ঢাকা     শনিবার   ২০ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৭ ১৪৩১

এনবিআরের সার্ভার হ্যাক, দুদকের অনুসন্ধান

এম এ রহমান মাসুম || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৪:২৯, ১৫ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
এনবিআরের সার্ভার হ্যাক, দুদকের অনুসন্ধান

নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সার্ভারে অনুপ্রবেশ বা হ্যাকিং করে পণ্য পাচারের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার অভিযোগ অনুসন্ধানে নেমেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সোমবার দুদক পরিচালক মো. ইউসুফের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি টিম গঠন করা হয়। কমিশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রনব কুমার রাইজিংবিডিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তিনি বলেছেন, ঘটনাটি অনুসন্ধান করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণ করতে অনুসন্ধান কমিটিকে নির্দেশ দিয়েছে কমিশন। দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদের ওপর ভিত্তি করে এ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত হয়।

দুদক সূত্র জানায়, কাস্টমস কর্মকর্তাদের সরকারি আইডি ও পাসওয়ার্ড চুরি করে পণ্য পাচারে জড়িত সংঘবদ্ধ একটি চক্র তিন বছরের বেশি সময় ধরে এনবিআরের সার্ভার অবৈধ ব্যবহার করেছে। আর এ সময়ে চক্রটি শত শত কোটি টাকার পণ্য চট্টগ্রাম বন্দর থেকে ছাড় করে নিয়ে গেছে।

চক্রটি এই সার্ভারে ২০১৬ সাল থেকে তিন হাজার ৭৭৭ বার লগইন করেছে বলে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের এক তদন্তে ধরা পড়েছে। এতে সহায়তা করেছেন চট্টগ্রাম কাস্টমস, বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং পণ্য পরিবহনে নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থার কিছু অসাধু কর্মকর্তা-কর্মচারী।

গত ২৮ মার্চ এক সংবাদ সম্মেলনে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. সহিদুল ইসলাম দাবি করেন, সার্ভারে অনুপ্রবেশ বা হ্যাকিংয়ের সঙ্গে জড়িত চক্রটি চিহ্নিত করা হয়েছে। তাদের সংশ্লিষ্টতার নথিপত্র সংগ্রহ করা হচ্ছে। মামলা হয়েছে। আমাদের পক্ষ থেকে সংস্থাটির অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল হাকিমের নেতৃত্বে একটি টিম কাজ করেছে।

এই হ্যাকিংয়ের ঘটনায় এখন পর্যন্ত চারটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে। এর মধ্যে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তদন্ত কমিটির প্রধান কমিশনার (আপিল) ফখরুল আলম, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে কমিটির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল হাকিম, কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেলের (সিআইসি) কমিটির প্রধান অতিরিক্ত মহাপরিচালক খালেদ মোহাম্মদ আবু হোসেন এবং চট্টগ্রাম কাস্টমসের গঠিত কমিটির প্রধান যুগ্ম কমিশনার এইচ এম শরিফুল হাসান।

এ ঘটনায় রমনা থানায় গত ১৬ জানুয়ারি মামলা হয়। এই প্রক্রিয়ায় ৩০টি কনটেইনার ছাড় করা হয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ রয়েছে। জালিয়াতির মাধ্যমে পণ্য খালাসের ঘটনায় চারটি তদন্ত কমিটি কাজ করছে বলে জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।

শুল্ক গোয়েন্দা সূত্রে আরো জানা যায়, দুজন কাস্টমস কর্মকর্তার চুরি করা আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা হয়েছে একজন কাস্টমস কর্মকর্তার চিঠি জাল করে। এর মধ্যে দুটি চালানে দুই ধরনের জালিয়াতি হয়েছে। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বিদেশ থেকে পণ্য আমদানি করার পর তার শুল্কায়ন থেকে শুরু করে সবকিছুই হয় এনবিআরের ‘অ্যাসাইকুডা ওয়ার্ল্ড সিস্টেম’ নামের একটি সফটওয়্যারের মাধ্যমে। যে দুই কর্মকর্তার নামে আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে পণ্য খালাস করা হয়েছে, তারা হলেন- ডি এ এম মহিবুল ইসলাম ও ফজলুল হক। মহিবুল ইসলাম ২০১৫ সালের জানুয়ারি মাসে চাকরি শেষে অবসরে যান। ২০১৩ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দেড় বছর তিনি চট্টগ্রাম বন্দরে ছিলেন। আর ফজলুল হক ২০০৯ সাল থেকে মধ্যে এক বছর বাদে ২০১৫ সালের আগস্ট মাস পর্যন্ত প্রায় ছয় বছর চট্টগ্রাম বন্দরে কর্মরত ছিলেন।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ এপ্রিল ২০১৯/রহমান/শাহনেওয়াজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়