ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

‘নুসরাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে টাকা লেনদেন হয়েছে’

আহমদ নূর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৭, ২০ এপ্রিল ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
‘নুসরাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে টাকা লেনদেন হয়েছে’

নিজস্ব প্রতিবেদক : ফেনীর সোনাগাজীর মাদরাসা ছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে তথ্য পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।  নুসরাতকে যৌন হয়রানির ঘটনা এবং পরে তার শরীরে কেরোসিন তেল ঢেলে পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আর্থিক লেনদেনগুলো খতিয়ে দেখছে সংস্থাটি।

শনিবার রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগের বিশেষ পুলিশ সুপার মোল্যা নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

তিনি বলেন, ‘নুসরাতের ঘটনা ধামাচাপা দিতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হয়েছে বলে আমরা তথ্য পেয়েছি। তদন্তের অংশ হিসেবে সোনাগাজীর প্রাক্তন ওসি মোয়াজ্জেম হোসেনসহ অভিযুক্তদের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন খতিয়ে দেখা হবে। আগামী সপ্তাহে এই বিষয়ে অনুসন্ধানে ফেনীর সোনাগাজী যাচ্ছে সিআইডির তদন্ত দল।’

মোল্যা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘নুসরাতের সঙ্গে এই ঘটনার শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সবকিছু অনুসন্ধান করা হবে।  তৎকালীন ওসি মোয়াজ্জেমসহ সবার ব্যাংক হিসাব দেখবে সিআইডি।  এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে যারাই অর্থ লেনদেনের সংস্পর্শে এসেছে তাদের আমরা আইনের আওতায় আনব। আমাদের অনুসন্ধানে লন্ডারিংয়ের তথ্য পেলে আমরা সোনাগাজী থানায় মানিলন্ডারিং আইনে একটি মামলা দায়ের করব।’

মানি লন্ডারিংয়ের বিষয়ে বুঝাতে গিয়ে মোল্যা নজরুল আরো বলেন, ‘নুসরাতকে শ্লীলতাহানি, আগুন দিয়ে পুড়িয়ে হত্যা, হত্যার উদ্দেশ্যে কেনা কেরোসিন বা এই ঘটনা ধামাচাপা দিতে যেকোনো ইনভেস্টই মানি লন্ডারিংয়ের আওতায় পড়বে। ’

গত ৬ এপ্রিল সকালে আলিম পরীক্ষা দিতে গেলে সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদরাসায় মুখোশ পরা চার/পাঁচজন নুসরাত জাহান রাফিকে অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলার বিরুদ্ধে করা যৌন হয়রানির মামলা ও অভিযোগ তুলে নিতে চাপ দেয়।  অস্বীকৃতি জানালে তারা নুসরাতের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়।

প্রায় পাঁচ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে গত ১০ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টায় ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে মারা যান অগ্নিদগ্ধ নুসরাত জাহান রাফি।

এ ঘটনায় নুসরাতের পরিবারের করা মামলায় এখন পর্যন্ত মোট চারজন দায় স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।  মামলার এজাহারে থাকা আট আসামির সবাই গ্রেপ্তার হয়েছেন। এ ছাড়া, এ ঘটনায় গ্রেপ্তার মোট ১৮ জনের মধ্যে ১৩ জনকে আদালত জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন।

গ্রেপ্তার ১৮ জন হলেন- অধ্যক্ষ এস এম সিরাজ উদ দৌলা, কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মুকছুদ আলম, শিক্ষক আবছার উদ্দিন, সহপাঠী আরিফুল ইসলাম, নূর হোসেন, কেফায়াত উল্লাহ জনি, মোহাম্মদ আলা উদ্দিন, শাহিদুল ইসলাম, অধ্যক্ষের ভাগনি উম্মে সুলতানা পপি, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের হোসেন, নুর উদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, মো. শামীম, কামরুন নাহার মনি, জান্নাতুল আফরোজ মনি, শরীফ ও হাফেজ আব্দুল কাদির।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২০ এপ্রিল ২০১৯/নূর/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়