কোন বয়সে, কেমন খেলনা
প্রতীকী ছবি
আফরোজা জাহান : কোনো বাসায় খেলনা আছে দেখলেই আমরা ধারণা করি নিশ্চয়ই এ বাসায় বাচ্চা আছে। বলা যায়, বাচ্চাদের উপস্থিতি প্রকাশের অন্যতম মাধ্যম ও খেলনা।
শুধু কি তাই? অনেক হবু মা-বাবা তাদের অনাগত সন্তানের আগমনের আগেই খেলনা কিনে রাখে আর অপেক্ষার প্রহর গুণে। এছাড়াও উপহার হিসেবে বাচ্চাদের প্রথম পছন্দ খেলনা। বাচ্চাদের জন্মদিন থেকে শুরু করে নানা উপলক্ষে বড়রা তাই তাদের খেলনা উপহার দিয়ে থাকে।
কিন্তু বাচ্চাদের শুধু যেকোনো খেলনা উপহার দিলেই হয় না, বয়স অনুসারে বাচ্চাদের জন্য খেলনা বাছাই করতে হয়। কারণ, খেলনা তাদের বিনোদনের মাধ্যম এর সঙ্গে সঙ্গে মেধা বিকাশেও অনেক বড় ভূমিকা রাখে।
সদ্যোজাত থেকে ১ বছর :
* উজ্জ্বল রঙয়ের খেলনা এই সময়ে বাচ্চাদের দিতে পারেন।
* যে খেলনা থেকে শব্দ বা সুন্দর মিউজিক বের হয় এমন খেলনা বাছাই করতে পারেন। বাচ্চার শ্রবণ ক্ষমতা কেমন বা শব্দ শুনে কিভাবে সে প্রতিক্রিয়া জানায় তা সম্পর্কে জানতে পারবেন।
* সুতা, পশম যুক্ত কোনো খেলনা এ বয়সে দিবেন না। এই বয়সী বাচ্চারা যেকোনো কিছু মুখে দিয়ে ফেলে। আর সুতা বা দড়ি যুক্ত খেলনা বাচ্চার গলায় পেঁচিয়ে যেতে পারে। তাই সাবধান থাকুন।
* এই বয়সী বাচ্চাদের ধোয়া যায়, সহজে ভাঙবে না, চাপ দিলে শব্দ হবে বা লাইট জ্বলবে এমন খেলনা দিন।
* যে সব খেলনায় আলগা রঙ থাকে বা খুব ছোট তেমন খেলনা দিয়ে বাচ্চাদের খেলতে দিবেন না।
১ থেকে ২ বছর :
* মিউজিক হয় এমন খেলনা দিতে পারেন। তাছাড়াও ভাসমান খেলনা ওর গোসলের গামলায় দিতে পারেন। গোসলের প্রতি অনীহা কমবে।
* রঙিন বই দিতে পারেন। যেসব বইয়ের পাতা শক্ত বা প্লাস্টিক দিয়ে মোড়ানো তেমন বই ভালো। খেলার ছলে ফুল, ফল পশুপাখি চিনবে।
* ফোম বা প্লাস্টিকের তৈরি ব্লক দিন। নড়াচড়া করতে করতে আকার, রঙ এবং সংখ্যা সম্পর্কে ধারণা গড়ে উঠবে।
* ধারালো, কোণযুক্ত বা ছোট খেলনা দিবেন না।
৩ থেকে ৪ বছর :
* এ বয়স থেকে রঙ পেন্সিল, খাতা দিন। বাচ্চার বিকাশে অনেক সহায়ক হবে।
* বড় আকারের গাড়ি বা রকিং ঘোড়া দিতে পারেন।
* বল দিতে পারেন। নির্দিষ্ট জায়গায় ছুড়তে বলতে পারেন। হাতের নড়াচড়াতে হাত মজবুত হবে, সেই সঙ্গে কোনো কিছু পর্যবেক্ষণ করে লক্ষ্য স্থির করার প্রাথমিক প্রস্তুতি পাবে।
৪ থেকে ৫ বছর :
* বিল্ডিং ব্লকস, ক্লে সেট দিন। নতুন কিছু বানানোর চিন্তা শক্তি ধীরে ধীরে গড়ে উঠবে।
* কাগজ দিয়ে খেলনা বানিয়ে দিন। বাচ্চাকে নিজে নিজে তা বানাতে উৎসাহ দিন।
* ফুল, পশুপাখি বা সংখ্যা সাজানোর অনেক খেলনা আছে। তেমন খেলনা দিন। স্মৃতিশক্তি আর সৃজনশীলতা বাড়বে।
৫ থেকে ৬ বছর :
* এ বয়স থেকে শিশুর নিজস্ব আগ্রহ তৈরি হয়। পছন্দ-অপছন্দ নির্ণয় করতে পারে। পারিপার্শ্বিক পরিবেশ থেকে শিখতে শুরু করে।
* শিক্ষণীয় খেলনা এ বয়সের শিশুদের জন্য উপযুক্ত। যেমন বিজ্ঞান সামগ্রী, রিমোট কন্ট্রোল গাড়ি, বারবি পুতুল, কম্পিউটার ও ভিডিও গেমস, স্পোর্টস ইক্যুইপমেন্ট কিনে দিতে পারেন।
বাচ্চার বয়স বুঝে খেলনা নিবার্চনকে অনেকেই গুরুত্ব দেয় না। কিন্তু বাচ্চার সঠিক বিকাশ আর নিরাপত্তার জন্য সঠিক খেলনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আর বাচ্চাকে শুধু সঠিক খেলনা দিয়েই দায়িত্ব শেষ নয়, বাচ্চা যখন খেলবে শত ব্যস্ততার মাঝেও তার সঙ্গে মাঝে মাঝে হলেও খেলুন। শুধু মা-বাবা নয় পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তার পাশে থাকুন। খেলতে খেলতেই সে সামাজিক হবার প্রথম শিক্ষাটাও এখান থেকেই পাবে।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/২ ফেব্রুয়ারি ২০১৭/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন