমে নিরাপদ ফসল উৎপাদন প্রকল্প, বৃহত্তর ঢাকা জেলা সেচ উন্নয়ন প্রকল্প (তৃতীয় পর্যায়) প্রকল্প, রংপুর জেলার মিঠাপুকুর-পীরগাছা-পীরগঞ্জ ও রংপুর সদর উপজেলায় যমুনেশ্বরী প্রকল্প, উপকূলীয় চরাঞ্চলে সমন্বিত প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন এবং দ্য প্রজেক্ট ফর দ্য ইমপ্রুভমেন্ট অব রেসকিউ ক্যাপাসিটিস ইন দ্য কোস্টাল অ্যান্ড ইনল্যান্ড ওয়াটারস প্রকল্প।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১১ অক্টোবর ২০১৮/হাসিবুল/রফিক 

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়