ঢাকা     মঙ্গলবার   ১৬ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৩ ১৪৩১

রাজস্ব আয় ২০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ

কেএমএ হাসনাত || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১৫:০০, ৩ নভেম্বর ২০১৮   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
রাজস্ব আয় ২০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ

কেএমএ হাসনাত : বিশেষায়িত ফাংশনাল ইউনিটের  কাঠামোগত সংস্কার ও নতুন বিশেষায়িত ইউনিট গঠনসহ রাজস্ব আয় ২০ শতাংশে উন্নীত করতে ব্যাপক সংস্কারের উদ্যোগ নিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। বিষয়টি অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিতকে অবহিত করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. মোশাররফ হোসেন ভূঁইয়া সম্প্রতি অর্থমন্ত্রীর কাছে এ প্রস্তাবগুলো দিয়েছেন। এই সংস্কারের বিষয়ে একটি সারসংক্ষেপও পাঠানো হয়েছে। অর্থমন্ত্রীও এ বিষয়ে ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে আরো পরীক্ষা-নিরীক্ষার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেছেন।

সূত্র জানায়, রাজস্ব আয় বাড়াতে এনবিআরের সংস্কারের মধ্যে রয়েছে- মাঠপর্যায়ের কর প্রশাসনের সম্প্রসারণ ও সংস্কার (কর অঞ্চল, রেঞ্জ ও সার্কেল)। কর আপিল ইউনিটের সম্প্রসারণ ও সংস্কার এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর উইংয়ের প্রয়োজনীয় কাঠামোগত সংস্কার।

এগুলো ছাড়াও বিদ্যমান কর জরিপ অঞ্চলকে কর তথ্য ব্যবস্থাপনা ইউনিটে রূপান্তর এবং কর পরিদর্শন পরিদপ্তর ও বিসিএস (কর) একাডেমির কাঠামোগত সংস্কারেরও প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, কর ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও কাঠামোগত সংস্কারের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের আয়কর বিভাগের সদস্যদের দপ্তরের কাঠামো সংস্কারের প্রয়োজন হবে। প্রস্তাবিত সম্প্রসারণ ও কর্মপদ্ধতির আলোকে কার্যকর কর ব্যবস্থাপনার জন্য এনবিআরের আয়কর বিভাগের বিদ্যমান ৮ সদস্যের স্থলে ১০ সদস্যের প্রস্তাব করা হয়েছে।

সারসংক্ষেপে উল্লেখ করা হয়, ‘কর ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন ও কাঠামোগত সংস্কারের কার্যকর বাস্তবায়নের স্বার্থে এনবিআর সদস্য, মহাপরিচালক ও অন্যান্য পদের দায়িত্ব, কাজের পরিধি ও মর্যাদা বিবেচনায় নিয়ে উপযুক্ত গ্রেড নির্ধারণের বিষয়টিও বিবেচনায় নিতে হবে। তাই জনবল কাঠামো প্রণয়নের সময় এ বিষয়ে প্রস্তাব করা হয়েছে।’

বাংলাদেশে কর কাঠামোর দুর্বলতার কথা উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ‘কর ফাঁকি মোকাবিলায় কর গোয়েন্দা, অনুসন্ধান, তল্লাশি/জব্দ এবং প্রসিকিউশন অত্যন্ত প্রয়োজনীয় একটি পদক্ষেপ। প্রতিবেশী দেশ ভারতসহ বিশ্বের অগ্রসর প্রশাসনসমূহ প্রতিবছর অসংখ্য অনুসন্ধান, তল্লাশি/জব্দ কার্যক্রম পরিচালনা করে এবং উল্লেখযোগ্য সংখ্যক প্রসিকিউশন মামলা দায়ের করে। এতে একদিকে যেমন হারানো রাজস্ব পুনরুদ্ধার করা যায়, অন্যদিকে সমাজে কর পরিপালন সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠিত হয়। বিশ্বের প্রায় প্রতিটি কর বিভাগে কর গোয়েন্দা ইউনিট, তদন্ত ও প্রসিকিউশন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র প্রশাসনিক ইউনিট থাকলেও বাংলাদেশে আয়কর বিভাগের জন্য এরকম কোনো স্বতন্ত্র ইউনিট নেই্।

আয়করের ‘ই-রেজিস্টেশন, ই-রিটার্ন ফাইলিং ও ই-পেমেন্টসহ সকল ধরনের ই-ট্যাক্স কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনার জন্য স্বতন্ত্র কার্যকর ইউনিট থাকা জরুরি। বাংলাদেশে ইতিমধ্যে ই-টিআইএন রেজিস্টেশন, ই-ফাইলিং ও ই-পেমেন্ট কার্যক্রম চালু করলেও এসব কার্যক্রম পরিচালনা ও ব্যবস্থাপনার জন্য কোনো ফাংশনাল ইউনিট গঠন করা হয়নি। ফলে ই-ট্যাক্স কার্যক্রম কার্যকরভাবে পরিচালনা করা সম্ভব হচ্ছে না।

বলা হয়, আইআরডির প্রস্তাবিত সংস্কার বাস্তবায়িত হলে ২০২২-২০২৩ সালে নিবন্ধিত করদাতার সংখ্যা ১ কোটিতে উন্নীত করা যাবে। এছাড়া, কর জিডিপির অনুপাত মধ্য মেয়াদে ১৬ শতাংশে ও দীর্ঘ মেয়াদে ২০ শতাংশে উন্নীত করা যাবে। একই সঙ্গে আগামী বছরগুলোতে ধারাবাহিকভাবে ২০ শতাংশ বা তারও বেশি হারে প্রবৃদ্ধি বজায় রাখা সম্ভব হবে।



রাইজিংবিডি/ঢাকা/৩ নভেম্বর ২০১৮/হাসনাত/রফিক

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়