ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

সবাই প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু সেতু হয় না

ফয়সাল আহমেদ || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৩:৩৯, ৯ জানুয়ারি ২০১৬   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
সবাই প্রতিশ্রুতি দেন কিন্তু সেতু হয় না

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি : ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে বয়ে গেছে ফটকি নদী। এ নদীই ঝিনাইদহ ও মাগুরা জেলাকে আলাদা করেছে। নদীর এপাশে ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ আর ওপাশে মাগুরার শালিখা উপজেলা।

 

এই ফটকি নদী পারাপারে বাঁশের সাঁকো একমাত্র ভরসা হলেও বছরের বেশিরভাগ সময় তা পানিতে ডুবে থাকে। তখন আর ২২ গ্রামের মানুষের যোগাযোগের কোনো উপায় থাকে না। এই নদীতে সেতু করার জন্য সবাই প্রতিশ্রুতি দিলেও আজো তা হয়নি।

 

সরেজমিনে স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নাটোপাড়া ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার পূর্বাঞ্চলের শেষ গ্রাম। এই গ্রামের অপরপ্রান্তে রয়েছে মাগুরার শালিখা উপজেলার মশাখালী। নাটোপাড়ার পাশ দিয়ে ফটকি নদী মাগুরার মধ্যে প্রবেশ করেছে। নাটোপাড়া গ্রামে রয়েছে একটি ঘাট। এ ঘাটের দুপ্রান্তের পিচঢালা পথই ঝিনাইদহ থেকে শালিখা যোগাযোগের একমাত্র অবলম্বন। কিন্তু ঘাটে সেতু না থাকায় সাধারণ মানুষের ভোগান্তির শেষ নেই। বর্ষা মৌসুমের প্রায় পাঁচ থেকে ছয় মাস নদীতে পানি বেশি থাকায় যোগাযোগ একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। আর অন্য সময়ে এলাকার মানুষ বাঁশ দিয়ে সাঁকো তৈরি করে চলাচল করে।

 

এলাকাবাসী জানান, ফটকি নদীর এই ঘাটটি দুই উপজেলার সীমান্তবর্তী হওয়ায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা সেভাবে গুরুত্ব দেন না। আর এলজিইডি কর্তৃপক্ষ বিষয়টি দেখবে বলে দায়িত্ব শেষ করে।

 

সাধারণ মানুষের ধারণা, জনপ্রতিনিধিদের ঠেলাঠেলি আর প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এই ঘাটে সেতু তৈরি হচ্ছে না। তারা বিষয়টি উচ্চ পর্যায়ে দেখার জন্য অনুরোধ করেছেন।

 

নাটোপাড়ার বাসিন্দা আব্দুল কাদের বিশ্বাস জানান, নদীর একপ্রান্তে ঝিনাইদহের নাটোপাড়া, চটকাবাড়িয়া, বামনাইল, মিয়াকুন্ডু, কুশোবাড়িয়া, মুনুড়িয়া, টিকারী আর অপরপ্রান্তে মাগুরা জেলার কোটবাগ, দোবিলা, বগুড়া, বাইসা, পিপরুল, আমিয়ান, নরবাইসা, ধাওখালী, সিমাখলীসহ অনন্ত ২২ গ্রামের মানুষ এই ঘাট দিয়ে পারাপার হয়ে থাকে। ঘাটের দুপ্রাপ্তে সিংগা, দোবিলা, নাটোপাড়া ও কুশবাড়িয়া বাজার রয়েছে। এই বাজারে দৈনন্দিন সব কাজ মেটান ওই গ্রামগুলোর মানুষ। কিন্তু বছরের বেশির ভাগ সময় একপ্রান্তের মানুষ আরেক প্রান্তে যেতে পারেন না। নদীটি তাদের পৃথক করে রেখেছে।

 

আরেক বাসিন্দা আব্দুল মমিন জানান, তাদের বাজারে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। আর নদীর অপরপ্রান্তে রয়েছে মাধ্যমিক বিদ্যালয়। দুপ্রান্তের বাচ্চাদের পড়ালেখা করতে নদী পার হতে হয়। কিন্তু বর্ষার সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা একেবারেই বন্ধ হয়ে যায়। তিনি বলেন, যোগাযোগ ব্যবস্থা ভালো না থাকায় তাদের এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন হচ্ছে না। এ কারণে তারা নাটোপাড়ার ঘাটে একটি সেতুর জন্য বছরের পর বছর জনপ্রতিনিধি ও সরকারি লোকজনের কাছে ধর্ণা দিয়ে যাচ্ছেন, কিন্তু কোনো ফল হচ্ছে না। সবাই প্রতিশ্রুতি দেন, কিন্তু সেতু হয় না।

 

এ ব্যাপারে এলজিইডির কালীগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. হাফিজুর রহমান জানান, এখন পর্যন্ত ওই স্থানে সেতু নির্মাণের বিষয়ে কোনো প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়নি। তবে স্থানীয় জনসাধারণের প্রয়োজনের কথা চিন্তা করে সেতুর বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

 

রাইজিংবিডি/ঝিনাইদহ/৯ জানুয়ারি ২০১৬/ফয়সাল আহমেদ/মুশফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়