ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি

আরিফ সাওন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:২১, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অঙ্গীকার বাস্তবায়নের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : গত সংসদ নির্বাচনের প্রাক্কালে প্রকাশিত ইশতেহারে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের জিরো টলারেন্সের অঙ্গীকারকে স্বাগত জানিয়েছে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ। দৃশ্যমানভাবে এ অঙ্গীকারের বাস্তব প্রতিফলন ঘটবে বলে আশা প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।

শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে এক সংবাদ সম্মেলনে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স অঙ্গীকারের বাস্তবায়নের দাবি জানায় সংগঠনটি।

প্রাক্তন সংসদ সদস্য ঊষাতন তালুকদারের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত।

এতে উপস্থিত ছিলেন ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, সাংবাদিক বাসুদেব ধর, লায়ন জে এল ভৌমিক, মিলন কান্তি দত্ত, মঞ্জু ধর, মনিন্দ্র কুমার নাথ, রবীণ বসু, উত্তম কুমার চক্রবর্তী, প্রাণতোষ আচার্য, অ্যাডভোকেট বিনয় ঘোষ বিটু, পরিমল ভৌমিক, রাহুল বড়ুয়া প্রমুখ।

গত ২০১৮ সালের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার তথ্য প্রকাশের জন্যে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, শুধু শারদীয় দুর্গাপূজা বা নির্বাচনের সময়ে নয়, সারা বছরব্যাপী নানান আবরণ ও আভরণে যেসব অন্ধকারের শক্তি ও ব্যক্তি সাম্প্রদায়িক সহিংসতা চালিয়ে জাতীয় ঐক্য ও সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট, ধর্মীয় স্বাধীনতা ক্ষুণ্ন এবং ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘু জনমনে আস্থাহীনতা ও ভয়-ভীতি, শঙ্কা সৃষ্টিতে তৎপর তাদের ব্যাপারে সরকার ও প্রশাসন ত্বরিত দৃশ্যমান ভূমিকা পালন করবে, এ আমাদের বিশ্বাস।

লিখিত বক্তব্যে বিগত বছরের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার চালচিত্র তুলে ধরে লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গত বছরে সংখ্যালঘু-আদিবাসী জনগোষ্ঠীর মানবাধিকার পরিস্থিতির  কিছুটা উন্নতি ঘটেছে। ২০১৬ সালে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার ঘটনা ছিল ১৪৭১টি, ২০১৭ সালে তা নেমে আসে ১০০৪-এ। গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট ঘটনার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮০৬-তে। এর মধ্যে হত্যার শিকার হয়েছেন ৯০ জন, মরদেহ উদ্ধার হয়েছে ১৫ জনের (প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ড বলে প্রতীয়মান), কথিত ধর্ম অবমাননার অভিযোগে শাস্তি প্রদানের ঘটনা ঘটেছে ১০টি, অপহরণের ঘটনা ৩৯টি, নিখোঁজের ঘটনা ১৮টি, ধর্ষণচেষ্টার ঘটনা ১৪টি, ধর্ষণের ঘটনা ৩২টি, গণধর্ষণের ঘটনা ১৬টি, যৌন হয়রানির ঘটনা ২৬টি, প্রতিমা চুরির ঘটনা ১৪টি, মন্দিরে চুরি/ডাকাতির ঘটনা ৭টি, প্রতিমা ভাঙচুর ১৬৯টি, মন্দিরে হামলা/ভাঙচুর/অগ্নিসংযোগের ঘটনা ৫৮টি, শ্মশান/ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানের সম্পত্তি দখলের ঘটনা ২১টি, দখলের অপপ্রয়াস ১১টি, বসতবাড়ি, জমিজমা দখল/উচ্ছেদের ঘটনা ১২২টি, দেশত্যাগের হুমকির ঘটনা ১১৫টি, বসতঘর/সম্পত্তি ব্যবসা-প্রতিষ্ঠানে হামলা/ভাঙচুর/অগ্নিসংযোগ/লুটপাট/ডাকাতির ঘটনা ২৩৫টি, চাঁদাবাজির ঘটনা ২০টি, হত্যার হুমকির ঘটনা ৩১টি, হত্যাচেষ্টার ঘটনা ২৩টি। শারীরিক হামলার শিকার হয়েছেন এ বছরে ৪৪৭ জন। দখলের/উচ্ছেদের অপতৎপরতায় ৫৮৮টি পরিবার/প্রতিষ্ঠান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রতারণাপূর্ণভাবে গো-মাংস ভক্ষণ করিয়ে ধমীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার ঘটনা ৩টি। এ চিত্র থেকে এটি সুস্পষ্ট যে, ধর্মীয়-জাতিগত সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতন, নিপীড়নের ধারা আজো অব্যাহত রয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বাপর সময়ে নির্বাচন কমিশন, নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সকল রাজনৈতিক দল এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রশংসনীয় ভূমিকায় বিগত নির্বাচনগুলোর সময়ের মতো দুঃসহ অভিজ্ঞতার পুণরাবৃত্তি ঘটেনি, উল্লেখ করে বলা হয়, এর পরেও ফেনীর সোনাগাজী, ঠাকুরগাঁও সদর, রাঙ্গামাটির লংগদু, বাঘাইছড়ি কিয়দংশ, রাজস্থলী, কাপ্তাই, কাউখালিসহ কয়েকটি স্থানে বিচ্ছিন্নভাবে কিছু ঘটনা ঘটেছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/সাওন/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়