ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিলের দাবি

আবু বকর ইয়ামিন || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:১৬, ১৫ মে ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
ছাত্রলীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিলের দাবি

নিজস্ব প্রতিবেদক : সদ্য ঘোষিত কেন্দ্রীয় পূর্ণাঙ্গ কমিটি বাতিল এবং মধুর ক্যান্টিনে সংগঠনের নারী নেত্রীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিতরা।

বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এ সময় মধুর ক্যান্টিনে ছাত্রলীগের নারী নেত্রীদের ওপর হামলাকে ছোট ঘটনা বলায় আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের কড়া সমালোচনা করেন হামলার শিকার নেতা-কর্মীরা।

বিক্ষুব্ধ নেতা-কর্মীরা ঘোষিত কমিটি বাতিল করে যোগ্যদের স্থান দেওয়া এবং হামলায় জড়িতদের শাস্তির দাবি করেন। মানববন্ধনে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটিতে পদবঞ্চিত শতাধিক নেতা-কর্মী অংশগ্রহণ করেন।  এতে কমিটি বাতিলসহ বিভিন্ন দাবি সম্বলিত ব্যানার বহন করেন তারা।

এ সময় রোকেয়া হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি এবং ডাকসুর কমনরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক বি এম লিপি আক্তার বলেন, ‘অনেকেই ঘটনাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছে। আমাদের উদ্দেশ্য যারা কমিটিতে এসেছে, যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এসেছে, তাদেরকে বাদ দিয়ে দক্ষ ও যোগ্যদেরকে নিয়ে কমিটি করা।’

নতুন কোনো কর্মসূচি ঘোষণা করবেন কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে লিপি আক্তার বলেন, ‘আমাদের ৪৮ ঘণ্টার সময় দেওয়া ছিল। আগামীকাল এটি শেষ হবে। তারপরই কী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে, এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’

তিনি বলেন, ‘এক বছর পর কমিটি হয়েছে, এখানে সবার মন জয় করে কমিটি করা সম্ভব নয়। আর যারা কমিটিতে স্থান পেয়েছে তাদের সমালোচনা সহ্য করার ক্ষমতা থাকতে হবে। যারা যোগ্যতা অনুযায়ী পোস্ট পেয়েছে তাদেরকে আমরাও শুভেচ্ছা জানিয়েছি। কিন্তু অনেকেই রয়েছে যাদের কোনো যোগ্যতাই নেই, তাদের বিরুদ্ধে অপকর্মের সাক্ষ্য, প্রমাণ রয়েছে। তারা কমিটিতে থাকলে ছাত্রলীগ প্রশ্নবিদ্ধ হবে। আমরা মত প্রকাশের যুক্তিসঙ্গত পন্থা বেছে নিয়েছিলাম। কিন্তু তা করতে দেওয়া হয়নি। তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, কিন্তু হামলাকারীদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। কমিটির সদস্যরাও আমাদের সঙ্গে আলোচনায় আসেনি। তাহলে এটা প্রহসন করা হলো আমাদের সঙ্গে।’

লিপি আক্তার বলেন, ‘যারা ছাত্রলীগকে কলুষিত করছে তাদের বিরুদ্ধে আমরা সোচ্চার থাকব। আমার দিকে গ্লাস ছুড়ে মারলে মাথা সরিয়ে নিই, সেটি গিয়ে লাগে রোকেয়া হলের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবনী দিশার চোখের পাশে। ’

এ সময় আওয়ামী লীগ নেতারা এটিকে সামান্য ঘটনা বলার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের শামসুন্নাহার হল শাখার সভাপতি ও নতুন কমিটিতে উপসাংস্কৃতিক সম্পাদক পদ পাওয়া নিপু তন্বী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের কাছে সম্মান প্রদর্শন করে জানতে চাই, মধুর ক্যান্টিনের ঘটনাটি কোন পর্যায়ে গেলে তাদের কাছে মনে হতো এটি বিশাল আকারের ঘটনা। আমাদেরকে আর কতটুকু লাঞ্ছিত করলে তাদের কাছে মনে হতো ছাত্রলীগের নারীদের ওপর নির্যাতন হয়েছে। আমরা মারা যাওয়ার পরে কি ঘটনার সত্যতা প্রকাশ পেত?’

তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নিবেদিতপ্রাণ হিসেবে মধুর ক্যান্টিনের মতো জায়গায় সংগঠনেরই কিছু ছোট-বড় ভাই দ্বারা নির্যাতিত হই। এরপর আর কোনো মা-বাবা-ভাই-বোন ছাত্রলীগ করার জন্য তাদের ঘরের সন্তানকে পাঠাবে না। নারী নেত্রীরা বার বার নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। আর কত নারী নেত্রীর ওপর আঘাত আসলে টনক নড়বে আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের। আমরা কবে নিবৃতি পাব।’

মানববন্ধনে অন্যান্যের মধ্যে ছাত্রলীগের আগের কমিটির প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক সাইফ বাবু, দপ্তর সম্পাদক দেলোয়ার শাহজাদা, কর্মসূচি ও পরিকল্পনা বিষয়ক সম্পাদক রাকিব হোসেন, কবি জসীমউদ্‌দীন হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহেদ খান, বাংলাদেশ-কুয়েত মৈত্রী হল শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শ্রাবণী শায়লা, ডাকসুর ক্রীড়া সম্পাদক শাকিল আহমেদ তানভীর, ডাকসুর সদস্য তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

প্রসঙ্গত, মধুর ক্যান্টিনের সেই ঘটনায় পদবঞ্চিতদের পক্ষ থেকে গতকাল ৪৮ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেওয়া হয়। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ‘বিতর্কিত’ ও ‘নিষ্ক্রিয়’দের কমিটি থেকে বাদ না দেওয়া হলে গণপদত্যাগ ও অনশনের ঘোষণা দেন তারা।

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ মে ২০১৯/ইয়ামিন/সাইফুল

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়