ঢাকা     শুক্রবার   ১৯ এপ্রিল ২০২৪ ||  বৈশাখ ৬ ১৪৩১

খুশকির ৫ কারণ

এস এম গল্প ইকবাল || রাইজিংবিডি.কম

প্রকাশিত: ১২:৪৪, ১৭ মার্চ ২০১৯   আপডেট: ০৫:২২, ৩১ আগস্ট ২০২০
খুশকির ৫ কারণ

প্রতীকী ছবি

এস এম গল্প ইকবাল : আপনি কি খুশকির সমস্যা নিয়ে বিব্রত? বুঝতে পারছেন না আপনার খুশকির মূল কারণ? প্রকৃতপক্ষে, খুশকি হওয়ার জন্য একটি নয়, কয়েকটি কারণ দায়ী হতে পারে। এসব কারণগুলো খুশকিপ্রবণ লোকদের খুশকির পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারে। খুশকির প্রধান কারণ শনাক্ত করতে পারলে এ সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সহজ হয়। এখানে আপনার সমস্যা সমাধানের সুবিধার্থে খুশকির পাঁচটি উল্লেখযোগ্য কারণ আলোচনা করা হলো।

* আপনার চুল প্রাকৃতিক ছত্রাকের প্রতি সংবেদনশীল
একটি খুব কমন ধারণা এই যে, শুষ্ক ত্বক হলো খুশকির অন্যতম কারণ। কিন্তু আসলে তা না। প্রকৃত কারণ হলো, পিটাইরোস্পোরাম অরবিকিউলেয়ার নামক একটি কমন ছত্রাকের অতিবিকাশ। এসব ছত্রাক ত্বকের তেল খেয়ে বেঁচে থাকে, একারণে এটি হতে পারে তৈলাক্ত স্কাল্পের লোকদের খুশকির প্রবণতা বেশি হওয়ার কারণ। কিছু লোকের মাথায় তেল উৎপাদন হয় যা ছত্রাকের বসবাসের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে, যার ফলে তাদের খুশকি হয়ে থাকে, বলেন ইউনিভার্সিটি অব মিসিসিপি মেডিক্যাল সেন্টারের অন্তর্গত ডিপার্টমেন্ট অব ডার্মাটোলজির সভাপতি এবং অধ্যাপক রবার্ট টি. ব্রোডেল। সাধারণত হালকা খুশকি নিজে নিজে চিকিৎসা করে দূর করা যায়, তাই প্রায় দুসপ্তাহ ধরে ঘরোয়া চিকিৎসা করুন অথবা ওটিসি ড্যানড্রাফ শ্যাম্পু ব্যবহার করুন।

* আপনি মানসিক চাপে আছেন
খুশকির অনেকগুলো কারণের মধ্যে একটি হলো স্ট্রেস বা মানসিক চাপ। স্ট্রেস ত্বকের যেকোনো দুর্দশাকে আরো খারাপ করতে পারে, বলেন নিউ ইয়র্ক সিটির ত্বক বিশেষজ্ঞ লতিকা সিং। স্ট্রেস আপনার রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করতে পারে এবং খুশকি বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হতে পারে। ডা. সিং বলেন, ‘বিশেষ করে সেসব খুশকি হলো স্ট্রেস প্ররোচিত ফল, যা চুলকানির উদ্রেক করে।’ স্ট্রেস একটি চুলকানি-চুলকানো চক্র সৃষ্টি করে। আপনি যত বেশি চুলকাবেন, আপনার চুলকানি তত বেড়ে যাবে। আপনার দৈনন্দিন রুটিনে শিথিলায়ন পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত করুন। যোগব্যায়াম করুন, প্রতিদিন হাঁটুন অথবা কিছু গভীর শ্বাস নিন। সম্ভব হলে কোয়ান্টাম মেথডে যোগ দিন।

