মায়ের জন্য ভালোবাসা
প্রতীকী ছবি
ঝুমকি বসু : ‘আমি ভীষণ ভালবাসতাম আমার মা-কে
-কখনও মুখ ফুটে বলি নি।
টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে
কখনও কখনও কিনে আনতাম কমলালেবু
-শুয়ে শুয়ে মা-র চোখ জলে ভ’রে উঠত
আমার ভালবাসার কথা
মা-কে কখনও আমি মুখ ফুটে বলতে পারি নি।’
কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের এই কবিতার মতোই হয়তো আপনিও আপনার মাকে এখনো পর্যন্ত মুখ ফুটে বলে উঠতে পারেননি আপনার ভালোবাসার কথা। কবি তার টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে মায়ের জন্য কমলালেবু কিনে এনেছেন। আর তাতেই মায়ের চোখ জলে ভরে উঠতো, মা বুঝে নিতেন কবির না বলা ভাষা। আপনিও পারেন ঠিক এমন করেই একটু অন্যভাবে মায়ের কাছে আপনার অনুভূতির প্রকাশ ঘটাতে।
১৪ মে, বিশ্ব মা দিবস। এই দিনটিকেই বেছে নিন আপনার ভালোবাসা প্রকাশের জন্য। কীভাবে জানাবেন আপনার কথা, চলুন দেখে নিই তা-
* ডায়েরি : আপনি মন খুলে মনের কথা বলতে পারেন না, কিন্তু লিখতে পারেন চমৎকার। ডায়েরির প্রথম পাতায় মা আর আপনার স্মৃতিবহ একটি ছবি লাগিয়ে নিয়ে পাতায় পাতায় লিখে ফেলতে পারেন মায়ের সঙ্গে আপনার জীবনের উল্লেখযোগ্য ঘটনাগুলো। মা দিবসে মায়ের হাতে তুলে দিতে পারেন আপনার না বলা কথার ডায়েরি।
* ছবির ব্যানার : আপনার সঙ্গে আপনার মায়ের এবং আপনার মায়ের সঙ্গে তার মায়ের বিভিন্ন স্মৃতিময় ছবি নিয়ে বানিয়ে ফেলতে পারেন একটি ব্যানার। চাইলে তাতে জুড়ে দিতে পারেন টুকরো টুকরো কথামালা। তারপর ব্যানারটিকে মা দিবসে মায়ের ঘরের দেয়ালে টানিয়ে রাখতে পারেন।
* দেয়াল লিখন : মায়ের ঘরের একটি দেয়াল নির্বাচন করে তাতে একটা বোর্ড লাগান। তারপর তাতে লিখে ফেলতে পারেন মাকে নিয়ে আপনার না বলা অভিব্যক্তি।
* বিশ্রাম দিন মাকে : আপনার মা কারো কোনো সহযোগিতা ছাড়াই সারাদিন সংসারের কাজ করেন। ঘর ঝাড়ু দেওয়া, ঘর মোছা, কাপড় ধোয়া, রান্না করা, জামা-কাপড় ইস্ত্রি করা, মোটকথা সংসারের সব কাজই একার হাতে সামলান। সারাদিনের সব কাজ এইদিন আপনি নিজের হাতে করে ফেলতে পারেন আর মাকে দিতে পারেন পুরোপুরি বিশ্রাম। যদি সম্ভব হয় মায়ের জন্য এইদিন থেকে ব্যবস্থা করে দিতে পারেন কোনো কাজের মানুষের।
* মায়ের জন্য বিনিয়োগ করুন : অনেক মায়েরই নিজস্ব কোনো উপার্জন থাকে না। কিন্তু সংসার আর সন্তানের জন্য তারা অনবরত কাজ করে যান। অর্থনৈতিকভাবে তিনি সবসময় থাকেন তার স্বামীর ওপর নির্ভরশীল। আপনার মা যদি এমন হয়ে থাকেন তাহলে আপনি এই দিনে মায়ের জন্য শেয়ার কিনে তার হাতে তুলে দিতে পারেন কিংবা ব্যাংকে তার জন্য করে দিতে পারেন ফিক্সড ডিপোজিট। যা অনেকগুলো দিন আপনার মাকে অর্থনৈতিক নিশ্চয়তা দিতে পারবে।
* মায়ের ইচ্ছাপূরণ করুন : মায়ের হয়তো অনেকদিনের শখ কোথাও ঘুরতে যাওয়ার। আপনি এই দিনে তার সেই ইচ্ছাটা পূরণ করতে পারেন।
* দেখা করুন মায়ের সঙ্গে : জীবিকার তাগিদে আপনি হয়তো থাকেন শহরে। মা আছেন সুদূর গ্রামে। মাকে না জানিয়ে মা দিবসে চলে যেতে পারেন তার কাছে। সন্তানকে হঠাৎ কাছে পেয়ে মা যে সুখ পাবেন, তা হবে তার জন্য অনেক দামি উপহারের চাইতেও মূল্যবান। তিনি অনুভব করতে পারবেন আপনিও যে তার জন্য কতোটা ভাবেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ মে ২০১৭/ফিরোজ
রাইজিংবিডি.কম
আরো পড়ুন