ঢাকা     বৃহস্পতিবার   ১৮ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৫ ১৪৩১

গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম

ঝুমকি বসু || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ০৬:২৬, ২৪ মার্চ ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম

প্রতীকী ছবি

ঝুমকি বসু : সাধারণত বেশিরভাগ নারীর ওজন গর্ভাবস্থায় বেড়ে যায় প্রায় ১৫ কেজি। এই সময় ওজন বাড়া খুবই স্বাভাবিক। কারণ তখন শারীরিক পরিশ্রম হয় না, খাবার গ্রহণও হয় বেশি। তাই নিজেকে কেমন যেন আনফিট মনে হয়।

কিন্তু এই সময় ব্যায়াম করলে শরীর ঝরঝরে লাগে। মা ও বাচ্চা দুজনেই ভালো থাকে। তবে কখনোই নিজ থেকে কোনো ব্যায়াম করা যাবে না। প্রেগন্যান্সিকালীন সময় অনেকেরই থাকে নানা জটিলতা। তাই ব্যায়াম শুরু করার আগে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে, জেনে নিতে হবে আপনার ব্যায়ামের উপযোগিতা আছে কি না।

এ বিষয়ে পরামর্শ চাওয়া হয় বারডেম হাসপাতালের স্ত্রীরোগ ও প্রসুতিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ডা. মাসুমা জলিলের কাছে। তিনি কথা বলেন রাইজিংবিডির সঙ্গে।

কেন এই সময় ব্যায়াম করবেন
গর্ভাবস্থায় নানা শারীরিক সমস্যা হয়। এ সময় হতে পারে পিঠে ব্যথা, রাতে ঘুম না হওয়া, কোষ্ঠকাঠিন্য ইত্যাদি। ব্যায়ামের উপকারিতা এখানেই। নিয়মিত ব্যায়াম করলে পিঠে ব্যথা কমে যায়, কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়। স্ট্রেস ও অ্যাংজাইটি কমিয়ে ব্যায়াম রাতে ঘুম আনতে সাহায্য করে। শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়িয়ে উজ্জ্বলতা নিয়ে আসে চেহারায়।

হরমোনাল পরিবর্তনের জন্য এ সময় জয়েন্ট শিথিল হয়ে যায়। তাই হাত, পায়ে ব্যথা হতে পারে। ব্যায়াম করলে জয়েন্টের ভেতর যে লুব্রিকেটিং ফ্লুইড থাকে, তার পরিমাণ বেড়ে গিয়ে হাত, পায়ের ব্যথা কমায়।

ব্যায়াম শরীরের নিম্নাংশের মাসল টোন করে শরীরকে ডেলিভারির জন্য প্রস্তুত করে। মাসলকে শক্তিশালী করে ডেলিভারির সময় লেবার পেইন কমায়।

গর্ভধারণের পর শরীরে অনেক পরিবর্তন হয়। এগুলো অনেক সময় মেনে নিতে কষ্ট হয়; তাই মন-মেজাজ ভালো থাকে না। ব্যায়াম করলে ব্রেনে এক ধরনের কেমিক্যাল নিঃসৃত হয় যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে। এছাড়া শরীরের এনার্জি লেভেল বাড়িয়ে মুড ভালো রাখে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করলে বাচ্চা হওয়ার পর দ্রুত বেড়ে যাওয়া ওজন কমে যায়।

কী ধরনের ব্যায়াম করবেন
হাঁটা- গর্ভবতীদের জন্য হাঁটা সবচেয়ে ভালো ব্যায়াম। গর্ভাবস্থার পুরো নয় মাস আপনি হাঁটাকে আপনার প্রতিদিনকার রুটিনে রাখতে পারেন।

সাঁতার কাটা- সাঁতার কাটা সব থেকে ভালো ও নিরাপদ ব্যায়াম। সাঁতার কাটলে হাত ও পায়ের মাসলের ওয়ার্কআউট হয়। এছাড়া কারডিওভাস্কুলার ওয়ার্কআউটও হয়। বাড়তি ওজন থাকা সত্ত্বেও নিজেকে হালকা মনে হয়। রিলাক্সড লাগে।

যোগাসন- মাসল টোন ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফ্লেক্সিবিলিটি বাড়ায় কিন্তু জয়েন্টের ওপর বাড়তি চাপ সৃষ্টি করে না। যোগাসন মন-মেজাজ ভালো রাখে।

গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস সাধারণত চিকিৎসকেরা সোজা হয়ে শুতে হয় এরকম ব্যায়াম করতে বারণ করেন। এমন কোনো ব্যায়াম করবেন না যাতে লাফাতে হয় কিংবা পেটে আঘাত লাগে। ব্যায়াম করার সময় আপনাকে সচেতন থাকতে হবে। তবে যে ধরনের ব্যায়ামই করুন না কেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া নিজ থেকে কোনো ব্যায়াম শুরু করবেন না।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মার্চ ২০১৭/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়