* আপনি চুলে যথেষ্ট শ্যাম্পু দেন না অথবা পরিষ্কার করেন না
শ্যাম্পু ব্যবহার করে না এমন লোকেরা বলেন যে ঘনঘন শ্যাম্পুর ব্যবহারে চুল থেকে প্রয়োজনীয় তেল দূর হয়ে যায়। কিন্তু এসব তেল খুশকির জন্য হটবেড (অনাকাঙ্ক্ষিত কোনোকিছু বিকাশের জন্য আদর্শ জায়গা) সৃষ্টি করে। ডা. ব্রোডেল বলেন, ‘স্কাল্পে তেল বা সিবাম বা ঘামের আধিক্য খুশকি সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে। ঘনঘন চুল ধোয়া হলে সিবাম হ্রাস পায় এবং খুশকি ও এর উপসর্গ নিয়ন্ত্রিত হয়।’ শ্যাম্পুর সঙ্গে টি ট্রি অয়েল ব্যবহার করুন- গবেষণায় পাওয়া গেছে যে এটি খুশকির তীব্রতা উল্লেখযোগ্য মাত্রায় হ্রাস করতে পারে। শ্যাম্পু ব্যবহারের পর চুল ভালোভাবে ধুয়ে ফেলুন, কারণ থেকে যাওয়া অংশ পিটাইরোস্পোরাম অরবিকিউলেয়ারের জন্য ফিডিং গ্রাউন্ড বা খানাঘর সৃষ্টি করতে পারে।

* আপনি সঠিকভাবে খাবার খাচ্ছেন না
শুষ্ক ত্বকের সঙ্গে সম্পর্ক নেই এমন আরেকটি খুশকির কারণ হতে পারে আপনার ডায়েট। এটা তেমন একটা আশ্চর্যের নয় যে সুস্থ ত্বক ও চুল নির্ভর করে শরীরের অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থাপনার ওপর। বিশেষজ্ঞরা খুশকির জন্য নিম্নমানের ডায়েটকে সরাসরি দোষারোপ না করলেও কিছু খাবার খুশকি বৃদ্ধিতে প্ররোচনা যোগাতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনি ইতোমধ্যে খুশকিপ্রবণ হন। বিভারলি হিলসের ত্বক বিশেষজ্ঞ স্টুয়ার্ট এইচ. কাপলান এভরিডে হেলথ ডটকমকে বলেন, ‘স্যাচুরেটেড ও ট্রান্স ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবার আপনার সিবাসিয়াস গ্রন্থিকে অধিক তেল উৎপাদনে প্ররোচিত করে, যা খুশকি বাড়াতে সহায়তা করে।’ যথাসম্ভব বেশি করে মনোআনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন, যেমন- অ্যাভোকাডো, বাদাম, জলপাই ও স্যাফফ্লাওয়ার অয়েল। ভিটামিন বি কমপ্লেক্স (যেখানে বায়োটিন থাকে) চুল কোষের ভিত্তি গড়ে দেয়, তাই এই ভিটামিনের ঘাটতি উপসর্গকে আরো খারাপ করতে পারে। ওটমিল, চাল, ডিম ও কলা হলো ভিটামিন বি সমৃদ্ধ খাবার।

* আপনি আপনার চুলকে অতি স্টাইল করেন
ঘন পমেড অথবা কিছু তেল খুশকির পরিমাণ বাড়াতে পারে। ডা. সিং বলেন, ‘ইস্ট বা ছত্রাক লিপিড থেকে শক্তি পেয়ে থাকে এবং তাদের উপস্থিতিতে বংশবৃদ্ধি করতে পারে।’ যদি আপনি মনে করেন যে আপনার ব্যবহৃত হেয়ার প্রোডাক্ট বা চুল সামগ্রী আপনার খুশকির জন্য দায়ী, তাহলে যখনই পারেন হেয়ার স্প্রে, স্টাইলিং জেল ও মাউসির ব্যবহার কমান। এসব স্টাইলিং প্রোডাক্ট আপনার চুল ও মাথার ত্বকে মজুদ হয়ে তৈলাক্ততা সৃষ্টি করতে পারে।

তথ্যসূত্র : রিডার্স ডাইজেস্ট

পড়ুন : *
 

 

 

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৭ মার্চ ২০১৯/ফিরোজ

রাইজিংবিডি.কম

আরো পড়ুন  



সর্বশেষ

পাঠকপ্রিয়