ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

নিবিড় ছাদ-বাগান

আকাশ বাসফোর || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১১:৩৭, ২৮ এপ্রিল ২০১৭   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
নিবিড় ছাদ-বাগান

আকাশ বাসফোর : রাজধানীতে অনেকের বাড়ির ছাদেই রয়েছে বিভিন্ন ফুলের বাগান। অনেকের আবার রয়েছে ফলের বাগান। বাগানগুলো বিভিন্ন ধরনের হলেও এবার বাগানের একটি নতুন মডেল তৈরি করা হয়েছে। যার নাম ‘নিবিড় ছাদ-বাগান’।

বাগানটি তৈরি করা হয়েছে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রিকালচারাল বোটানি বিভাগের ছাদে। যেখানে বাগানের মোট ক্ষেত্রফলের সর্বোচ্চ ১৫ শতাংশ রাস্তা, ১০ শতাংশ বসার জায়গা, ৪০ শতাংশ শাক-সবজি, ১০ শতাংশ ফুল ও শোভাবর্ধক গাছ, ২০ শতাংশ ফল, মসলা ও ওষুধি এবং ৫ শতাংশ অন্যান্য গাছের জন্য বিবেচনায় রেখে বাগানের মডেল প্রস্তুত করা হয়েছে।

এ মডেলের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে- অধিক জীববৈচিত্র্য, দৃশ্যত খুবই আকর্ষণীয়, বিনোদন ও খাদ্য উৎপাদনের জায়গা হিসেবে ব্যবহার হয়। বাগানে  গিয়ে দেখা গেছে, কাঁচা-পাকা বড় টবে অমৃত সাগর কলা। কয়েকটি গাছে ডালিম আর পেঁপে দেখা গেল। পাশেই রয়েছে কয়লা গাছের মাচা, লেবু, আমলকি, বেগুন, পালংশাক, লালশাক, ডাটাসহ বিভিন্ন সবজির গাছ। অন্য পাশে পেয়ারা, পেঁপে, স্ট্রবেরি, আম, লেবু, ডালিম, কামরাঙ্গা, ড্রাগন ফ্রুট, আঙ্গুর, কমলা, আনারস, জামরুল, লিচু, করমচা, বরই, জাম্বুরা, জলপাইসহ কয়েকটি দেশ-বিদেশি ফলের গাছ। রয়েছে পাট গাছ। ফল ও সবজির গাছগুলোর মধ্য কোনো গাছে ফুল এসেছে আবার কোনটাতে ফল ধরেছে। পুরো ছাদজুড়ে যেন সবুজের সমারোহ। ছাদে এক পাশে রয়েছে- রেইন ওয়াটার হারভেস্ট প্ল্যান্ট। বাগানের শেষ প্রান্তে বাঁশের খুঁটি অবলম্বন করে কিছু পিভিসি পাইপ স্তরে স্তরে সাজিয়ে মাল্টি লেয়ার হাইড্রোফনিক্স পদ্ধতিতে চাষ করা হচ্ছে- ক্যাপসিকাম, চাইনিজ বাঁধাকপি, টমেটো, লেটুস।



এ বিষয়ে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে এগ্রিকালচারাল বোটানি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহবুব ইসলাম বলেন, বহির্বিশ্বের মানুষ অনেক আগে থেকেই ছাদে বাগান করে আসছে। বর্তমানে বাংলাদেশে বিশেষ করে ঢাকায় অপরিকল্পিতভাবে অল্পসংখ্যক ছাদ-বাগান করা হলেও তা ব্যাপকতা লাভ করতে পারেনি এজন্য আমাদের সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ছাদে বাগান করে শহরে গাছপালা বর্ধনের মাধ্যমে জীবের জন্য নিরাপদ পরিবেশ বজায় রাখা সম্ভব। এ ছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন ফুট অভার ব্রিজের গাছ লাগানো যায়।

রাজধানীতে তাপমাত্রার ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে এই মড়েলের ছাদ-বাগান। এতে ফল-ফুল পাওয়ার পাশাপাশি অক্সিজেনের উৎস হতে পারে।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের হর্টিকালচার বিভাগের অধ্যাপক ডক্টর এ এফ এম জামাল উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, ঢাকা শহরের বসবাসের জন্য মোট ১০০ শতাংশের ভিতরে প্রায় ৭০ শতাংশ আবাসিক ও বাণিজ্যিক এলাকা। যা এই নগরীর তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে অনেকাংশে দায়ী। যদি শহরে সব ছাদে পরিকল্পিতভাবে ছাদ-বাগান করা হয় তবে তাপমাত্রা ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত কমানো সম্ভব হতে পারে। এসব অব্যবহৃত ছাদে খুব সহজেই পরিকল্পিতভাবে ফুল, ফল ও শাক-সবজির পারিবারিক বাগান তৈরি করা সম্ভব। এর দ্বারা পারিবারিক ফুল, ফল ও শাক-সবজির চাহিদা মিটিয়ে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখারও সুযোগ রয়েছে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৮ এপ্রিল ২০১৭/আকাশ/সাইফ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়